লেবু চুরির ঘটনা প্রকাশ করায় শিশুকে জীবন্ত কবর দেয়ার চেষ্টা

জাতীয়

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: পটুয়াখালীতে বাতাবি লেবু চুরির ঘটনা প্রকাশের জেরে আহাদ তালুকদার নামে অষ্টম শ্রেণির এক শিশু শিক্ষার্থীকে জীবন্ত কবর দেয়ার পরিকল্পনা করেছে তার সহপাঠীরা।

এ সময় প্রতিবেশীরা দেখে ফেলায় শেষ রক্ষা পায় ওই শিশুটি।

রোববার পটুয়াখালী সদর উপজেলার লাউকাঠি ইউনিয়নের পাকার্তিকপাশা গ্রামের মো. সাদের হাওলাদার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় এলাকায় উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এদিকে ভিকটিম শিশুটির পরিবার পুলিশের কাছে আইনি সহায়তা চাওয়ায় আরও ক্ষিপ্ত হয়েছে ওই ছাত্রের সহপাঠীদের পরিবার।

আহাদ শ্রীরামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

ভিকটিম শিশু আহাদ জানায়, বেশ কিছুদিন পূর্বে আহাদের দাদা ইউছুব তালুকদারের গাছ থেকে বাতাবি লেবু চুরি করে খায় তার সহপাঠী মিঠাপুর মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ও প্রতিবেশী জাকারিয়া, মৌকরন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র জিহাদ। এ ঘটনা দেখে আহাদ তার দাদার কাছে জানায়।

চুরির ঘটনায় দাদা ইউছুব আলী জিহাদ ও জাকারিয়াকে মৌখিক ভাবে শাসন করেন। এ ঘটনার জেরে আহাদকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করে তারা। স্কুলে যাওয়ার কথা বলে বাড়ির পাশে জাকারিয়ার চাচা আবদুল সালাম হাওলাদারের পরিত্যক্ত একটি ঘরের মধ্য মাটি খুড়ে বড় গর্তের সৃষ্টি করে।

রোববার বেলা ১১টার দিকে আহাদকে কিছু খাবারের কথা বলে বাড়ির পার্শ্ববর্তী দোকানে নিয়ে যায়। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে পরিত্যক্ত ওই বাড়িতে নিয়ে যায়। এ সময় তাদের তৈরি করা কবরের কাছে জোরপূর্বক নিয়ে যেতে চাইলে তাদের বাকবিতণ্ডা হয় বলে জানায় আহাদ।

জোর জবরদস্তির একপর্যায় জাকারিয়ার চাচাতো ভাই নাসির ও চাচী নেহার ঘটনাস্থলের পাশের রাস্তা দিয়ে গেলে জাকারিয়া ও জাহিদ দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে জাকারিয়া বিষয়টি তার মা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জানায়।

খবর পেয়ে সদর থানার এএসআই শামীম আকন ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। ততক্ষণে ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য আনিসুর রহমান ও গণ্যমান্যরা বিষয়টি মীমাংসার জন্য সিদ্ধান্ত নেয়।

এ ঘটনায় আহাদের মা ফরিদা বেগম জানায়, তুচ্ছ ঘটনার জেরে প্রতিবেশী আলাল উদ্দিনের ছেলে জিহাদ ও জাফরের ছেলে জাকারিয়া তার শিশুপুত্র আহাদকে জীবন্ত কবর দিয়ে মারা চেষ্টা করেছে। ঘটনাক্রমে সেখানে লোকজন উপস্থিত না হলে আজ তা ছেলেকে সত্যিই কবর দিয়ে দিত।

তিনি আরও জানান, বেশ কয়েকটি আগে আরও একটি তুচ্ছ ঘটনায় প্রতিবেশী হানিফ হাওলাদারে গরুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। এর কিছুদিন পূর্বে জাফরের বড় ছেলে জাহিদ তার ঘর থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার চুরি করে নিয়ে যায়। তাদের সন্তানদের শাসন করার বদলে উৎসাহ দিয়ে আসছে। যে কারণে বড় ধরনের অপরাধে লিপ্ত হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে জাকারিয়ার মা রেনু বেগম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, তার ছেলে স্কুলের কথা বলে এই কাজ করবে তা তিনি বুঝতে পারিনি। এটা স্থানীয়ভাবে মীমাংসার চেষ্টা করব।

জাকারিয়ার বৃদ্ধ দাদা ইউছুব আলী তালুকদার অভিযোগ করেন, উল্লিখিত ঘটনা পুলিশকে জানালে তারা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। সূত্র: যুগান্তর।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *