মৃত ব্যক্তিকে জীবিত দেখিয়ে জমি বিক্রি!

জাতীয় লীড

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: কুড়িগ্রামের চর রাজিবপুরে মৃত ব্যক্তিকে জীবিত দেখিয়ে তার নামের জমি বিক্রি করার ঘটনা ঘটেছে। গত ৩ ফেব্রুয়ারি উপজেলা সাব-রেজিষ্টার অফিসের যোগসাজসে প্রায় ৩ যুগ আগে মৃত্যু বরণ করা দৌলতি বেওয়া নামের এক নারীকে জীবিত দেখিয়ে তার নামীয় জমি বিক্রি করা হয়েছে।

উপজেলার সদর ইউনিয়নের বদরপুর গ্রামের নহর শেখের স্ত্রী দৌলত বি নেছার নামে ০.৫৪ একর আবাদি জমির মধ্যে ০.৫০ একর জমি বিক্রি দেখানো হয় ১ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকায়। ক্রেতা হিসেবে ওই জমি গোল্ডেন লাইফ একাডেমি নামের এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নামে দলিল সম্পাদন করা হয়।

ওই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ইসমাইল হোসেন দলিল লেখক নুরনবী (সনদ নং-৩৭/২০০৭ইং) সাথে যোগসাজসে ওই জালিয়াতির আশ্রয় নেয়। এতে জমি দাতা দৌলতবি নেছাকে জীবিত দেখিয়ে ০.৫০ একর জমির দলিল সম্পাদন করা হয়। যার দলিল নম্বর -১৩১/২০।

মৃত্যু দৌলতবি নেছার স্বজন আবদুল করিম সাংবাদিকদের নিকট অভিযোগ করে বলেন, তার দাদী মারা গেছে অনেক আগে। মরা মানুষ জীবিত কইরা ক্যামন করে আমার দাদীর জমি কবলা অইল? আমি এর বিচার চাই।

তিনি জানান, ঘটনাটি জানার পর তিনি, সাব-রেজিষ্টার অফিসে গিয়ে নকল উঠিয়ে দেখন ঘটনাটি সত্য। সাব-রেজিষ্টার নজরুল ইসলাম সাথে আভিযোগকারী কথা বললে তিনি বিষয়টি জানেন না বলে জানান। ঘটনাটি সত্য হলে দলিল লেখকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন বলে তাদের শান্তনা দেন। মৃত্যু সনদ দেখে ও এলাকাবাসীর নিকট থেকে জানা গেছে দৌলতবি নেছা প্রায় ৩৫ বছর আগে মারা গেছে।

মৃত্যু ব্যক্তি জীবিত দেখিয়ে জমির দলিল সম্পাদন হওয়ায় বিষয়টি সারা উপজেলা শহর ছড়িয়ে পড়লে জনমনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী অভিযুক্ত দলিল লেখক ও ক্রেতার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দাবি জানিয়েছেন।

অভিযোগ প্রসঙ্গে দলিল লেখক নুরনবী সাংবাদিকদের জানান, আমি এত কিছু জানতাম না। ক্রেতা আমাকে কাগজপত্র দিয়েছে আমি দলিল করে দিয়েছি। আমাকে খরচ হিসেবে ১৫ হাজার টাকা দিয়েছে। জালিয়াতি করে কেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নামে জমি ক্রয় করলেন এ বিষয়ে ক্রেতা ইসমাইল হোসেন জানান, আমি একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করতে চাচ্ছি। সে জন্য জমির দরকার জমি ক্রয় করেছি। আর মালিকদের সাথে একটু ঝামেলা হয়েছে, সে ব্যাপারে সমঝোতার চেষ্টা চলছে।

চর রাজিবপুর সাব-রেজিস্টার নজরুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি আমি আগে জানতাম না। যখন জেনেছি আমি কথা দিচ্ছি দলিল লেখকের নিবন্ধন বাতিলসহ প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ ব্যাপারে চর রাজিবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম মোর্শেদ তালুকদার জনান, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সূত্র: পূর্বপশ্চিমবিডি।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *