স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী মহানগরীতে আগামী ১৮ মার্চ হতে ১১ এপ্রিল হাম রুবেলা ক্যাম্পেইন ২০২০ সফলভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে আজ। রোববার সকালে নগর ভবনের সরিৎ দত্ত গুপ্ত সভাকক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
রাসিকের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা এবং স্বাস্থ্যরক্ষা ব্যবস্থা স্থায়ী কমিটির সভাপতি ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ নুরুজ্জামান টুকুর সভাপতিত্বে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্যানেল মেয়র-১ ও ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ সরিফুল ইসলাম বাবু।
তিনি বলেন, হাম এবং রুবেলা ভাইরাসজনিত দুটি মারাত্মক সংক্রামক রোগ। এই দুটি রোগ সাধারণত একজন আক্রান্ত রোগীর হাঁচি-কাশির মাধ্যমে তার সংস্পর্শে আসা অন্যদের মধ্যে অতি দ্রুত ছড়ায়। শিশু ছাড়াও যেকোন বয়সের মানুষের হাম-রুবেলা হতে পারে। তবে শিশুদের মধ্যেই হাম-রুবেলার প্রকোপ, জটিলতা এবং মৃত্যু বেশি দেখা যায়। সরকারি কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজশাহী মহানগরী এলাকার একটি শিশুও যেন এমআর টিকাদান থেকে বাদ না পড়ে এ বিষয়ে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্যসেবায় রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন পরপর নয়বার প্রথম স্থান অর্জন করেছে। এটি আমাদের বড় অর্জন। এ অর্জনকে ধরে রাখতে হবে। রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের নেতৃত্বে রাজশাহী মহানগরীর সকলক্ষেত্রে উন্নয়ন কার্যক্রম এগিয়ে চলেছে। ইতোমধ্যে তিন হাজার কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার। স্বাস্থ্যসেবাসহ সকল উন্নয়ন কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার আহবান জানান তিনি।
তিনি বলেন, হামের জটিলতাগুলোর মধ্যে নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, অপুষ্টি, এনকেফালাইটিস, অন্ধত্ব ও বধিরতা অন্যতম। গর্ভবতী মা প্রথম ৩ মাসের সময় রুবেলা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে ৯০% ক্ষেত্রে মা থেকে গর্ভের শিশু আক্রান্ত হতে পারে। সেক্ষেত্রে গর্ভপাত এমনকি গর্ভের শিশুর মৃত্যুও হতে পারে অথবা শিশুটি বিভিন্ন জন্মগত জটিলতা নিয়ে জন্মগ্রহণ করে।
হাম-রুবেলা রোগে এবং এদের জটিলতার হাত থেকে বাঁচার সর্বোৎকৃষ্ট উপায় হচ্ছে সঠিক সময়ে শিশুকে হাম-রুবেলার টিকা দিয়ে সুরক্ষিত করা। হাম-রুবেলা রোগের প্রকোপ থেকে সুরক্ষার জন্য বাংলাদেশ সরকার সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) মাধ্যে নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচিতে ৯ মাস বয়সী সকল শিশুকে ১ম ডোজ এমআর টিকা ও ১৫ মাস বয়সী সকল শিশুকে ২য় ডোজ এমআর টিকা সংযুক্ত করেছে। আর এই ক্যাম্পেইনের উদ্যেশ্য হলো কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে নিয়মিত টিকাদান কার্যক্রম জোরদার করা।
৯ মাস হতে ১০ বছরের কমবয়সী সকল শিশুকে এ টিকা প্রদান করা হবে। পূর্বে হামের টিকা বা এমআর টিকা পেয়ে থাকলেও অথবা হাম বা রুবেলা রোগে আক্রান্ত হলেও ঐ বয়সের সকল শিশুকে ১ ডোজ এমআর (হাম-রুবেলা) টিকা দেয়া হবে।
এমআর ক্যাম্পেইন আগামী ১৮ মার্চ হতে ২৪ মার্চ পর্যন্ত স্কুল পর্যায়ে এবং ২য় ও ৩য় সপ্তাহে ২৮ মার্চ হতে ১১ এপ্রিল-২০২০ পর্যন্ত মাঠপর্যায়ে এ কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
টিকাদান কেন্দ্র হিসেবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, নিয়মিত টিকাদান কেন্দ্র, স্থায়ী টিকাদান কেন্দ্র, অতিরিক্ত দুর্গম ও ঝুঁকিপূর্ণ টিকাদান কেন্দ্রসহ এ কার্যক্রম পরিচালিত হবে। রাজশাহী মহানগরীতে এমআর ক্যাম্পেইনে সম্ভাব্য লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯২ হাজার ১৫৪ জন শিশুকে টিকা প্রদান।
এ সময় রাসিকের সচিব আবু হায়াত মোঃ রহমতুল্লাহ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
হাম-রুবেলা ক্যাম্পেইন কর্মসূচির উপর ভিডিও চিত্র উপস্থাপন করেন রাসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ এফ.এ.এম আঞ্জুমান আরা বেগম।
স্ব.বা/শা