রাজশাহীতে মৃত ব্যক্তির পেট থেকে দেড় হাজার ইয়াবা উদ্ধার

রাজশাহী লীড

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীতে এক ইয়াবা ব্যবসায়ীর পেট কেটে ৩১ প্যাকেটে দেড় হাজার পিচ ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করা হয়েছে। প্রতি প্যাকেটে ছিল ৫০টি করে বড়ি। কক্সবাজার থেকে পাকস্থলীতে ইয়াবা বহন করে আনার সময় তিনি পাবনায় ধরা পড়েন। পেট থেকে ইয়াবা বের করার জন্য গত রোববার রাতে তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। রাতে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। আজ সোমবার দুপুরে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ময়নাতদন্তের সময় তাঁর পাকস্থলী থেকে ৩১ প্যাকেট ইয়াবা বড়ি উদ্ধার করা হয়। এই মাদক ব্যবসায়ীর নাম আবদুস শুকুর (৩৭) তাঁর বাড়ি কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাজারপাড়া এলাকায়। তাঁর বাবার নাম মোক্তার আহমেদ।

সোমবার দুপুরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) মর্গে আবদুস শুকুর (৩৭) নামে ওই ব্যক্তির লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়।

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসিম আহমেদ জানান, শুকুর টেকনাফ থেকে পেটে ইয়াবা নিয়ে পাবনায় বিক্রি করতে এসেছিলেন। পাবনার স্থানীয় তিনজন মাদক ব্যবসায়ীর সঙ্গে ডিবি পুলিশ শুকুরকে গ্রেপ্তার করে। ওই সময় তাদের কাছে ১৫০ ইয়াবা পাওয়া যায়। কিন্তু পুলিশের কাছে তথ্য ছিল এদের কাছে ইয়াবা আছে আরও অনেক বেশি। তাই তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একপর্যায়ে তারা স্বীকার করেন যে, ইয়াবা আছে শুকুরের পেটের ভেতর।

২৩ সেপ্টেম্বর পাবনা হাসপাতাল রোড এলাকা থেকে আরও তিনজনের সঙ্গে শুকুরকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ। রবিবার রাত ১১টার দিকে শুকুর রামেক হাসপাতালে মারা যান। পরে ময়নাতদন্তের সময় তার পেট থেকে ইয়াবা উদ্ধার হয়।

তাই তাকে পাবনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের চিকিৎসকরা পেটে আল্ট্রাসনোগ্রাম এবং এক্স-রে করে নিশ্চিত করেন- শুকুরের পেটে ইয়াবা আছে। কিন্তু সেগুলো বের করার কোন ব্যবস্থা তাদের কাছে নেই। তাই তারা শুকুরকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেন। সে অনুযায়ী তাকে রামেক হাসপাতালের পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। সেখানেই পুলিশের হেফাজতে তার চিকিৎসা চলছিল। রবিবার রাতে শুকুর মারা যান।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. নওশাদ আলী জানান, জেলা প্রশাসনের একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে ময়নাতদন্ত করা হয়। এ সময় শুকুরের পাকস্থলিতে ইয়াবার ৩১টি প্যাকেট পাওয়া যায়। এর মধ্যে ১৬টি প্যাকেট ঠিক ছিল। বাকি ১৫টি প্যাকেট ফেটে গিয়েছিল। এসব প্যাকেটের বড়ি গলতেও শুরু করেছিল। সেগুলো গণনা করা যায়নি। তবে ভালো থাকা ১৫টি প্যাকেটের ইয়াবা ঠিকমতো গণনা করা সম্ভব হয়েছে। এতে প্রত্যেক প্যাকেটে ৫০টি করে ইয়াবা বড়ি পাওয়া গেছে। তাই তারা ধরে নিচ্ছেন যে, ৩১টি প্যাকেটেই ৫০টি করে ইয়াবা ছিল। মোট ইয়াবা বড়ির সংখ্যা ১ হাজার ৫৫০টি। পাকস্থলিতে এত বেশিসংখ্যক ইয়াবা গলে যাওয়ায় শুকুরের মৃত্যু হয়েছে বলেও জানান তিনি।

রাজশাহী নগরীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদাত হোসেন খান জানান, ঘটনাটি তিনি জানেন। লাশের সুরতহাল, ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা তারাই করেছেন। ময়নাতদন্তের সময় উদ্ধার হওয়া ইয়াবা পাবনা সদর থানার মামলায় জব্দ দেখানো হবে। কারণ, আটকের পর শুকুরসহ চারজনের বিরুদ্ধে পাবনা সদর থানাতেই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে একটি মামলা হয়েছে।

স্ব:বা/না

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *