সাংবাদিককের ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে তাকে লাঞ্ছিত করে গুদাম কর্মকর্তা শাহীনুর

গণমাধ্যম জাতীয় লীড

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: কৃষকের বদলে ব্যবসায়ীর কাছ থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে ধান। খবর পেয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে যান মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি জাহেদুল ইসলাম সমাপ্ত। সেখানে গিয়েই গুদাম কর্মকর্তা শাহীনুর রহমানের রোষানলে পড়েন তিনি।

সোমবার দুপুরে লালমনিরহাট সদর উপজেলা খাদ্য গুদাম চত্বরে সাংবাদিক সমাপ্ত’র ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে তাকে লাঞ্ছিত করেন শাহীনুর রহমান। এ ঘটনায় স্থানীয় থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।

ঘটনার পর সেখানে ছুটে যান স্থানীয় সাংবাদিক, পুলিশ ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রফিকুল ইসলাম।

জানা যায়, সোমবার দুপুরে লালমনিরহাট সদর খাদ্য গুদামে তথ্য সংগ্রহের জন্য যান সাংবাদিক সমাপ্ত। এ সময় খাদ্য গুদামের পেছন দিক দিয়ে ধান ঢুকানো হচ্ছে দেখতে পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। সেখানে গিয়ে দেখতে পান ধানগুলোর কোন মালিক নেই। তাই এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত গুদাম কর্মকর্তা শাহীনুর রহমানের কাছে ধানগুলোর মালিকের (কৃষক) নাম জানতে চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হন। এক পর্যায়ে হাতের ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে সাংবাদিক সমাপ্তকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।

সাংবাদিক সমাপ্ত জানান, শহরের কালীবাড়িতে লালমনিরহাট উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত গুদাম কর্মকর্তা শাহীনুর রহমান ও তার লোকজন কৃষকের পরিবর্তে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ১০ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করছিলেন। এ খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে এর সত্যতা পাই। এ সময় শাহিনুরের কাছে কৃষক কোথায় জানতে চাইলে তিনি আমার ওপর ক্ষিপ্ত হন। এক পর্যায়ে কাছে থাকা ভিডিও ক্যামেরাটি ছিনতাই করে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও লাঞ্চিত করেন।

সাংবাদিকের কাছ থেকে ক্যামেরা কেড়ে নেয়ার কথা স্বীকার করে খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহীনুর রহমান বলেন, খাদ্য গুদামের কোন তথ্য সাংবাদিককে দিতে বাধ্য নন তিনি। কোন কৃষকের কাছে ধান ক্রয় করছেন আর কোন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে করছেন এ তথ্য সাংবাদিককে কেন দেবো।

সাংবাদিকের ক্যামেরা কেন কেড়ে নেয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি কোন উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান।

লালমনরহাট সদর উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা আইয়ুব আলী এ ঘটনার ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। জেলা খাদ্য কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) কাজী সাইফুদ্দিন দেশের বাইরে থাকায় তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

লালমরিহাট প্রেসক্লাবের সভাপতি মোফাখখারুল ইসলাম মজনু জানান, সাংবাদিকের ক্যামেরা ছিনতাই করে অভিযুক্ত খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা গুরুতর অপরাধ করেছেন। খাদ্য বিভাগ অভিযুক্ত খাদ্য গুদাম কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে লালমনিরহাটের কর্মরত সাংবাদিকরা আন্দোলনের ডাক দেবে।

লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজ জানান, অভিযোগপত্র পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, তিনি তদন্ত করেছেন এবং তদন্ত প্রতিবেদন জেলা প্রশাসকের নিকট দাখিল করবেন। পরে তা খাদ্য বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *