‘ভাস্কর্য নিয়ে যারা বিতর্ক সৃষ্টি করতে চায় তারা লেখাপড়া জানেনা’

জাতীয়

স্বদেশ বাণী ডেস্ক : আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, যারা ভাস্কর্য নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করতে চায়, তারা লেখাপড়া জানেনা। পৃথিবীর বহু মুসলিম দেশে ভাস্কর্য আছে। আজকে ভাস্কর্য নিয়ে রাজনীতি শুরু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে ভোলা জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের উদ্বোধন ও জেলার মডেল মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জেলা প্রশাসন ও গণপূর্ত বিভাগ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, পৃথিবীর প্রথম বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়ায় তাদের জাতির পিতার ভাস্কর্য রয়েছে। আমাদের মহানবীর জন্মস্থান সৌদী আরবে আছে মুষ্টিবদ্ধ হাত এবং ঘোড়ার ছবি। ইরানে বিখ্যাত কবি ওমর খৈআম, ফেরদৌসের ভাস্কর্য রয়েছে। ইরাকে আলীবাবা চল্লিশ চোর এর বুদ্ধীমতী নারী মর্জিনা তারও ভাস্কর্য আছে।

তিনি বলেন, মলেশিয়ায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছে তাদের নিয়ে আছে ন্যাশনাল মনুমেন্ট। তুরস্কের বর্তমান প্রেসিডেন্টের নামে ভাস্কর্য রয়েছে। তিউনেশিয়ায়ও ভাস্কর্য আছে। বাংলাদেশেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক আগে থেকেই ভাস্কর্য আছে। তারপরেও ভাস্কর্য নিয়ে কেন বিতর্ক প্রশ্ন রাখেন তিনি।

প্রবীণ এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, যতদিন বাংলাদেশ থাকবে, বাংলার মাটি ও মানুষ থাকবে, ততদিন জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালীর জাতির হৃদয়ের মনিকোঠায় বিরাজ করবেন। আজকে মাদ্রাসায় যারা পড়ান সেখানেও তারা অন্যায় কাজ করে, কিন্তু সেগুলো নিয়ে সোচ্চার হয়না। সোচ্চার হয় ভাস্কর্য নিয়ে।

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, বিজয়ের আনন্দ ক্ষণস্থায়ী, পরাজয়ের গ্লানি চীরস্থায়ী। ৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আমরা বিজয় লাভ করেছি। কিন্তু আমরা তা ভুলে গেছি। আর যারা পরাজিত তারা কিন্তু ভোলেনি। তারা ওৎ পেতে আছে। যার কারণে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে, নিস্পাপ রাসেলকেও হত্যা করেছে। যাতে বঙ্গবন্ধুর রক্তের কেউ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে না পারে।

বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ এই সহচর বলেন, সেদিন জাতির পিতার দুইকন্যা দেশের বাইরে থাকায় তারা বেঁচে যান। আমরা তাঁর কন্যার হাতে আওয়ামী লীগের পতাকা তুলে দিয়েছি। সেই পতাকা হাতে নিয়ে জেল, জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতন সহ্য করে বার বার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েও নিষ্ঠার সাথে আপোষহীনভাবে বাংলাদেশকে পরিচালনা করে পৃথিবীর মধ্যে একটি গর্বিত জাতিতে পরিনত করেছেন।

তোফয়েল বলেন, জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে ক্ষমতায় এসে রাষ্ট্রীয় নীতিকে তছনছ করেছে। বাঙালী জাতীয়তাবাদকে বাংলাদেশীয় জাতীয়তাবাদ করেছে। ধর্মভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ ছিলো, তিনি ধর্মভিত্তিক রাজনীতি দিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরলস পরিশ্রম করে চলছেন। তার নেতৃত্বে এই করোনাকালেও আমরাও এশিয়ার মধ্যে এগিয়ে রয়েছি। ভারতের চেয়ে আমাদের মাথাপিছু আয় বেশি। মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনদেরও তিনি সাহায্য করছেন। গরীব দুখী মানুষ যাতে দু’বেলা খেতে পারেন সে ব্যবস্থাও প্রধানমন্ত্রী করেছেন। ব্যবসায়ীরা যাতে আর্থিকভাবে সহায়তা পায় সেই ব্যবস্থাও করেছেন।

জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের হলরুমে অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মো. মাসুদ আলম ছিদ্দিকের সভাপতিত্বে আরো বক্তৃতা করেন- জেলা পুলিশ সুপার সরকার মো. কায়সার, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মমিন টুলু, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মোশারেফ হোসেন, জেলা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী শরিফউদ্দিন আহমেদ।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *