ধামরাইয়ে বন্যা ও ভারী বৃষ্টিতে মহাসড়কে ধস

জাতীয় লীড

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: ধামরাইয়ে ২২ বছর পর বন্যা ও ভারী বৃষ্টির কারণে আঞ্চলিক মহাসড়কে ধস দেখা দিয়েছে। চলাচলের গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়কে বেশ কিছু জায়গা ভেঙে গেছে। আবার কিছু কিছু জায়গায় বেশ দেবে গেছে।

ভারী বৃষ্টি ও বন্যার পানির স্রোতে সড়কগুলোর এক তৃতীয়াংশ জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে যানবাহন চলাচলে বেশ সমস্যা হচ্ছে। অনেকে নিজ অর্থায়নে জিও ব্যাগ ও বালু ফেলে সড়কগুলোর ভাঙন রোধ ও ক্ষতিগ্রস্ত স্থান মেরামতের কাজ করছে।

উপজেলার শরীফবাগ থেকে কালিয়াকৈর যাওয়ার রাস্তাটি সদ্য তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। বন্যার পানির স্রোতে রাস্তার বেশ ক্ষতি হয়েছে। ছোট যানবাহন চলাচলে বাধার সৃষ্টি হচ্ছে। সাধারণ জনগণ এসব যানবাহনে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। ঝাকুনির কারণে অনেক অসুস্থ রোগীর সমস্যা হচ্ছে। ছোট যানের ঝাকুনিতে শরীর ব্যথা হয়ে যায়।

সচেতন মহলের দাবি, শরীফবাগ থেকে যে নতুন রাস্তা, বন্যার স্রোতের কারণে সহজেই ওপরের পিচ উঠে গেল। রাস্তাও ভেঙে গেছে। তাহলে এই রাস্তাটি কি তৈরিতে অনিয়ম হয়েছে। এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এক শ্রেণীর সুশীল নাগরিক।

এছাড়াও উপজেলার কুল্লা, বাড়িগাও, দেপাশাই, ফুকুটিয়া, বান্নাখোলা, রামধাইল, কেলিয়া, চরডাউটিয়া, নওগা কাইত, শ্রীরামপুর, সূয়াপুর, রোয়াইল, কুশুরাসহ প্রায় অর্ধশতাধিক রাস্তার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবে ১২টি রাস্তার বেশি ক্ষতি হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বেশ কিছু এলাকার রাস্তার পিচ উঠে গেছে এবং রাস্তা ভেঙে দেবে গেছে। ফাটল দেখা দিয়েছে সড়কের সুরক্ষা বাঁধের বেশকিছু জায়গায়। কোথাও কোথাও এক দুই ফুট পর্যন্ত দেবে গেছে। আর কোথাও কোথাও ৮ থেকে ১০ ফুট পর্যন্ত গভীরভাবে ভেঙে গেছে। সড়কটির ক্ষতিগ্রস্ত স্থান মেরামত ও ভাঙন রোধে বালুবোঝাই জিও ব্যাগ ফেলছে অনেক এলাকার স্থানীয় লোকজন মিলে।

সোমভাগ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আজাহার আলী বলেন, বন্যায় ভেঙে যাওয়া আমতলী সড়কটি ব্যক্তিগত অর্থ দিয়ে গত দুইদিন আগে মেরামত করে দিয়েছি। বর্তমান যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। মানুষের ভোগান্তির কিছুটা হলেও লাগব করতে পেরেছি।

কুলসুম ফিডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ জহিরুল ইসলাম জুয়েল বলেন, কুল্যা ইউনিয়নের কেলিয়া এলাকার এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ, শত শত যানবাহন চলাচল করে। তাই নিজ অর্থায়নে প্রায় ২ লক্ষ টাকা খরচ করে রাস্তটি মেরামত করে দিয়েছি। এতে মানুষের কষ্ট কিছুটা হলেও কমবে।

ধামরাই উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মো. আজিজুল হক বলেন, বন্যায় উপজেলার প্রায় ৩৮০ কি.মি. রাস্তা অর্থাৎ নতুন-পুরাতনসহ প্রায় অর্ধশতাধিক পাকা, আধপাকা সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সরেজমিন পরিদর্শন করে ৬৫ কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই এসব ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক সংস্কারের জন্য টেন্ডার দেয়া হবে।

তবে বন্যার পানি ও ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে রাস্তার প্রায় ২শ’ কোটি টাকার ক্ষতি হবে। কারণ ৪ বছর যে রাস্তার টেকসই ক্ষমতা থাকার কথা, তা এখন দের বছরের মতো টেকসই হবে। রাস্তার সিগমেন্ট নষ্ট হয়ে যায়, বলেন তিনি।

উপজেলার বেশকিছু সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ কিছু সড়ক নির্মাণে পথচারীদের চলাচলের ব্যবস্থা (ফুটপাত) রাখা হয়নি। বৃষ্টির সময় পুরো সড়কের মাঝখানে পানি জমে থাকে। ফলে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটে জানমালের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। সেইসাথে রাস্তারও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *