স্বদেশ বাণী ডেস্ক: রসিকতার ছলে পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে দুলাল হোসেন নামে এক সহকর্মীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে বরাত হোসেন নামে এক শ্রমিকের বিরুদ্ধে। শনিবার দুপুর ২টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান দুলাল। এর আগে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে পাবনা বিসিক শিল্প নগরীতে দুলালের পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে দেয় সহকর্মী বরাত হোসেন।
নিহত দুলাল পাবনার চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের পূর্বটিয়ারতলা গ্রামের আবু বক্কারের ছেলে। অভিযুক্ত বরাত হোসেন একই গ্রামের কামাল হোসেনের ছেলে।
নিহতের স্বজনদের বরাত দিয়ে মূলগ্রাম ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আরজান আলী যুগান্তরকে জানান, গত বৃহস্পতিবার সকালে অন্যান্য দিনের মতো দুলাল পাবনা বিসিক শিল্প নগরীতে শ্রমিকের কাজ করতে যায়। অতিরিক্ত গরমের কারণে দুলাল তার সহকর্মী বরাতকে ধুলা পরিষ্কার করার মেশিন দিয়ে শরীরে বাতাস দিতে বলে।
এ সময় রসিকতার ছলে বরাত হোসেন পাইপ দিয়ে দুলালের পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে দিলে সে (দুলাল) অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরপর প্রথমে তাকে পাবনা মেডিকেলে ও পরে অবস্থার অবনতি হলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার দুপুরে দুলালের মৃত্যু হয়।
এদিকে শনিবার বিকালে দুলালের লাশ বাড়িতে নিয়ে আসলে সেখানে এক হৃদয় বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
খবর পেয়ে পাবনা সদর থানা পুলিশ দুলালের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা নিয়ে যান। এই ঘটনার পর পালিয়ে যায় অভিযুক্ত বরাত হোসেন।
এ ব্যাপারে চাটমোহর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, পাবনা সদর থানা পুলিশের মাধ্যমে আমরা খবর পেয়ে অভিযুক্ত বরাত আলীকে ধরতে অভিযান শুরু করেছি। তবে ঘটনাটি যেহেতু সদর থানায় ঘটেছে এ ব্যাপারে তারাই ব্যবস্থা নেবে।
পাবনা সদর থানার ওসি ওবাইদুল হক বলেন, পুলিশকে না জানিয়ে দুলাল নামের ওই শ্রমিকের লাশ বাড়িতে নিয়ে যান স্বজনরা। যেহেতু সদর থানা এলাকায় ঘটনা সেহেতু লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছি। তবে পায়ুপথে বাতাস ঢোকানোর কারণে তার (দুলাল) মৃত্যু হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যাবে ময়নাতন্তের প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৮ ডিসেম্বর মধ্যরাতে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার সত্যভান্দি এলাকায় মৃত লিয়াকত আলীর ছেলে কারখানার শ্রমিক সুমনের (২৮) পায়ু পথে বাতাস ঢুকিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। রাত সাড়ে ১২টার দিকে সত্যভান্দির নয়াপাড়ার উদয়ন ববিন মিলের শ্রমিক সুমনকে কে বা কারা পায়ু পথে বাতাস ঢুকিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় মিলের সামনে ফেলে রাখে। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে ভূলতা আল-রাফি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এর আগে ২০১৭ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর বগুড়ার কাহালুতে কম্প্রেসার মেশিন দিয়ে পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে রাসেল মিয়া (১৯) নামে এক যুবককে হত্যা করা হয়েছিল। ওই দিন সকালে কাহালু উপজেলার বীরকেদার এলাকায় এবিসি টাইলস নামে একটি সিরামিক কারখানার শ্রমিক রুবেল হোসেন (২৪) তার সহকর্মী রাসেল মিয়ার পায়ুপথে জোরপূর্বক বাতাস ঢুকিয়ে দেয়। এতে রাসেল অসুস্থ হয়ে পড়লে কারখানার লোকজন তাকে শজিমেক হাসপাতালে নেয় এবং রুবেলকে আটক করে পুলিশে দেয়।