সাংবাদিকদের মধ্যে ঐক্য জরুরি

গণমাধ্যম

স্বদেশবাণী ডেস্ক: ২০১৮ ও ২০১৯ সালে পাঁচজন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে এবং ৮৮ জন সাংবাদিক আক্রমণের শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছে গণমাধ্যম উন্নয়ন ও যোগাযোগ বিষয়ক প্রতিষ্ঠান সমষ্টি।

সমষ্টি পরিচালিত গবেষণার তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, এই সময়ে ১৮ জনকে হুমকি দেয়া হয় ও ১০ জন নানা ভাবে হয়রানির শিকার হন। এছাড়া সংবাদ প্রকাশের জন্য সাংবাদিকদের ক্যামেরা, মোবাইল ফোন ভাঙচুর করা হয়। প্রভাবশালী, স্বার্থন্বেষী মহল, রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী ইত্যাদি পক্ষ এধরনের হামলাসহ হয়রানিমূলক তৎপরতার সঙ্গে জড়িত বলে উল্লেখ করা হয়। সারা দেশের ১০৮টি ঘটনা বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য তুলে ধরে সমষ্টি।

মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার ডেইলি স্টার সেন্টারে আয়োজিত “বাকস্বাধীনতা ও গণমাধ্যম: প্রবণতা ও করণীয়” শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) সহযোগিতায় গণমাধ্যম উন্নয়ন ও যোগাযোগ বিষয়ক প্রতিষ্ঠান সমষ্টি এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন গণমাধ্যমের সিনিয়র সাংবাদিক, শিক্ষক, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকর্মী ও সুশীল সমাজের ৪০জন প্রতিনিধি অংশ নেন।

অনুষ্ঠানে বক্তারা স্থানীয় প্রশাসন ও গণমাধ্যম কর্তৃপক্ষের বিশেষ নজরসহ সাংবাদিকদের মধ্যে ঐক্য জোরদার করার সুপারিশ করেন।

বক্তারা বলেন, সাংবাদিকদের উপর চাপ আছে। কখনো সেটা কর্পোরেট, কখনো বিজ্ঞাপন বা প্রভাবশালী মহলের কাছ থেকে এরকম চাপ আসে। কিন্তু এর বাইরেও আরো এক ধরনের চাপ আছে, যেটা অনেক সময় সাংবাদিকদের সেলফ-সেন্সরশিপে বাধ্য করে।

তাদের মতে, মত প্রকাশের স্বাধীনতা বা বাকস্বাধীনতা একটি দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশ নির্মাণ ও সার্বিক উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের মৌলিক বৈশিষ্ট্যই হলো সেখানে মত প্রকাশের অধিকার থাকবে এবং স্বাধীনভাবে সংবাদ প্রকাশের অধিকারও সুনিশ্চিত থাকবে। কোনো মতামতে কারও ব্যক্তিগত অনুভূতিতে আঘাত লাগতে পারে। তিনি সংক্ষুব্ধ হতে পারেন। কিন্তু কারও মনে আঘাত লাগবে বলেই সে সম্পর্কে কেউ কিছু বলতে বা লিখতে পারবে না, তা কোনো গণতান্ত্রিক দেশের সংবিধানই বলে না।

বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে প্রায়ই ক্ষমতাধর ব্যক্তিকে সমালোচনা করার দায়ে মানহানির মামলা হয়ে থাকে। তাতে অভিযুক্তের হয়রানির শেষ নেই। দিনের পর দিন আদালতে ঘুরতে হয়। এক পর্যায়ে গিয়ে একটা মীমাংসা হয় বটে, কিন্তু বাদী-বিবাদী উভয় পক্ষেরই অর্থ ও শ্রমের অপচয় হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, ফিল্ম ও ফটোগ্রাফি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. এ জে এম শফিউল আলম ভুইয়ার সঞ্চালনায় এ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সমষ্টি’র পরিচালক ও চ্যানেল আই-এর সিনিয়র বার্তা সম্পাদক মীর মাসরুর জামান। গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন সমষ্টির’র কর্মসূচি পরিচালক মীর সাহিদুল আলম।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ, অপরাজেয় বাংলার সম্পাদক মাহমুদ মেনন খান, ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি শারমিন রিনভী, সিনিয়র সাংবাদিক শুচি সৈয়দ, মীর মোস্তাফিজুর রহমান, লিটন হায়দার, গোলাম শাহানী ও অন্যান্য।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *