সংবাদপত্রের স্বাধীনতা খর্বে প্রথম পাতার লেখা মুছে প্রতিবাদ

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা আইনের বিরুদ্ধে সংবাদপত্রগুলো প্রথম পাতার লেখা কালিতে মুছে বিরল প্রতিবাদ জানিয়েছে।

সোমবার বড় বড় সব সংবাদপত্র একজোট হয়ে এ প্রতিবাদ করেছে। প্রথম পাতার শব্দগুলো কালো কালিতে মুছে পাশে ‘সিক্রেট’লেখা লাল সিল মেরে প্রকাশ করা হয়েছে পত্রিকা।

সাংবাদিকরা বলছে, এ আইনের মাধ্যমে সংবাদপত্রের টুটি চেপে ধরার পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়ায় ‘গোপনীয়তার সংস্কৃতি’ চালু করা হয়েছে। সরকারের বলছে, তারা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পক্ষে, তবে কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়।

প্রতিবাদী সংবাদপত্রগুলো তাদের প্রচারাভিযানে বলেছে, দুই দশক ধরে কঠোর নিরাপত্তা আইনের কারণে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা ঝুঁকিতে পড়েছে। জনগণের জানার অধিকার ক্ষুন্ন করা হয়েছে।

গত বছর গুপ্তচরবৃত্তি-বিরোধী নতুন আইন চালু হওয়ার পর গণমাধ্যমগুলো সংবেদনশীল তথ্য বিষয়ক রিপোর্টের জন্য সাংবাদিক এবং তথ্য প্রকাশকারীদের ছাড় দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে তদবির করেছে।

বিবিসি জানিয়েছে, গত জুনে পুলিশ অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং করপোরেশনে (এবিসি) এবং ‘নিউজ কর্প অস্ট্রেলিয়া’র এক সাংবাদিকের বাড়িতে অভিযান চালালে তা নিয়ে তীব্র সমালোচনা হয়।

এই গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোর দাবি, তথ্যফাঁসকারী বা হুইশেলব্লোয়ারের মাধ্যমে প্রকাশ হওয়া সরকারের গোপন তথ্যের ভিত্তিতে লেখা আর্টিকেলের কারণে ওই পুলিশি অভিযান চালানো হয়েছে।

তথ্যগুলোর মধ্যে একটি ছিল যুদ্ধাপরাধের অভিযোগের বিস্তারিত বিবরণ। আরেকটি ছিল অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকদের ওপর সরকারি সংস্থার গুপ্তচরবৃত্তির চেষ্টার অভিযোগ সংক্রান্ত নথি।

সরকারের এ গোপনীয়তার বিরুদ্ধে জানার অধিকার জোট বা ‘রাইট টু নো কোয়ালিশন’ এর ব্যানারে সংবাদপত্রগুলোর সোমবারের প্রতিবাদে সমর্থন জানিয়েছে বেশ কয়েকটি টেলিভিশন, রেডিও চ্যানেল এবং অনলাইন সংবাদমাধ্যম।

নিউজ কর্প অস্ট্রেলিয়ার নির্বাহী চেয়ারম্যান মাইকেল মিলার পত্রিকাগুলোর মাস্টহেডসহ প্রথম পাতার লেখা কালিতে মোছার ছবি টুইটারে প্রকাশ করে জনগণকে সরকারের কাছে একটি প্রশ্ন করার আহ্বান জানিয়েছেন। আর তা হচ্ছে,‘তারা আমার কাছ থেকে কী লুকানোর চেষ্টা করছে?’

এ কোম্পানির প্রধান প্রতিপক্ষ সংবাদপত্র প্রতিষ্ঠানগুলোও একই ধরনের প্রথম পাতা প্রকাশ করেছে। অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং করপোরেশন (এবিসি) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডেভিড অ্যান্ডারসন বলেছেন, বিশ্বের সবচেয়ে গোপনীয়তাপূর্ণ গণতন্ত্রের দেশ হওয়ার ঝুঁকিতে আছে অস্ট্রেলিয়া।

জাতীয় নিরাপত্তা আইন নিয়ে সমালোচনার মধ্যে রোববারও অস্ট্রেলিয়া সরকার বলেছে, তিনজন সাংবাদিককে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হতে পারে।

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেছেন, অস্ট্রেলিয়ার গণতন্ত্রে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। তবে আইনের শাসন ধরে রাখতে হবে। সেটি আমার বা কোনো সাংবাদিক বা যে কারও ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে পারে।

এদিকে, গণমাধ্যম সংস্থাগুলো সাতটি দাবির তালিকা সোমবার সরকারকে দিয়েছে। এর মধ্যে তথ্যের স্বাধীনতা এবং মানহানি আইন সংস্কারেরও আহ্বান জানিয়েছে তারা।সূত্র: যুগান্তর।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *