শেরপুরে দুলাভাইয়ের সঙ্গে শালিকার বাল্যবিয়ে বন্ধ করলেন ইউএনও

জাতীয়

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: শেরপুরে দুলাভাইয়ের সঙ্গে দশম শ্রেণির ছাত্রীর বাল্যবিয়ে বন্ধ করলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। বগুড়ার শেরপুর শহরের টাউন কলোনি এজে উচ্চ বিদ্যালয়ের রত্না খাতুন সহপাঠী বৃষ্টি খাতুনকে সঙ্গে নিয়ে সোমবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ও থানায় গিয়ে দুলাভাই জিল্লুর রহমানের সঙ্গে তার বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে আবেদন করেন।

রত্না খাতুন সাংবাদিকদের জানায়, তিনি উপজেলার কুসুন্বি ইউনিয়নের দুবলাগাড়ী বনিকপাড়া এলাকায় বসবাস করেন। কিছুদিন আগে বাবা হলুদ শেখ অকালে মারা যান। এরপর মা অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে সংসার চালান। দুই বোনের মধ্যে সে ছোট।

বড় বোন সীমা খাতুনের (৩০) বিয়ে হয় গাইবান্ধা জেলা সদরের দুবাই প্রবাসি জিল্লুর রহমানের সঙ্গে। মারুফ নামে তাদের চার বছরের এক ছেলে রয়েছে।১৫ সেপ্টেম্বর সীমা খাতুন তাদের বাড়িতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

তিনি আরও জানান, জিল্লুর রহমান বর্তমানে দুবাইয়ে রয়েছেন। বোনের ছেলেকে দেখাশোনা ও সংসার ধরে রাখার জন্য দুলাভাইয়ের সঙ্গে তাকে বাল্যবিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিবার। দুই-একদিনের মধ্যেই ভিডিও কলের মাধ্যমে তাদের বিয়ে হবে। তিনি বাল্যবিয়েতে রাজি নয়। উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করে স্বাবলম্বী হয়ে বিয়ে করতে চান তিনি। তাই দুলাভাইয়ের সঙ্গে তার বাল্যবিয়ে ঠেকাতে উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।।

বৃষ্টি খাতুন জানায়, যেকোন ভাবে এই বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে হবে। আমাদের এলাকায় বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে চাই।

শেরপুর থানার ওসি বুলবুল ইসলাম বলেন, ঘটনা জানার পর ওই স্কুলছাত্রীর বাসায় পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। তাকে বাল্যবিয়ে না দিতে নিষেধ করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. লিয়াকত আলী সেখ বলেন, মৌখিকভাবে ঘটনাটি জানতে পেরে ওই ছাত্রীর বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়া হয়। একইসঙ্গে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকেও বিয়ে বন্ধ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিরা গিয়ে বাল্যবিয়ে না দিতে অঙ্গীকারনামায় স্কুলছাত্রীর পরিবারের সদস্যদের স্বাক্ষর নিয়েছেন বলে জানান নির্বাহী কর্মকর্তা।

রত্না খাতুনের মায়ের বক্তব্য জানতে তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

তবে তার মামাতো ভাই মঞ্জুরুল হক জানান, রত্নার বয়স কম এবং রাজি না হওয়ায় উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিয়ে না দিতে নিষেধ করছেন। তাই তার বিয়ের সিদ্ধান্ত থেকে আমরা সরে এসেছি।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *