কেন্দ্রীয় কমিটিতে ঠাঁই না পাওয়ায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতাদের ভীষন মন খারাপ

জাতীয় লীড

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: ঐতিহ্যবাহী আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে ঠাঁই না পেয়ে ভীষণ মন খারাপ সাবেক তারকা ছাত্রনেতাদের। তাদের আশা ফিকে হয়েছে গত বৃহস্পতিবার পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার পর। এক সময়ে মাঠ কাঁপানো দুজন সাবেক ছাত্রনেতা কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হলেও আর কারও জায়গা হয়নি বললেই চলে।

আশায় গুড়েবালি পড়ায় বিপর্যয়ের মুখে মন ভালো নেই সাবেক ছাত্রনেতাদের। কমিটি নিয়ে সাবেক ছাত্রনেতারা কেউই প্রকাশ্যে কিছু বলতে রাজি হননি। তবে তারা চরম হতাশ।

গত বৃহস্পতিবার রাতে আওয়ামী লীগের দ্বিতীয় দফায় অনেকটা পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণার পর হতাশায় নিজের ফেসবুকে আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম।

তিনি লিখেছেন, “ইস্ত্রি করা চকচকে কাপড় পরে সমাজের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ায় বর্তমান পলিটিশিয়ানদের সাথে তাল মিলিয়ে, সচিব ডিজিদের স্যার ডাকতে পারে না কেউ কেউ, কাজ করার আগেই পার্সেন্টেইজ দিতে পারে না অনেকেই, বাসায় গিয়ে বউ এর লগে গপ্প মারে, ‘আজ গণভবনে নেত্রীর সাথে দেখা করে আসলাম’। অথচ ‘পাস’ যে ব্যক্তি দেন তিনি কিন্তু ফোনও ধরেননি।

কোনোভাবে টিভিতে নিজের চেহারাটা দেখানোর যুদ্ধে নব্যদের সাথে ধস্তাধস্তিতে পেরে উঠে না অনেকেই, সর্বস্ব বিক্রি করে হলেও ভালো থাকার অভিনয় করতে হয়, অনুপ্রবেশকারীদের সাথে বড় নেতাদের উপঢৌকন দেওয়ার প্রতিযোগিতায় না পেরে উঠার কারণে কোনও মন্ত্রীর বা নেতার আস্থাভাজন হয়ে উঠতে পারে না, বর্তমানদের ব্যাপারেও নিজস্ব মতামত দিতে পারে না, যদি কেউ মাইন্ড করে!

উপরের মানুষগুলোর নাম সাবেক ছাত্রনেতা! তবে বাটপার একটা শ্রেণি আছে যারা শুধু ড্রইংরুম পলিটিক্স করে মিথ্যা ইতিহাসের আশ্রয় নিয়ে বাগিয়ে নিয়েছে অনেক কিছু। ২০০৮ সালের পরে আসলে সাবেক ছাত্রনেতার সংজ্ঞাটিও বদলে দিয়েছে অনেকে। কোথাকার কোন … সেও, সাবেক ছাত্রনেতার কোটা চায়। কথায় আছে সময়ের অদৃষ্ট কাল বিলাই চাটে বাঘের গাল।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ছাত্রনেতা জানান, আওয়ামী লীগের মতো একটি বড় রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয় কমিটি মাত্র ৮১ জনের। এর মধ্যে ৮০ পদে (সভানেত্রীর পদ বাদে) ৮০ হাজার যোগ্য নেতা আছে। সে কারণে একসঙ্গে সবার জায়গা হওয়াটা কঠিন। তবে আওয়ামী লীগের সামনে অনেকগুলো কাজ আছে। সেগুলো সফল করতে সবাই দক্ষতার পরিচয় দেবেন বলে আশা রাখি।

তারা বলছেন, নেত্রী যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা সঠিক ও সময়োপযোগী। তবে যাদেরকে দেশবাসী চেনেন, কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ আছে এমন নেতা কমিটিতে আনা হলে আরও ভালো হতো। বর্তমান কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না বলেন, একটি সুন্দর কমিটি হয়েছে। এই কমিটি এই নতুন নেতৃত্ব আগামী বছর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী পালন করবে।

২০২১ সালে মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করবে। দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে কাজ করবে। আওয়ামী লীগের যেসব ভিশন মিশন আছে সেগুলো বাস্তবায়নে কাজ করবে।

ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বাহাদুর বেপারী বলেছেন, আওয়ামী লীগ যা বিশ্বাস করে তা বাস্তবায়নের জন্য এই কমিটি গঠিত হয়েছে। কমিটি ভালো হয়েছে। তিনি বলেন, নতুন কমিটিতে যারা এসেছেন তাদের প্রত্যেকের ব্যাকগ্রাউন্ডই সাবেক ছাত্রনেতা।

ছাত্রলীগের শীর্ষ পদে ছিলেন না, তবে দেশব্যাপী ভালো ইমেজ আছে এমন দুজন ছাত্রনেতা হতাশার সুরে বললেন, আওয়ামী লীগ বলেন, আর সরকারে বলেন, সবাই বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার আলোয় আলোকিত।

অনেক কেন্দ্রীয় নেতাকে জেলা-উপজেলায় গিয়ে নিজের পরিচয় দিতে হয়। তারপরও নব গঠিত কমিটি সুন্দর হয়েছে। যে দলের অধিনায়ক শেখ হাসিনা সেখানে কে এলো, কে এলো না এতে কিছু যায় আসে না। তবে কেন্দ্রীয় কমিটির আলাদা একটা ওয়েট থাকা উচিত বলে মনে করি। সূত্র: পূর্বপশ্চিমবিডি।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *