অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকুন: তথ্যমন্ত্রী

জাতীয়

স্বদেশবাণী ডেস্ক: যে কোনো অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সোচ্চার থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মিলনায়তনে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে কে-ফোর্স অনলাইন সংগঠন আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।

‘দেশ থেকে পরিচয় গোপন করে কোনো একটা পেইজ খুলে কিম্বা বিদেশ থেকে অনলাইনে সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয়’ বলেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এমনও হয় যে, ছেলেকে মেয়ে বা মেয়েকে ছেলে বানিয়ে দেয়া, জীবিত মানুষ মরে গেছে সেই গুজবও পরিবেশিত হয়। পদ্মাসেতুতে বলি দেয়ার গুজব রটিয়ে সারাদেশে ছেলেধরা-আতঙ্ক ছড়ানোর অপচেষ্টায় নিরীহ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। করোনায় দেশে হাজার হাজার লাশ পড়ে থাকার গুজব ছড়ানোর অপচেষ্টা হয়েছে। করোনার টিকা ভারতের টিকা, অন্যদের ওপরে পরীক্ষার জন্য, এই টিকা কোনো কাজ করবে না -এমন গুজবও ছড়ানো হয়েছে। যারা ছড়িয়েছে, তারাই এখন টিকা নিচ্ছে, কেউ কেউ গোপনে নিয়েছে।’

ড. হাছান সবাইকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সর্বদা সোচ্চার থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, যে কোনো ধরণের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকুন। একইসাথে দেশ, সরকার ও মানুষের অর্জনগুলো ফলাওভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করুন। বাংলাদেশে প্রায় ৭ থেকে ৮ কোটি মানুষ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে। সুতরাং এখানে প্রচারটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কেউ একটি অপপ্রচার করলে সাথে সাথে সেটির বিরুদ্ধে ঠিক পোস্ট দেয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যখন ডিজিটাল বিষয়টি ছিল না, তখন ডিজিটাল নিরাপত্তার বিষয়টিও ছিল না। যখন ডিজিটাল বিষয়টি চলে এসেছে এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ অনলাইনে মানুষকে নিরাপত্তা দেয়া রাষ্ট্রের দায়িত্ব। সেই কারণেই এই আইন, পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও তা আছে। এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন একজন সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক, লেখক, গৃহিনী, ছাত্র, কৃষক, শ্রমিক, রিক্সাওয়ালা, গৃহবধু -সবার ডিজিটাল নিরাপত্তার দেয়ার জন্য। যাতে কেউ কারো চরিত্রহরণ করতে বা অসত্য, ভুল সংবাদ পরিবেশন করে গুজব ছড়িয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে না পারে।’

‘আর প্রেসক্লাবের সামনে দাঁড়িয়ে যে কয়েকজন ব্যক্তি এই আইন বাতিলের দাবি করেন, তারা আসলে গুজব রটানোর অবাধ অধিকার চান’ উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘পত্রিকায় শিরোনাম হয়, সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। সুশীল কি শুধু তারা পাঁচ-দশজন! বাংলাদেশে হাজার হাজার মানুষ সুশীল, বহু মানুষ বুদ্ধিজীবী। এবং প্রতিবাদকারী ঐ দশজনের ডিজিটাল নিরাপত্তা দেয়ার জন্যও এই আইন।’

বিএনপি মহাসচিবের সাম্প্রতিক বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব সরকারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উপস্থাপন করেছেন। ইসরাইলপ্রীতি হচ্ছে বিএনপি’র। কারণ খালেদা জিয়া যখন সরকারে ছিলেন, তখন যখন ইসরাইলী বাহিনীর গুলিতে শতশত ফিলিস্তিনি হত্যা হলো তখন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এজন্য একটি শোক ও নিন্দা প্রস্তাব আনার জন্য পার্লামেন্টে পেশ করা হয়েছিল। খালেদা জিয়ার সরকার রাজি হয় নাই, তারা ইসরাইলের বিরুদ্ধে কোনো প্রস্তাব দিতে রাজি নয়। সুতরাং ইসরাইলপ্রীতি হচ্ছে বিএনপি’র।’

সরকার ইসরাইলের কাছ থেকে কোনো ধরণের ইকুইপমেন্ট কেনে না জানিয়ে ড. হাছান বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যখন গুজব রটিয়ে কাজ হচ্ছে না, তখন বিদেশি মিডিয়া ভাড়া করে ভুয়া রিপোর্ট করানো হচ্ছে। সেই রিপোর্টও গাঁজাখুরি, কোনো মানসম্মত রিপোর্ট না, আমাদের দেশের টেলিভিশন চ্যানেল এমনকি বিভিন্ন অনলাইনেও এর চেয়ে ভালো রিপোর্ট হয়।’

‘আসলে আজকে দেশ স্বল্পোন্নত থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে দেখে বিএনপি’র মাথা খারাপ হয়েছে’ বলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান। তিনি বলেন, ‘সরকারকে ধন্যবাদ দিতে লজ্জা লাগলেও অন্তত দেশটাকে তো তারা ধন্যবাদ দিতে পারতেন। সেটিও তারা করেননি। অর্থাৎ দেশের কোনো উন্নয়ন- অগ্রগতি তাদের পছন্দ নয়।’

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি মাহজাবীন খালেদের সভাপতিত্বে সভায় ব্যারিস্টার মো: জাকির আহমেদ, যুব লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ডাঃ হেলাল উদ্দিন, যুবলীগ নেতা সাংবাদিক মানিক লাল ঘোষ,   আসাদুজ্জামান আজম বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *