স্বদেশবাণী ডেস্ক: দেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রথম বিসিএসে নিয়োগ পাওয়া প্রশাসন ক্যাডারের পদোন্নতিবঞ্চিত ৩৯ মুক্তিযোদ্ধাকে প্রাপ্যতা অনুযায়ী ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়ে রায় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সাক্ষরের পর রোববার এ রায় প্রকাশ করা হয়েছে। ২০০১ থেকে ২০০৩ সালের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে পদোন্নতি বঞ্চিত হওয়া এই ৩৯ কর্মকর্তার করা তিনটি রিটে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে গত বছরের ১ নভেম্বর এ রায় দেন আদালত।
আজ পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রিটকারীদের আইনজীবী রেজা-ই-রাব্বী রায় প্রকাশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এতে বলা হয়, ‘১৯৯৮ সালের ‘উপ-সচিব, যুগ্ম সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পদে পদোন্নতি/নিয়োগের নীতিমালা’ অনুযায়ী অবসরে যাওয়া এসব যুগ্ম সচিব ও উপ-সচিব প্রাপ্যতা অনুসারে পদোন্নতিসহ আনুষঙ্গিক সুবিধা ও পদমর্যাদা পাবেন। আপিল বিভাগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০০২ সালের ‘উপ-সচিব, যুগ্ম সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পদে পদোন্নতি/নিয়োগের বিধিমালা’ মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বা কার্যকর হবে না।’
রেজা-ই-রাব্বী সাংবাদিকদের বলেন, ‘রিট আবেদনকারী ৩৯ জন মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়োগ দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। তাদের পদোন্নতি জন্য ১৯৯৮ সালে একটি নীতিমালা করে সরকার। এরপর ১৯৯৯ সালে সরকার জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে একটি পদোন্নতির তালিকা করে। পরবর্তীতে তাদের কেউ কেউ পদোন্নতিও পান। ১৯৯৮ সালের নীতিমালার আলোকে পদোন্নতি পেয়ে তাদের কেউ কেউ যুগ্ম সচিব পর্যন্ত হয়েছেন। কিন্তু ২০০২ সালে নতুন মানদণ্ড করে বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়। এই মানদণ্ড করাই হয়েছিল মুক্তিযোদ্ধাদের বাদ দেয়ার জন্য। এর মধ্যে ২০১১ সালে এ সংক্রান্ত অন্য একটি মামলা আপিল বিভাগ পর্যন্ত যায়। সে মামলায় রায়ে আপিল বিভাগ বলে দেন ২০০২ সালের বিধিমালা মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষেত্রে কার্যকর হবে না। আর ২০০২ সালের বিধিমালা অনুযায়ী যাদের পদোন্নতি বঞ্চিত করে কনিষ্ঠদের পদোন্নতি দেয়া হয়েছে, সেসব কনিষ্ঠদের পদোন্নতি পাওয়ার তারিখ থেকে বঞ্চিতরা প্রাপ্যতা অনুযায়ী ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি পাবেন।’
পদোন্নতি বঞ্চিত না হলে এই ৩৯ জনের মধ্যে ৩৭ জন সচিব, একজন অতিরিক্ত সচিব ও একজন যুগ্ম সচিব হতেন বলে জানান এই আইনজীবী।
২০০২ সালের ‘উপ-সচিব, যুগ্ম সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পদে পদোন্নতি/নিয়োগের নীতিমালা’ প্রণয়নের পর জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে ১২ উপ-সচিব এবং ২৭ জন যুগ্ম সচিবকে (তারা সবাই মুক্তিযোদ্ধা) পদোন্নতি বঞ্চিত করে চারদলীয় জোট সরকার। পদোন্নতি বঞ্চিত হওয়ায় বিধিমালা চ্যালেঞ্জ করে যুগ্ম সচিব মো. সাইফুজ্জামান, আমিরুল ইসলাম ও উপ-সচিব খলিলুর রহমান তিনটি রিট আবেদন করেন।
রিটে ২০০২ সালের ‘উপ-সচিব, যুগ্ম সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও সচিব পদে পদোন্নতি/ নিয়োগের বিধিমালা’ চ্যালেঞ্জ করা হয়।