দক্ষিণ সুনামগঞ্জে প্রধান শিক্ষকের বিভিন্ন অনিয়ম দূনীর্তির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

জাতীয় লীড শিক্ষা

কাজী মোঃ জমিরুল ইসলাম মমতাজ (দক্ষিন সুনামগঞ্জ): দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার পূর্ব পাগলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মৃত্যুঞ্জয় সরকারের বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম ক্ষমতার অপব্যবহার,তহবিল আত্মসাৎএবং বিদ্যালয়ের স্বার্থের পরিপন্থি কার্যক্রমের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার দুপুর ১২ টায় উপজেলার শান্তিগঞ্জ বাজারের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের অস্থায়ী কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করেছেন পূর্ব পাগলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানের্জি কমিটি সভাপতি মো: মছদ্দর আলী ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যবৃন্দ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি এলাকার সচেতন মহল, অভিভাবকবৃন্ধ এবং সর্বসাধারণের পক্ষ থেকে বলেন, প্রধান শিক্ষক মৃত্যুঞ্জয় সরকারের অনিয়ম, দূর্নীতি,তহবিল আত্মসাৎ ক্ষমতার অপব্যবহার স্বার্থের পরিপন্থি কার্যক্রমের প্রতিকার ও বিচার প্রার্থী হয়ে বিগত ১ বছর ধরে প্রশাসনের বিভিন্ন অফিসে কয়েক দফা দরখাস্ত করে কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি।

মছদ্দর আলী ম্যানেজিং কমিটির সদস্য থাকাকালীন বিগত ১৫ নভেম্বর ২০১৭ তারিখে প্রধান শিক্ষকের দূর্নীতির বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক সুনামগঞ্জ বরাবর অভিযোগ দায়ের করার পর উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে সহকারি কমিশনার মিল্টন চন্দ্র পাল সরেজমিন তদন্ত করেন। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলেও আদৌ তদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি।

এছাড়া তদন্তকালে বিভিন্ন তথ্য ও খাতওয়ারী সভাপতির স্বাক্ষরকৃত বিবরণ গোপন করা হয়েছে। পরে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও আইসিটি শাখার কমিশনারের সাথে যোগাযোগ করেও প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি। একই বিষয়ে বিগত ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৯ ইং তারিখে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ দায়ের করার পর তিনি তদন্তের দায়িত্ব উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা অশোক রঞ্জন এর উপর দিলেও আজ ও কোন সুরাহা হয়নি। কোন প্রতিকার না পেয়ে বিগত ৭ জুলাই ২০১৯ ইং তারিখে দূর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষককে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করার বিহীত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানের কাছে অভিযোগ করলে তিনি বিহীত ব্যবস্থার জন্য জেলা শিক্ষা অফিসারের নিকট দরখাস্ত প্রেরণ করেন।

জেলা শিক্ষা অফিসার বিগত ০৯ আগষ্ঠ ২০১৯ ইং তারিখে সরেজমিন তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেলেও অদ্যবদি পর্যন্ত রিপোর্ট দেননি এমনকি কোন ব্যবস্থাও নেননি। এছাড়া লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন বিগত ২৫ অক্টোবর ২০১৮ ইং তারিখে অভিভাবকগনের ভোটে নির্বাচিত কমিটি শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত হয়। কমিটি অনুমোদনের পর বিগত ৩১ অক্টোবর সাজানো সভা আহবান করে প্রধান শিক্ষকের যোগদানের পর ১০ জুলাই ২০১২ ইং থেকে ৩০ অক্টোবর ২০১৮ ইং তারিখ পর্যন্ত ৭ বছরের বিদ্যালয়ের আয় ব্যয়ের হিসাব পরীক্ষা নিরীক্ষা দেখিয়ে অনুমোদন করেন সেই প্রধান শিক্ষক।

আমরা কমিটির লোকজন বার বার তাগিদ দেওয়া সত্ত্বে ও বিদ্যালয়ের স্তাবর অস্থাবর সম্পত্তির ষ্টক রেজিষ্টার প্রদান করেননি এমনকি বিভিন্ন তথ্য প্রদান করার জন্য লিখিত চিটি দিলেও তিনি কোন তথ্য দেননি। বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে বর্তমান পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যাবতীয় ফিসের প্রতি বছর ওয়ারী প্রায় ৫-৬ লক্ষ টাকা উত্তোলন করে কোন ব্যাংকে জমা না করে সাবেক সভাপতি ও একাডেমিক সুপারভাইজারের সাথে যোগসাজসে ভাগ ভাটোয়ারা আত্মসাৎকরে অন্যায়ভাবে লাভবান হয়েছেন।

এছাড়া বিদ্যালয়ের অনুকূলে সরকারি বিভিন্ন বরাদ্দের টাকা, বিদ্যালয়ের ৮০ হাত লম্বা ঢেউটিন ও কাঠের তৈরী ঘর ভেঙ্গে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা এবং বিদ্যালয়ের ৭-৮ টি রেন্টিগাছ কেটে বিক্রি করে সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাৎকরেছেন প্রধান শিক্ষক। এছাড়া বিদ্যালয়ের ভূমিদাতা না হয়েও কিভাবে একজন লোক প্রতিাষ্ঠাতা সদস্য হন এবং যারা বিদ্যালয়ে ভূমি দান করলের তারা প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হতে পারেন না এই বিষয়ে বার বার লিখিত দিয়ে ও কোন জবাব পাওয়া যায়ানি।

বিগত ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ইং তারিখে শিক্ষার্থীদের বৃত্তির মোট ২২ হাজার ৭ শত ৫০ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। বিদ্যালয়ে জাতীয়, সামজিক, ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করা হয়না। এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ক্ষুব্দ হয়ে বিরুদ্ধে শিক্ষক কর্মচারীরা অঙ্গিকারনামা দিয়েছেন। এলাকার অভিভাবক থেকে শুরু করে সচেতন মহল ক্ষুব্দ রয়েছেন এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে।কমিটির সদস্যদের সাথে প্রধান শিক্ষকের সমন্বয় না থাকায় বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা দিন দিন ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছে।

এই অবস্থা থেকে পরিত্রানের জন্য এবং দূর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ সহ দেশবাসীরর কাছে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আকূল আবেদন জানান সভাপতি। সংবাদ সম্মেলনের সময় উপস্থিত ছিলেনবিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য কাচা মিয়া, শুকুর মিয়া,মাসুক মিয়া, শিবলী রানী দে।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *