চলন্ত ট্রেন থেকে নামিয়ে কিশোরীকে গণধর্ষণ

জাতীয় লীড

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: চলন্ত ট্রেন থেকে নামিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ থানায় ৪ জনকে আসামি করে মামলা করেছে এক কিশোরী। এ ঘটনায় রকি নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃত রকি উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের তালুক বানিনগরের রজব আলীর ছেলে। তিনি পেশায় অটোচালক। অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় মাতব্বররা বৈঠকে বসে গণধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে মোটা অংকের টাকা নিয়েছে ধর্ষকদের কাছ থেকে।

শুক্রবার বিকেলে কালীগঞ্জ প্রেসক্লাব এলাকা থেকে ধর্ষিতা কিশোরীকে উদ্ধার করে হেফাজতে নেয় কালীগঞ্জ থানা পুলিশ।

পুলিশ ও ধর্ষিতা কিশোরী বাংলাদেশ জার্নালকে জানায়, রংপুরের কাউনিয়া এলাকার মামার বাড়ি থেকে ভুক্তভোগী এতিম কিশোরী (১৫) গত সোমবার (৫ অক্টোবর) লালমনিরহাটের পাটগ্রামে খালার বাড়িতে বেড়াতে আসে। সেখান থেকে পরদিন সন্ধ্যায় লালমনিরহাটগামী আন্তনগর করতোয়া এক্সপ্রেস ট্রেনে কাউনিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।

ট্রেন কালীগঞ্জের কাকিনা স্টেশনে দাঁড়ালে ওই কিশোরী নাস্তা করতে নামে। এ সময় কাকিনা স্টেশনে নিজেকে রকি পরিচয় দিয়ে এক ছেলে জানতে চাইলে ওই কিশোরী কাউনিয়া যাচ্ছে বলে পরিচয় দিলে যুবক রকিও নিজেকে কাউনিয়ার বাসিন্দা বলে পরিচয় দেয়। এরই মাঝে ট্রেন স্টেশন ছেড়ে দিলে ওই কিশোরীকে না দৌড়ে রকি অটোরিকশা যোগে কাউনিয়া যাবেন এবং সেই অটোরিকশায় তাকে বাড়ি পৌঁছে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়।

প্রতিশ্রুতি মোতাবেক একটি অটোরিকশা যোগে রকি নামের ওই যুবক কিশোরীকে নিয়ে কাউনিয়া যাওয়ার কথা বলে বিভিন্ন সড়কে ঘুরে মধ্যরাতে একটি সেচ পাম্পের নির্জন ঘরে নিয়ে রকিসহ আরো তিনজন পালাক্রমে কিশোরীকে ধর্ষণ করে। পরদিন বুধবার (৭ অক্টোবর) সকালে মুখ না খোলার শর্তে কিশোরীকে মুক্তি দেয় চার যুবক।

পরে অসুস্থ কিশোরী স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণের কথা স্বীকার করে। এরপর স্থানীয়দের সহায়তায় এক গ্রাম পুলিশ সদস্যের বাড়িতে আশ্রয় নেয় ধর্ষিতা কিশোরী। বৃহস্পতিবার (৮ অক্টোবর) রাতে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় মাতব্বররা বৈঠকে বসে ধর্ষণকারী যুবকদের শনাক্ত করে মোটা অংকের টাকা জরিমানা আদায় করেন বলেও ধর্ষিতা কিশোরী দাবি করে।

জরিমানার টাকা কিশোরীকে না দিয়ে উল্টো তাকে হুমকি দিয়ে পথ খরচ বাবদ দুই হাজার টাকা দিয়ে মাতব্বররা তাকে পাঠিয়ে দেয় বলে অভিযোগ করেন ধর্ষিতা। পরে শুক্রবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে স্থানীয়দের মাধ্যমে কিশোরী কালীগঞ্জ প্রেসক্লাবে আশ্রয় নেয়। ঘটনার লোমহর্ষক এ বর্ণনা শুনে সাংবাদিকরা থানা পুলিশকে অবগত করলে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ ধর্ষিতা কিশোরীকে উদ্ধার করে হেফাজতে নেয়।

ধর্ষিতার তথ্য মতে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ। রাত ৯টার দিকে ওই চারজনসহ আরো অজ্ঞাতনামা করে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

কালীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) ফরহাদ হোসেন বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, ধর্ষিতা কিশোরীর দেয়া তথ্যের প্রাথমিক তদন্ত করে একটি মামলা নেয়া হয়েছে। আসামিদের মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের ধরতে মাঠে পুলিশ নেমেছেন। দ্রুত বাকি আসামিদের ধরা হবে বলেও জানান তিনি। সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *