রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ককটেল মারে কারা?

জাতীয় লীড

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গত শুক্রবার ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। একদিনের ব্যবধানে রোববারও (২৯ ডিসেম্বর) একই স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ হয়েছে।

এমন ঘটনায় ওই এলাকায় পথচারীদের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে কারা কেন ককটেল ছুড়ে মারে সেটি আর জানা যায় না। এসব ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলাও করে। তবে কাউকে আটক করার কথাও জানাতে পারে না পুলিশ।

বিএনপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ, কোনো উপলক্ষে দলের কার্যালয়ে নেতাকর্মীররা জড়ো হলে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। আতঙ্ক ছড়াতে সরকারের লোকজনই এই কাজটি করে। এরসঙ্গে তাদের নেতাকর্মীরা জড়িত নন।

দলটির নেতাকর্মীদের দাবি এমন হলেও বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে পদবঞ্চিতদের বিক্ষোভ থেকেও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটেছে। কখনো কখনো এসব বিস্ফোরণের কারণে আঘাতে আহতও হয়েছেন লোকজন।

আসন্ন ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন ঘিরে নয়াপল্টনে বিএনপি নেতাকর্মী ও প্রার্থীদের উপচে ভিড়। সবসময় আনাগোনা রয়েছে নেতাকর্মীদের। তার মধ্যেই গত শুক্রবার ককটেল মারার ঘটনা ঘটে। পরদিন শনিবার সকাল থেকে ঢাকা সিটি নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার চলছে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে।

রোববার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে কার্যালয়ের সামনে হঠাৎ ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। হামলার পর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও এর আশপাশের এলাকা ঘিরে রাখে পুলিশ। গোটা এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করে।

পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, দুপুর সোয়া ১২টার দিকে পার্টি অফিসের সামনে কে বা কারা একটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজ দেখে জড়িতদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।

ককটেল বিস্ফোরণের পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করে বলেছেন, ‘সিটি নির্বাচনে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতেই সরকার এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে। তারা ককটেল হামলা চালিয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে মামলা দিতে চাইবে বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে। আমরা এই ককটেল হামলায় তীব্র নিন্দা জানাই।’

এর আগে গত শুক্রবার বিকালে বিএনপি কার্যালয় সংলগ্ন ফুটপাতে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। ওইদিন ঢাকার দুই সিটিতে দলের মনোনীত মেয়র প্রার্থী তাবিথ আওয়াল ও ইশরাক হোসেন ওইদিন মনোনয়ন ফরম জমা দিতে আসার কিছুক্ষণ পরই বিস্ফোরণ ঘটে।

ককটেল বিস্ফোরণ নিয়ে বিএনপির অভিযোগ মানতে নারাজ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, বিএনপির অভ্যন্তরীণ ঝামেলার কারণে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে।

মতিঝিল জোনের সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার জাহিদুল ইসলাম সোহাগ বলেন, ‘বিএনপির অফিস এলাকায় কারা ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটায় তাদের আমরা এখনো চিহ্নিত করতে পারিনি। অভ্যন্তরীণ কোন্দলে এসব বিষ্ফোরণ ঘটানো হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘গোয়েন্দা তথ্য আছে সম্প্রতি ছাত্রদলের কমিটিতে যারা পদবঞ্চিত নেতাকর্মী তারা এসব কাজ করছে। যারাই এসব কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকুক তাদের আমরা খুঁজছি। বিষ্ফোরণের ঘটনায় এর আগেও আমরা মামলা নিয়েছি। আজকের ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে বিষ্ফোরণ আইনে থানায় মামলা করছে।’

বিএনপি অফিসকেন্দ্রিক ঘটনা ঘটলেও তাদের কেউ মামলা করে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পুলিশকে বাদি হয়ে ককটেল বিষ্ফোরণের ঘটনায় মামলা করতে হয়।’

এসব ঘটনায় আইনশৃঙ্খলাবাহিনী জড়িত বলে বিএনপির দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘উনি (মির্জা ফখরুল) তো অনেক কথায় বলেন। আমরা তো ওই জায়গার খোঁজ খবর রাখি। তারা (বিএনপি) তো পল্টন পার্টি অফিসের আশপাশে স্বাধীন। মিছিল করছে, সব করছে আমরা তো বাধা দেই না।’

পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘তাদের (বিএনপি) অভ্যন্তরীণ ঝামেলায় এসব হচ্ছে। সিটি নির্বাচনে যারা কাউন্সিলন পদে মনোনয়ন পাবে না জেনেছে তারাই সম্প্রতি ককটেল বিষ্ফোরণ ঘটিয়েছে। সূত্র: পূর্বপশ্চিমবিডি।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *