বাগাতিপাড়ায় সাংবাদিকের মোবাইল কেড়ে নিলেন সওজ কর্মকর্তা

রাজশাহী লীড

বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধিঃ নাটোরের বাগাতিপাড়ায় বৃহস্পতিবার বিকেলে সড়ক নির্মাণকাজের ভিডিও ধারন করায় দৈনিক কাগজের স্থানীয় প্রতিনিধির মোবাইল কেড়ে নিলেন নাটোরের সড়ক ও জনপথ বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী ইউনূস আলী।

প্রকৌশলীর অনুমতি না নিয়ে নির্মাণকাজের ভিডিও ধারন করার অভিযোগ এনে তিনি আইসিটি আইনে মামলার হুমকিও দেন ওই সাংবাদিককে।

সাংবাদিক মিজানুর রহমান জানান, উপজেলায় ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে বিহারকোল-আড়ানী সড়ক নির্মানের কাজ চলমান রয়েছে। সড়কটি নির্মাণ করছে নাটোরের সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং কার্যাদেশ পেয়েছেন নাটোরে ঠিকাদার আশফাকুল ইসলাম।

বৃহস্পতিবার বিকেলে সড়কটির গালিমপুর পয়েন্টে কার্পেটিংয়ের কাজ চলছিল। প্রতিবেদনের জন্য সাংবাদিক মিজান ওই নির্মাণকাজের ভিডিও ধারন করছিলেন। সেসময় নাটোর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী ইউনূস আলী কাজের মান পরিদর্শণ করছিলেন। দেখতে পেয়ে প্রকৌশলী ইউনূস সাংবাদিক মিজানের ভিডিও ধারনের কারন জানতে চান।

মিজান তার পরিচয় দিয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনের বিষয়টি তাকে অবহিত করেন। সাংবাদিক পরিচয় পেয়েই তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে সাংবাদিক মিজানের হাত থেকে ভিডিও ধারনের মোবাইল ফোনটি কেড়ে নেন।

সেসময় তিনি সরকারি কাজের সময় অনুমতি না নিয়ে ভিডিও ধারন করায় সাংবাদিক মিজানকে আইসিটি আইনে মামলার হুমকি দেন। উন্মুক্ত বিষয়ের ভিডিও ধারনের বিষয়টি জানালে তিনি সাংবাদিক মিজানকে চ্যালেন্স করে আরও ক্ষিপ্ত হন। পরে কেড়ে নেয়া মোবাইল ফোনটি ফেরত চাইলে ফোনটি পুলিশে হস্তান্তর করা হবে বলে জানান।
এমতাবস্থায় সাংবাদিক ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে চাইলে ধারন করা ভিডিও ডিলিট করে মোবাইল ফোনটি ফেরত দেন।

এরপর সড়কের নির্মাণকাজ সম্পর্কে সাংবাদিক মিজান তার কাছে তথ্য চাইলে প্রকৌশলী ইউনূস তা দিতে পারবেনা জানিয়ে তথ্য অধিকার আইনে অফিসিয়াল প্রসেসে নেওয়ার কথা বলেন। এদিকে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকের সাথে এমন আচরণের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন সাংবাদিক মহল। ক্ষোভে ফুঁসে ওঠেছে স্থানীয় সাংবাদিকরা এবং অবিলম্বে প্রকৌশলী ইউনূসকে প্রত্যাহার করে সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচারের দাবি জানিয়েছেন।

বাগাতিপাড়া উপজেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন এবং দৈনিক আমার সংবাদ উপজেলা প্রতিনিধি ও বাগাতিপাড়া প্রেসক্লাব সেক্রেটারী আল-আফতাব খান সুইট একাত্মতা ঘোষণা করে বলেন, পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকের মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ওই কর্মকর্তা ঔদ্ধত্যের পরিচয় দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করে তিনি দ্রুত ওই কর্মকর্তার বিচার দাবি করেন। অন্যথায় সকল সাংবাদিকদের সাথে নিয়ে বিচারের দাবিতে আন্দোলন কর্মসূচী ঘোষনা করা হবে বলে তাঁরা জানান।

এ বিষয়ে নাটোর ইউনাইটেড প্রেস ক্লাবের সাধারন সম্পাদক ও টিভি সাংবাদিক বুলবুল আহম্মেদ বলেন, সাংবাদিকের সাথে সরকারি একজন কর্মকর্তার এমন আচরণ মেনে নেয়া যায় না। সড়কের সাথে ওই কর্মকর্তার কোন অনিয়ম-দূর্নীতির খবর ফাঁস হওয়ার আতংকে হয়তো কর্মকর্তা এমন কাজটি করেছেন। বিষয়টির তীব্র নিন্দা জানিয়ে দ্রুত এ ঘটনার তদন্ত করে কর্মকর্তার শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *