স্বদেশ বাণী ডেস্ক: ইভিএম বিভ্রাট, সাংবাদিক মারধর, কোথাও কোথাও সংঘর্ষ, বিরোধী দলের এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগসহ নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। দুএকটি কেন্দ্রের বেসরকারি ফল এরইমধ্যে ঘোষণা শুরু হয়ে গেছে। শনিবার সকাল ৮টায় ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি ও ডিএসসিসি) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়। যা টানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে।
দুই সিটিতে ভোটারদের উপস্থিতি কম ছিল। সকালে শীত থাকায় ধারণা করা হয়েছিল দুপুরের দিকে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে। কিন্তু দুপুর গড়িয়ে বিকালেও ভোট উপস্থিতি কাঙিক্ষত মাত্রায় লক্ষ্য করা যায়নি।
এ নিয়ে খোদ প্রার্থীরাও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। ক্ষমতাসীন দলের মেয়রপ্রার্থীদের মুখেও ভোটার উপস্থিতি কম থাকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ পেয়েছে।
অন্যদিকে বিএনপির মেয়র প্রার্থীদের অভিযোগ তাদের এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। অনেককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিতও করা হয়েছে।
এবার ঢাকার দুই সিটিতে প্রথমবারের মতো দুই হাজার ৪৬৮টি ভোটকেন্দ্রের ১৪ হাজার ৪৩৪টি ভোটকক্ষে ইভিএমে ভোট হয়েছে। দুই সিটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ৫৪ লাখ ৬৩ হাজার ৪৬৭ জন। এর মধ্যে ২৬ লাখ ২০ হাজার ৪৫৯ জন নারী ভোটার রয়েছেন। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে মোট ভোটার হচ্ছেন ৩০ লাখ ১০ হাজার ২৭৩ জন। এর মধ্যে নারী ১৪ লাখ ৬০ হাজার ৭০৬ জন। আর ডিএসসিসিতে ২৪ লাখ ৫৩ হাজার ১৯৪ জন ভোটার রয়েছেন। যাদের মধ্যে নারী ভোটার ১১ লাখ ৫৯ হাজার ৭৫৩ জন।
সকাল ৮টায় দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনে সিটি কলেজ কেন্দ্রে ভোট দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্বাচন কমিশনের অনুমোদিত যানবাহনের বাইরে যানচলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকায় ভোটের সময় ঢাকার চিত্র পাল্টে যায়। চিরচেনা যানজট কিংবা মানুষের ভিড় ছিল না। রাস্তা ছিল পুরো ফাঁকা। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, এমন নির্বাচন চাইনি।
বেলা ১১টার দিকে উত্তরার আইইএস স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভোট দিতে গেলে আঙুলের ছাপ মেলেনি সিইসির। পরে জাতীয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে নিজের ভোট দেন তিনি।
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ দুই সিটিতেই বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩৪ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার সাদেক খান রোডে দায়িত্ব পালনকালে অনলাইন নিউজ পোর্টাল আগামী নিউজের প্রতিবেদক মোস্তাফিজুর রহমান সুমনকে কুপিয়ে আহত করে দুর্বৃত্তরা।
এ বিষয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. জাবেদ পাটোয়ারী বলেছেন, এমন কোনো ঘটনা আমি এখনও জানি না। তবে ঘটনা যদি সত্য হয়ে থাকে তাহলে সংশ্লিষ্টদের ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিচ্ছি। যারা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ভোট শেষে ইভিএম মেশিন থেকে ভোটের ফল সংগ্রহ করে তাতে প্রার্থীদের এজেন্টদের স্বাক্ষর নিয়ে ট্যাবের মাধ্যমে অনলাইনে রিটার্নিং অফিসারের কাছে পাঠানো হবে। পরে দুই সিটির রিটার্নিং অফিসার আনুষ্ঠানিকভাবে ভোটের ফলাফল ঘোষণা করবেন।
ঢাকা উত্তরের ৫৪টি কেন্দ্রের মধ্যে ৪৩টিতে ধানের শীষের পোলিং এজেন্ট ঢুকতে না দেয়া বা মারধর করে বের করে দেয়ার অভিযোগ নিয়ে ইসিতে যান বিএনপির প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের প্রতিনিধি জুলহাস উদ্দিন।
দুপুরে কমিশনে জমা দেয়া ওই লিখিত অভিযোগে বিএনপি প্রার্থীর এজেন্ট ও কর্মীদের ওপর হামলা, বিএনপির ভোটারদের ভোট দিতে না দেয়া, ইভিএম হ্যাক করার মত কথাও বলা হয়েছে। জুলহাস সাংবাদিকদের বলেন, রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানানো হলেও তিনি তাদের কথা শোনেননি।
ধানের শীষের প্রার্থীর পোলিং এজেন্টদের ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হচ্ছে বলে বিএনপি যে অভিযোগ করেছে; তাকে মিথ্যাচার বললেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক।
সূত্র: যুগান্তর রিপোর্ট
স্ব.বা/বা