সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে মৃত্যু: রায়হানের লাশ তুলে ফের তদন্তের নির্দেশ

জাতীয় লীড

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে নিহত রায়হানের মরদেহ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে কবর থেকে তুলে পুনরায় ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

বুধবার সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) এএইচএম মাহফুজুর রহমান লাশ কবর থেকে তুলে পুনরায় ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

আগের তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার এসআই আবদুল বাতেনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি তিনি এ নির্দেশ দেন।

এদিকে বুধবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসেছে পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর মুহিদুল ও তাদের ক্রাইম সিন ইউনিট।

অভিযোগে বলা হয়েছে, গত শনিবার রাতে রায়হানকে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে ধরে নিয়ে ১০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করে পুলিশের কয়েকজন সদস্য। ফোনে পরিবারের সদস্যদের টাকা নিয়ে আসতে বলেন রায়হান। রোববার সকালে ৫ হাজার টাকা নিয়ে তার পরিবারের সদস্যরা থানায় গিয়ে জানতে পারেন, অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে গিয়ে শোনেন রায়হান মারা গেছেন।

পুলিশের পক্ষ থেকে প্রথমে বলা হয়েছিল, নগরীর কাস্টঘর এলাকায় ছিনতাইয়ের চেষ্টাকালে গণপিটুনিতে রায়হানের মৃত্যু হয়েছে। তবে সোমবার দিনভর ওই এলাকায় যুগান্তরের অনুসন্ধানে এমন কোনো ঘটনার তথ্য পাওয়া যায়নি। সেখানে যেসব সিসি ক্যামেরা আছে, তাতেও এ রকম কোনো ঘটনার রেকর্ড নেই। তবে রায়হানকে যে ধাওয়া করে একটি কক্ষ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তা নিশ্চিত করেছেন সেই ঘরের মালিক সুইপার সুলাইলাল।

তিনি এদিন দুপুরে যুগান্তরকে জানান, শনিবার রাত ৩টার দিকে হঠাৎ দৌড়ে আসে রায়হানসহ দুজন। একজন অন্যদিকে দৌড়ে চলে গেলেও রায়হান তার ঘরে প্রবেশ করেন। তার পর দরজা বন্ধ করে দেন। এর কিছুক্ষণ পর ছয়জন পুলিশ এসে তাকে বলে, তার ঘরে একজন ছিনতাইকারী প্রবেশ করেছে। তখন তিনি পুলিশের কাছে স্বীকার করেন।

সুলাইলাল বলেন, পুলিশ আমার ঘর থেকে রায়হানকে সুস্থ অবস্থায় হ্যান্ডকাপ পরিয়ে নিয়ে যায়।

রায়হানকে হত্যার অভিযোগে রোববার রাত আড়াইটায় কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন নিহত রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে থানার এসআই আবদুল বাতেনকে।

এর আগে এসএমপির উপকমিশনার (ডিসি-উত্তর) আজবাহার আলী শেখ স্বাক্ষরিত ৬৩৫৭নং স্মারকে বলা হয়: রায়হানের স্ত্রীর অভিযোগ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, কে বা কারা তার স্বামীকে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে নিয়ে পুলিশি হেফাজতে রেখে তার হাত-পায়ে আঘাত করে জখম করে।

ফাঁড়িতে রাতভর নির্যাতনের ফলে তার স্বামী মারা যান। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কোতোয়ালি থানার ওসিকে নির্দেশ দেন আজবাহার আলী শেখ। সূত্র: যুগান্তর।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *