বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধি: নাটোরের বাগাতিপাড়ায় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপণী (পিইসি) পরীক্ষা দেওয়ার তীব্র আকাংখা নিয়ে কেন্দ্রের গেট ধরে দাঁড়িয়ে থাকা সেই প্রতিবন্ধী মাহিবুলের বাসনা অবশেষে পূরণ হলো। ইউএনও প্রিয়াংকা দেবী পালের উদ্যোগে ‘ছায়া পরীক্ষাথ দেওয়ার সুযোগ পেয়ে আকাঙ্খা পুরণ হওয়ায় বেজায় খুশি সে।
মঙ্গলবার নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার শহীদ মুক্তিযোদ্ধা মমতাজ উদ্দিন স্মৃতি বাক, শ্রবণ ও অটিস্টিক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে মাহিবুল পরীক্ষায় অংশ নেয়। তবে সে পরীক্ষা ছিল শুধুই মাহিবুলের জন্য এক সাজানো পরীক্ষা।
প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেন জানান, ইউএনও প্রিয়াংকা দেবী পালের নির্দেশ পেয়ে তাঁর বিদ্যালয়ের কক্ষ পরীক্ষার আদলে সাজানো হয়। সেখানে মাহিবুলের সাথে তাঁর বিদ্যালয়ের অন্যান্য প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরাও অংশ নেন। সকাল সাড়ে দশটা থেকে নির্ধারিত সময় পর্যন্ত পরীক্ষা গ্রহন করা হয়েছে। সেখানে দুথজন শিক্ষক পরিদর্শক হিসেবে ছিলেন।
মাহিবুলের বাবা কামরুল আহসান খান জানান, তার ছেলে মঙ্গলবারের পরীক্ষা দিয়ে বেশ খুশি হয়েছে। তবে সহপাঠীদের সাথে পিইসি পরীক্ষার জন্য তাকে ডিআরভুক্ত না করে তিনি ভূল করেছেন। আগামী বছর তাকে ডিআরভুক্ত করাতে চান তিনি।
ইউএনও প্রিয়াংকা দেবী পাল বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে বিষয়টি নজরে এলে শিশু মনের মাহিবুলকে সান্ত¦ণা দেওয়ার জন্য তিনি এই ‘ছায়া পরীক্ষাথ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তার পরীক্ষা গ্রহন করা হলেও আইনি জটিলতার কারনে কোন মূল্যায়ণ করা হবে না বা ফলাফলও দেওয়া হবে না। আর যে কেন্দ্রে তার পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে তা কোন নিয়মিত পরীক্ষার কেন্দ্র নয়, সেটি শুধুই মাহিবুলের জন্যই সাজানো ছিল।
উল্লেখ্য, উপজেলার নওশেরা মহল্লার শারিরীক ও মানসিক প্রতিবন্ধী মাহিবুল ডঃ এমদাদ খান ও ছেতেরা খান অর্কা কৃষি ও কারিগরি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র। পরীক্ষা দেওয়ার শারিরীক ও মানসিক সক্ষমতা নেই ভেবে বাবা-মা এ বছর পরীক্ষার জন্য ডিআর ভুক্ত না করায় পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি সে। সেই পরীক্ষা দেওয়ার তীব্র বাসনা নিয়ে স্কুল ড্রেস পরে দুই দিন কেন্দ্রের গেট ধরে দাঁড়িয়ে থেকে পুরো সময় পার করেছে। বিষয়টি নিয়ে সোমবার এবং মঙ্গলবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
স্ব.বা/শা