আরও দুটি বিপজ্জনক খাতকে শিশুশ্রম মুক্ত করার ঘোষণা শীঘ্রই

জাতীয়

স্বদেশবাণী ডেস্ক:  সকল খাতকে ২০২৫ সাল নাগাদ শিশু-শ্রম মুক্ত করার সরকারের পদক্ষেপের অংশ হিসেবে আরও দুটি বিপজ্জনক খাত কোল্ড স্টোরেজ ও ওষুধ কারখানাকে শীঘ্রই শিশু-শ্রম মুক্ত করার ঘোষণা দেয়া হবে। এ ব্যাপারে, কারখানা ও সংস্থাপন পরিদর্শন বিভাগ শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে একটি প্রস্তাব পেশ করেছে।

শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব কে এম আব্দুস সালাম বলেন, একটি স্বাস্থ্যকর জাতি গঠনের লক্ষ্যে ও শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করতে সরকার বিপজ্জনক পরিবেশে শিশু-শ্রম সম্পূর্ণভাবে মুক্ত করতে সর্বোত্তম প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, কর্তৃপক্ষ ত্রিপাক্ষিক পরামর্শ কমিটি (টিসিসি) সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিপজ্জনক শ্রমিকের তালিকা বৃদ্ধির পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।

কারখানা ও সংস্থাপন বিষয়ক পরিদর্শন বিভাগের অতিরিক্ত মহা-পরিদর্শক মো. এজাজ আহমেদ জাবের বলেন, সরকার দেশের সকল খাতকে শিশু-শ্রম মুক্ত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এর অংশ হিসেবে সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর এই দুটি নতুন খাতকেও শিশু-শ্রম মুক্ত ঘোষণা দেয়া হবে।

এজাজ আহমেদ আরও বলেন, ‘এখন, ৩৮টি ঝুঁকিপূর্ণ খাত রয়েছে। আমাদের আরও ছয়টি খাতকে শিশু-শ্রম মুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। শিশুদের জন্য এই বিপজ্জনক খাতের মধ্যে শুটকি খাতও রয়েছে।’

কারখানা ও সংস্থাপন বিষয়ক পরিদর্শন বিভাগের যুগ্ম মহা-পরিদর্শক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, তারা নতুন খাত দুটিকে শিশু-শ্রম মুক্ত হিসেবে ঘোষণা করতে ইতোমধ্যেই মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পেশ করেছে। তিনি বলেন, মূল্যায়ন ও সকল প্রক্রিয়া শেষে সরকার খাত দুটিকে শিশু-শ্রম মুক্ত ঘোষণা করবে।

এর আগে সরকার আটটি খাতকে শিশু-শ্রম মুক্ত ঘোষণা করেছে। খাতগুলো হচ্ছে- ট্যানারি, গ্লাস, সিরামিক, শিপ রিসাইক্লিং, রপ্তানী-সংশ্লিষ্ট চামড়া ও পাদুকা, রেশম, তৈরি পোশাক ও চিংড়ি।

উইনরক ইন্টারন্যাশনাল প্রকল্পের আওতাধীন চাইল্ড লেবার ইমপ্রুভমেন্ট ইন বাংলাদেশ (সিএলআইএমবি)’র প্রকল্প পরিচালক এ এইচ এম জামান খান বলেন, সারা দেশে শুটকিপল্লীসহ বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ খাতগুলোতে শিশু-শ্রমের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যদি শিশু-শ্রমকে সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করতে না পারি, তবে ভবিষ্যতে দরিদ্র পরিবারগুলোর সন্তানরা সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে না।’

সিএলআইএমবি প্রকল্পের নাগরিক সংযোগ ও স্বক্ষমতা উন্নয়ন বিশেষজ্ঞ মো. তানভির শরিফ বলেন, বিভিন্ন শ্রম খাতে সরকারি, স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর অনেক সাফল্য সত্ত্বেও শুটকি খাত শিশু-শ্রমের জন্য সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এ ব্যাপারে আরও মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন।

তিনি বলেন, ‘শিশুরা এই কারখানাগুলোতে ঝুঁকিপূর্ণ রাসায়নিক এবং লবনাক্ত পানিতে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করছে। এই ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে তারা কোনরকম সুরক্ষা ছাড়াই নয় ঘণ্টা কাজ করছে। এতে তাদের চর্মরোগসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্য জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে- এই শিশুদের স্কুলে উপস্থিতি খুবই কম।’

তানভির শরিফ আরও বলেন, এখানে কাজ করা ৫৯ শতাংশ শিশুর বয়স ১৪ বছর থেকে ১৭ বছর। এদের মধ্যে ৭২ শতাংশ দৈনিক ভিত্তিতে এবং অন্যরা চুক্তিভিত্তিক কাজ করছে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *