নগদ অর্থ সহায়তার তালিকায় ১ মোবাইল নম্বর ২০০ বার তালিকাভুক্তির ঘটনায় তদন্ত শুরু

জাতীয় লীড

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: হবিগঞ্জে সরকারের নগদ অর্থ সহায়তার তালিকায় ভিন্ন ভিন্ন নামে একই মোবাইল নম্বর সর্বোচ্চ ২শ’ বার ব্যবহারের ঘটনায় তদন্ত শুরু হয়েছে।  শনিবার (১৬ মে) রাতে হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসনের ফেসবুকে পেজে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।

এতে বলা হয়, লাখাই উপজেলাধীন মুড়িয়াউক ইউনিয়নে প্রস্তুতকৃত প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় প্রাথমিকভাবে প্রণীত খসড়া নামের তালিকায় যাচাইবাছাই কালে কতিপয় অসঙ্গতি পরিলক্ষিত হয়। এ কারণে পুনরায় যথাযথভাবে তালিকা প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। নতুন তালিকা সংশ্লিষ্ট সফটওয়্যারে আপলোড করা হবে, যা আইসিটি ডিভিশন ও অর্থবিভাগ কর্তৃক ক্রসচেকের মাধ্যমে চূড়ান্ত হবে।

‘অধিকন্তু তালিকা প্রণয়নে কোনো অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি হয়েছে কিনা এ বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন পাঠানোর জন্য স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ পরিচালক মো. নূরুল ইসলামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’

বাংলানিউজকে বাংলানিউজকে এসব বিষয়ে বিস্তারিত জানতে বাংলানিউজের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান ও তদন্তকারী কর্মকর্তার সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা কল রিসিভ করেননি।

জানা যায়, হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলায় করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত ৬টি ইউনিয়নে ৬ হাজার ৭২০টি পরিবারকে নগদ আড়াই হাজার করে টাকা সরকারি অর্থ সহায়তার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে লাখাই ইউনিয়নের ১ হাজার ১৯৪ জন, মোড়াকরির ১ হাজার ১১৩, মুড়িয়াউকের ১ হাজার ১৭৬, বামৈর ১ হাজার ২৪৬, করাবের ১ হাজার ৬ ও বুল্লা ইউনিয়নের ৯৮৫ জন রয়েছেন। ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের কাছে এ সংক্রান্ত খসড়া তালিকাও জমা দিয়েছেন জনপ্রতিনিধিরা।

কিন্তু তালিকা পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, কেবল মাত্র ৪টি মোবাইল নম্বরের আওতায় মুড়িয়াউক ইউনিয়নে ৩০৬ জনের নাম দেওয়া হয়েছে। এসব নম্বর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম মলাইয়ের ঘনিষ্টজনদের। এছাড়া তালিকায় যুক্ত হয়েছে অনেক বিত্তশালী ব্যক্তি ও জনপ্রতিনিধিদের আত্মীয়স্বজনের নাম। আছে স্বামী-স্ত্রীসহ একই পরিবারের একাধিক সদস্যের নামও।

শুধু তাই নয়, একটি ওয়ার্ডে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বসবাস না থাকলেও লেখা হয়েছে তাদের নাম। অসংখ্যবার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরগুলো হলো- ০১৯৪৪৬০৫১৯৩, ০১৭৪৪১৪৯২৩৪, ০১৭৮৬৩৭৪৩৯১ ও ০১৭৬৬৩৮০২৮৪। এছাড়া আরো ৩০টি নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে ১০ থেকে ১২ জনের নামের পাশে।

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনের কম্পিউটার অপারেটররা  জানান, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা অসম্পন্ন খসড়া তালিকা দিয়েছেন। অল্প সময়ের মধ্যে আমরা তা সম্পন্ন করি। ভুলবশত একেকটি নম্বর অনেকবার ব্যবহার হয়েছে।

এ ধরনের গরমিলের ব্যাপারে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মুশফিউল আলম আজাদ বলেন, খসড়া তালিকা জমা দেওয়ার পর আমরা তাতে অনেক অনিয়ম খুঁজে পেয়েছি। উপজেলার ৬টি ইউনিয়নেই সমস্যা হয়েছে। একেকটি মোবাইল নম্বর রয়েছে অনেকবার। ইতোমধ্যে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের এসব ব্যাপারে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা মাঠপর্যায়ে কাজ করে দ্রæত সময়ের মধ্যে হালনাগাগাদ তালিকা জমা দেবেন।

স্ব.বা/বা

 

 

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *