নষ্ট এবং ভন্ড নেতৃত্ব বর্জন করুন: তথ্যমন্ত্রী

জাতীয়

স্বদেশবাণী ডেস্ক: নষ্ট এবং ভন্ড নেতৃত্ব বর্জন করতে মাদ্রাসা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

রোববার (৪ এপ্রিল) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ক্যাবল অপারেটর নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠকের পূর্বে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

ড. হাছান বলেন, ‘মামুনুল হকসহ যে সমস্ত নেতৃবৃন্দ দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালিয়েছে, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় তান্ডব চালিয়েছে এবং হেফাজতে ইসলামের যে নেতারা তাদের সমর্থন করেন তাদের কেমন লাগছে জানি না, কিন্তু মামুনুল হককে নিয়ে গতকালের ঘটনাপ্রবাহে আমার প্রচন্ড লজ্জা লাগছে।’

‘আমি দেশের নাগরিক এবং একজন মুসলমান হিসেবে মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অনুরোধ জানাবো, নিজেকে আলেম হিসেবে পরিচয় দিয়ে ভন্ড লেবাস ধরে যারা ইসলামকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করে, নানা ফতোয়া দেয়, গরম গরম বক্তৃতা দেয়, আর নিজের জীবন ইসলাম সম্মতভাবে পরিচালনা করে না, সেই সমস্ত নষ্ট এবং ভন্ড নেতৃত্বকে বর্জন করার জন্য’ বলেন তথ্যমন্ত্রী।

মন্ত্রী হাছান মাহমুদ আরো বলেন, ‘যখন হেফাজতের ব্যানারে মানুষের ঘর-বাড়ি জ্বালানো হচ্ছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম-নারায়ণগঞ্জে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হচ্ছে, তখন নিপুন রায় যখন টেলিফোন করে তার কর্মীকে বাসে আগুন দিতে বলে আর গয়েশ্বর রায় সেটাকে সমর্থন দেয় তখন বুঝতে হবে, এটা ইসলামকে রক্ষা বা হেফাজতের জন্য নয়, নরেন্দ্র মোদির আগমনের বিষয়েও নয়, বরং ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য দেশে একটি বিশৃঙ্খলা তৈরির জন্যই এসব।’‘ক্যাবল নেটওয়ার্ক ডিজিটাল হবে, কারো হাতে কুক্ষিগত থাকবে না’

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এসময় ক্যাবল নেটওয়ার্ক পরিচালনা প্রসঙ্গে বলেন, ‘দেশ ডিজিটাল হয়ে গেছে, ক্যাবল নেটওয়ার্ক সিস্টেমকেও ডিজিটাল হতে হবে। কারণ এটি না হলে, গ্রাহকরা ঠিক সেবা পাচ্ছে না, টেলিভিশন চ্যানেলগুলো  ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, সরকারও ঠিক রাজস্ব পাচ্ছে না।’

‘বিশেষ কিছু ব্যক্তিবর্গের হাতে এই নেটওয়ার্ক কুক্ষিগত থাকতে পারে না’ উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘দেখা গেছে একেকজন কেবল নেটওয়ার্ক লাইসেন্সধারী লক্ষ লক্ষ সংযোগ দিয়েছেন, কিন্তু হিসেবের খাতায় দু-দশ হাজার দেখাচ্ছেন। মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করবে, যিনি যে এলাকার জন্য লাইসেন্স পেয়েছেন সেই এলাকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবেন, সেজন্য প্রয়োজনে আমরা কোর্ট পরিচালনা করবো।’

নবায়ন না করার ফলে ইতোমধ্যেই ১২শ’ লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটাল পদ্ধতিতে আত্মপ্রকাশের শর্তে নতুন অপারেটররা লাইসেন্স পাবেন।’

এসোসিয়েশন অভ টিভি চ্যানেল ওনার্স-এটকো’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মোজাম্মেল বাবু, ক্যাবল অপারেটর প্রতিনিধিদের মধ্যে এস এম আনোয়ার পারভেজ, এবিএম সাইফুল হোসেন, মোহাম্মদ নাজমুদ্দোহা, মো. মোস্তাফিজুর রহমান, কোয়াব প্রশাসক মোহাম্মদ মোস্তফা জামাল হায়দার এবং মন্ত্রণালয় ও বিটিভি’র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ সভায় অংশ নেন।

করোনার বর্তমান পরিস্থিতিতে তথ্য মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম পরিচালনা সম্পর্কে প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, প্রথমবার সাধারণ ছুটিতেও আমাদের মন্ত্রণালয় কাজ করেছে। বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন, তথ্য অধিদফতর গণযোগাযোগ অধিদপ্তর, এগুলো জরুরি সেবার আওতাভুক্ত। তাদেরকে কাজ করতেই হয় এবং সেটি দেখভাল করার জন্য মন্ত্রণালয়ের সীমিত কাজ করতে হয়। আমরা ঠিক অতীতে যেভাবে করেছি, সেভাবেই করবো। করোনার  শুরু থেকেই আমরা যেভাবে জনগণকে সচেতন করার জন্য যে প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা করেছি, সেটি আরো জোরদার করার ব্যবস্থা নিয়েছি।

মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এদিন সদ্যপ্রয়াত সংসদ সদস্য আসলামুল হক এবং শনিবার প্রয়াত সাবেক প্রধান তথ্য অফিসার বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুন-উর-রশীদের ইন্তেকালে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেন।

আরকে//

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *