সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমাদের এমপিরা পালানোর দরজা খুঁজে পাবেন নাঃ ওবায়দুল কাদেরের ভাই

রাজনীতি লীড

স্বদেশবাণী ডেস্ক: বৃহত্তর নোয়াখালীতে আওয়ামী লীগের কিছু কিছু চামচা নেতা আছেন, যাঁরা বলেন অমুক নেতা তমুক নেতার নেতৃত্বে বিএনপির দুর্গ ভেঙেছে। সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বৃহত্তর নোয়াখালীতে তিন-চারটা আসন ছাড়া বাকি আসনে আমাদের এমপিরা দরজা খুঁজে পাবে না পালানোর জন্য। এটাই হলো সত্য কথা। সত্য কথা বলতে হবে। আমি সাহস করে সত্য কথা বলছি।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জার এসব কথা বলেন। তার সাম্প্রতিক এই বক্তব্যের ভিডিও ফেসবুক ও ইউটিউবে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষায় দলীয় কিছু নেতাকে ইঙ্গিত করে আবদুল কাদের মির্জাকে বলতে শোনা যায়, নোয়াখালীর মানুষজন বলে, শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা বেড়েছে। এটা সত্য। কিন্তু আপনাদের জনপ্রিয়তা বাড়েনি। আপনারা প্রতিদিন ভোট কমান। টাকা দিয়ে বড় জনসভা করা, মিছিল করা কোনো ব্যাপার নয়। টাকা দিলে, গাড়ি দিলে আমিও অনেক লোক জড়ো করতে পারব। না হয় রাজনীতি থেকে বিদায় নেব।

আগামী ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় দ্বিতীয় ধাপের পৌরসভা নির্বাচনে আবদুল কাদের মির্জা নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার মেয়র পদে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন। এ উপলক্ষে ৩১ ডিসেম্বর সকালে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরভবন চত্বরে ইশতেহার ঘোষণাকালে ওই বক্তব্য দেন তিনি। তিনি নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির সহসভাপতি। এ নিয়ে টানা তৃতীয়বার বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেলেন।

আবদুল কাদের মির্জা তার বক্তৃতায় বলেন, নোয়াখালীর রাজনীতি অতি কষ্টের। এই বৃহত্তর নোয়াখালীতে আমাদের নেতা ওবায়দুল কাদের, মওদুদ সাহেব (বিএনপির মওদুদ আহমদ), আবু নাছের সাহেব (জামায়াতের)—এই তিনজন ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ, তাদের সমমর্যাদার কেউ নেই। কোনো নেতা সৃষ্টি হয়নি। এখন তো ওবায়দুল কাদের, মওদুদ আহমদের নাম বিক্রি করি। তাঁরা তিনজন তো অসুস্থ, তারা মারা গেলে কার নাম বিক্রি করবে, কেউ নাই। প্রকাশ্যে দিবালোকে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করেন, তারা হচ্ছেন নেতা। টেন্ডারবাজি করে কোটি কোটি টাকা লুটপাট যারা করেন, তারা হচ্ছেন নেতা। পুলিশের, প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি দিয়ে যারা পাঁচ লাখ টাকা নেন, তারা হচ্ছেন নেতা। গরিব পিয়নের চাকরি দিয়ে তিন লাখ টাকা যাঁরা নেন, তারা হচ্ছেন নেতা।

জেলা আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির সমালোচনা করে আবদুল কাদের বলেন, সাবেক সেনাপ্রধান মঈন উ আহমদের ছোট ভাই জাবেদ (মিনহাজ আহমেদ জাবেদ)। তার সঙ্গে যোগাযোগ করে কোনো কোনো নেতা তখন (এক-এগারোর সময়কালে) নিজেদের রক্ষা করেছেন। এখন সেই জাবেদ এবং হাওয়া ভবনের মানিক (আতাউর রহমান ভূঁইয়া ওরফে মানিক) আজ জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি। অথচ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিনের মতো ত্যাগী ও নির্যাতিত ব্যক্তিকে করা হয়েছে উপদেষ্টা। এটা হলো আমাদের কমিটি।

এ প্রসঙ্গে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খিজির হায়াত খান বলেন, কিছুদিন আগে আবদুল কাদের মির্জা চিকিৎসার জন্য আমেরিকায় গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি শপথ করেছেন, দেশে ফিরে সত্য কথা বলবেন। অন্যায়ের প্রতিবাদ করবেন। সে শপথের অংশ হিসেবেই তিনি এসব বলছেন। আবদুল কাদের মির্জার এই বক্তব্যের প্রতি আমরা সবাই একমত রয়েছি।

নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী বলেন, আবদুল কাদের মির্জা যেসব কথা বলছেন, অভিযোগ করেছেন, তার কোনোটিই মিথ্যা নয়। এসব বিষয় নিয়ে শিগগিরই দলীয় ফোরামে আলোচনা হবে। আবদুল কাদের মির্জা দলের জন্য অপরিহার্য।

সূত্রঃ পূর্বপশ্চিম

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *