১৫ নারীসহ সৌদি থেকে শূন্য হাতে দেশে ফিরলেন আরো ১০৬ বাংলাদেশি

জাতীয় লীড

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেছেন ১৫ নারীসহ আরো ১০৬ বাংলাদেশি। এ নিয়ে চার দিনে ২৪৭ বাংলাদেশি দেশে ফিরলেন। ফেরত আসা নারীকর্মীদের গল্প আগে ফিরে আসা নারীদের মতোই। শনিবার রাত ১১টা ২০ ও ১টা ৩০ মিনিটে সৌদি এয়ারলাইন্সের দুটি ফ্লাইটযোগে দেশে ফেরেন এসব কর্মী। গৃহকর্তার নির্যাতন ও পুলিশের ধরপাকড়ের শিকার হয়ে তারা ফিরেছেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সেলিনা আক্তার ও শামিমা বেগম জানান, গৃহকর্মীর কাজ নিয়ে সৌদি আরব গিয়ে নিয়োগকর্তা কর্তৃক নির্যাতনের শিকার হতে হয় তাদের। নির্যাতন সইতে না পেরে সেখান থেকে পালিয়ে আশ্রয় নেন জেদ্দায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের সেফহোমে।

একই সমস্যা নিয়ে হোমে থাকা নারায়ণগঞ্জের সোনিয়া আক্তার ও খাদিজা, সিরাজগঞ্জের রাশেদাসহ ১৫ নারীর সঙ্গে দেশে ফিরেন। শহীদ মিয়া (৪০) আড়াই বছর আগে সাড়ে চার লাখ টাকা খরচ করে টাইলস ফিটিংয়ের কাজ নিয়ে গিয়েছিলেন সৌদি। ভাগ্য এতটাই খারাপ যে কর্মস্থল থেকে বাসায় ফেরার পথে তাকে ধরে কাজের পোশাকেই দেশে ফেরত পাঠানো হয়।

মাত্র চার মাস আগে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার হানিফ গিয়েছিলেন সৌদি আরবে। সৌদিতে তার পাসপোর্টের তিন মাসের এন্ট্রি ভিসার মেয়াদ শেষ হলে মালিক আর আকামা তৈরি করেননি। কর্মস্থল থেকে রুমে ফেরার পথে পুলিশ ধরলে দেশে পাঠানো হলো তাকে। একইসঙ্গে ফিরেছেন টাঙ্গাইলের হামিদুল্লাহ, কুমিল্লার তোফাজ্জল, সিলেটের শুভ দেবনাথ।

দেশে ফেরা কর্মীদের অভিযোগ করেন, আকামা তৈরির জন্য কফিলকে (নিয়োগকর্তা) টাকা প্রদান করলেও কফিল আকামা তৈরি করে দেয়নি। পুলিশের হাতে গ্রেফতারের পর কফিলের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও দায়-দায়িত্ব নিচ্ছে না বরং কফিল প্রশাসনকে বলেন ক্রুশ (ভিসা বাতিল) দিয়ে দেশে পাঠিয়ে দিতে।

বরাবরের মতো গতকালও ফেরত আসাদের মাঝে ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম থেকে খাবার-পানিসহ নিরাপদে বাড়ি পৌঁছানোর জন্য জরুরি সহায়তা করা হয়।

ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান জানান, ২০১৯ সালে ২৪ হাজার ২৮১ বাংলাদেশিকে সৌদি আরব থেকে ফেরত পাঠানো হয়। আর নতুন বছরের শুরুর চার দিনে ফিরলেন ২৪৭ জন। ফেরত আসাদের বর্ণনা প্রায় একই রকম। প্রায় সবাই খালি হাতে ফিরেছেন।

তিনি বলেন, যারা কয়েক মাস আগে গিয়েছিলেন তাদের কেউই খরচের টাকা তুলতে পারেননি। তারা সবাই ভবিষ্যৎ নিয়ে এখন দুশ্চিন্তায়। এইভাবে ব্যর্থ হয়ে যারা ফিরছেন তাদের পাশে দাঁড়ানো উচিত। পাশাপাশি এভাবে যেন কাউকে শূন্য হাতে ফিরতে না হয় সে জন্য রিক্রুটিং এজেন্সিকে দায়িত্ব নিতে হবে। দূতাবাস ও সরকারকেও বিষয়গুলো খতিয়ে দেখতে হবে। বিশেষ করে ফ্রি ভিসার নামে প্রতারণা বন্ধ করা উচিত। সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *