নিজ পিতার সহায়তায় কিশোরিকে বছর ধরে ধারাবাহিক ধর্ষণ

জাতীয় লীড

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক কিশোরীকে ভর্তি করা হয়েছে, যাকে ধারাবাহিকভাবে দিনের পর দিন ধর্ষণ করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, কিশোরীটিকে ধর্ষণকারীর হাতে তুলে দিতো তার নিজের পিতা।

এই অভিযোগে কিশোরীটির পিতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে অভিযুক্ত ধর্ষণকারীকে এখনো ধরা যায়নি।

ঘটনাটি ঘটেছে ঢাকার কাছেই।

পুলিশ বলছে, তাদের হাতে এমন একটি কথোপোকথনের রেকর্ড আছে, যেখানে ধর্ষণের শিকার কিশোরীটির পিতা অভিযুক্ত ধর্ষণকারীকে পালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে।

তেরো বছর বয়েসী এই কিশোরীটির মা বিদেশে থাকে। মায়ের সাথে বাবার ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে আগেই।

পুলিশ বলছে, ৯৯৯ এ একটি ফোন পেয়ে তারা মঙ্গলবার কিশোরীটিকে উদ্ধার করে।

কিশোরীটিকে প্রায় এক বছর ধরে ধর্ষণের শিকার হয়ে এলেও মঙ্গলবার সে তার বাড়ির তত্ত্বাবধায়কের কাছে বিষয়টি জানিয়েছিল। ওই তত্ত্বাবধায়কই পুলিশকে ফোন দেয়।

পরে কিশোরিটিকে ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) নিয়ে ভর্তি করা হয়।

জানা যাচ্ছে, কিশোরীটির বাবা একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। একজন মহাজনের কাছে ব্যবসার জন্য টাকা ধার নিয়েছিলেন। সেই টাকা শোধ করতে না পারলে মহাজন বিনিময়ে কিশোরীটিকে ধর্ষণের প্রস্তাব দেয়।

বাবাও রাজী হয়ে যায় এবং মেয়েকে ধর্ষণের সুযোগ করে দেয়। এভাবে টানা এক বছর ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করেছে মহাজন।

এক পর্যায়ে কিশোরীটি অসুস্থ হয়ে পড়েছিল এবং সেজন্যই সে বাড়ির তত্ত্বাবধায়ককে বিষয়টি জানিয়েছিল বলে উল্লেখ করছে পুলিশ।

পুলিশের যে কর্মকর্তার সঙ্গে বিবিসির কথা হয়েছে, তিনি বলছিলেন, ‘উদ্ধারের পর মেয়েটি অসুস্থ ছিল। সে তার বাবার কথা উল্লেখ করেছিল কিন্তু আমরা বিশ্বাস করিনি। ভেবেছি যে, অসুস্থতার কারণে হয়তো ভুল করে এসব বলছে।’

কিন্তু মোবাইল ফোনের কথোপোকথন হাতে আসার পরই সত্যতার প্রমাণ মেলে।

‘ভয়েজ ক্লিপে বাবা ধর্ষককে বলছিল পালাও, পালাও। এরপরই আমরা নিশ্চিত হই যে বাবার সম্পৃক্ততা রয়েছে,’ বলেন পুলিশের ওই কর্মকর্তা।

ওসিসির তত্ত্বাবধায়ক ডা. বিলকিস বেগম জানাচ্ছেন, আজই (বুধবার) কিশোরীটির ফরেনসিক পরীক্ষা করা হয়েছে।

এখন তার কাউন্সেলিং চলছে।

এ ঘটনায় উদ্ধারকারী তত্ত্বাবধায়ক একটি মামলা দায়ের করেছেন।

ছোট্ট এই মেয়েটি তার মায়ের ফোন নাম্বার পর্যন্ত জানে না। বাবা গ্রেপ্তার হওয়ার পর বাড়িতে রয়েছে শুধু তার অসুস্থ দাদী এবং তার ভাই, যে নিজেও কিশোর বয়সী।

পুলিশ জানাচ্ছে, এই কিশোরী বা তার পরিবারের দেখভাল করতে পারে,এমন কোন মানুষের সাথে যোগাযোগ করারও কোন উপায় পাওয়া যাচ্ছে না। সূত্র: বিবিসি বাংলা

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *