স্বদেশ বাণী ডেস্ক: ক্যাসিনোকাণ্ডে গ্রেপ্তার সদ্য বহিষ্কৃত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী ওরফে সম্রাটের মহাখালীর বাসায় অভিযান চালিয়েছে র্যাব। সম্রাটকে গ্রেপ্তার করায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী শারমিন চৌধুরী।
এসময় শারমিন চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট সিঙ্গাপুরে একজন বিদেশি নারীর সঙ্গে সময় কাটাতেন। এছাড়া সম্রাটের আর কোন নেশা নেই জুয়া খেলা ছাড়া। ক্যাসিনো থেকে টাকা আয় করে সংগঠন চালাতেন বলেও দাবি করেছেন শারমিন।
শারমিন জানান, আগে তাকে নিয়ে বিদেশে গেলেও গত দুই বছর আর তাকে সঙ্গে নেননি। তিনি সিঙ্গাপুরে চায়না-মালয়েশিয়ান বংশোদ্ভুত এক নারীর সঙ্গে সেখানে সময় কাটাতেন।
প্রথম স্ত্রীর ডিভোর্সের বিষয়ে শারমিন বলেন, ওই আপুটা এ্যাডভোকেট ছিল। যখন ও (সম্রাট) আসতো তখন ওই আপু (স্ত্রী) ঘুমিয়ে পড়তো। এজন্য ডিভোর্স দিয়ে দেয়।
শারমিন বলেন, সম্রাটকে ভাল মানুষ বলেই তিনি জানেন। আরো বলেন, ও অন্য লাইনে চলে গেছে। তবে ক্যাসিনোর টাকা সে সংসারে খরচ করতো না। অবৈধ টাকা পরিবারের সদস্যদের দিত না। আর দল পালতে কিন্তু টাকা না দিলে ছেলেরা মিছিল-মিটিংয়ে আসতো না। সে জন্য বিশাল অংকের টাকা লাগতো। আমার মনে হয়, সে জন্যই সে ক্যাসিনোতে গেছে।
সম্রাট ক্যাসিনোর অর্থ দলের জন্য খরচ করতো মন্তব্য করে তিনি বলেন, আপনারা জানেন দলের জন্য কী পরিমাণ খরচ করতো।
শারমিন বলেন, এই অভিযান আরও আগে করলে ভালো হতো। এই অভিযান চালানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
গত দুই বছর ধরে সম্রাট এ বাসায় না এলেও তিনি নিয়মিত কাকরাইলের কার্যালয়ে যেতেন। সেখানেই সম্রাট বেশি সময় কাটাতেন। ওই কার্যালয় সম্রাট দখল করেছেন কিনা এমন এক প্রশ্নে শারমিন বলেন, ওই কার্যালয়ে অফিস নেয়ার পর তার লোকজন নিরাপত্তা জোরদার করে। এতে ওই ভবনের অনেকে সরে যায়। ওই ভবনে তার কার্যালয় ছাড়া আর কেউ এখন নেই।
পারিবারিক সূত্র জানায়, সম্রাটের দুই স্ত্রী। প্রথম পক্ষের স্ত্রী বাড্ডায় থাকেন। প্রথম পক্ষে সম্রাটের এক মেয়ে। তিনি পড়াশোনা শেষ করেছেন। সম্রাটের দ্বিতীয় স্ত্রী শারমিন চৌধুরী মহাখালীর ডিওএইচএসে থাকেন। তার এক ছেলে। তিনি মালয়েশিয়ায় এক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন।
সম্রাট মহাখালীতে দ্বিতীয় স্ত্রীর বাসাতেই স্থায়ীভাবে থাকতেন। তবে ২ বছর ধরে তিনি বাসায় যেতেন না। কাকরাইলে নিজের কার্যালয়ে থাকতেন।
সম্রাটরা তিন ভাই। এক ভাই ছাত্রলীগের রাজনীতি করেন। আরেক ভাই সম্রাটের ক্যাসিনো ব্যবসা দেখাশোনা করতেন। সম্রাটের মা ভাইদের সঙ্গে ঢাকায় থাকতেন। সম্রাটদের গ্রামের বাড়ি ফেনীতে।
চলমান ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগের কারণে যুবলীগ নেতা সম্রাটের নাম আলোচনায় আসে। অভিযানে যুবলীগ, কৃষক লীগ ও আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা র্যাব ও পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। কিন্তু সম্রাট ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল।
স্ব.বা/শা