দেশে এখন দুর্নীতির মহামারি চলছে : রুমীন ফারহানা

জাতীয় লীড

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: বিএনপির সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমীন ফারহানা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করলেও দেশে এখন দুর্নীতির মহামারি চলছে। দেশের আর্থিক খাত আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। ব্যাংকগুলো তারল্য সংকটে ধুকছে।

‘খেলাপি ঋণের ব্যাপারে দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষে বাংলাদেশ, যা ১২ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে’ বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির সংরক্ষিত এ নারী সংসদ সদস্য।

বুধবার সংসদে বাজেটের ওপর দেয়া বক্তবে রুমীন ফারহানা ‘প্রস্তাবিত বাজেটকে ঋণখেলাপি-বান্ধব’ বলে মন্তব্য করেন। নানা রকম প্রদর্শিত ও অপ্রদর্শিত ঋণ যদি ধরা হয় তাহলে তা তিন লাখ কোটি টাকায় দাঁড়াবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দেখালেও দেশে দুর্নীতিতে মহামারি রূপ ধারণ করেছে। সর্বত্র দুর্নীতি, এটা এখন সরকার-স্বীকৃত। এ সরকারের আমলে দুর্নীতিকে আইনে রূপ দেয়া হয়েছে। সরকারের মন্ত্রীরা বলেন, সহনীয়ভাবে ঘুষ নিতে।

তিনি বলেন, সরকার দিনদিন বিদেশি ঋণের কব্জায় পা বাড়াচ্ছে। বর্তমানে বিদেশি ঋণের পরিমাণ ৭৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি। যে শিশু আজ জন্মগ্রহণ করেছে তার মাথার ওপর ঝুলছে ৮০ হাজার টাকারও বেশি ঋণ। দরিদ্রতম দেশের মধ্যে বাংলাদেশ পঞ্চম। সরকার যে ঋণখেলাপিদের সঙ্গে আছে তা ইতোমধ্যে তাদের কর্মকাণ্ডে বোঝা যাচ্ছে। ব্যাংকগুলোকে পরিবারের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।

দেশের আর্থিক অব্যবস্থাপনার বিভিন্ন চিত্র উল্লেখ করে রুমীন ফারহানা বলেন, খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে বেড়ে বর্তমানে হয়েছে এক লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা। আদায়ের কোনো লক্ষণ নেই। আবার ঋণখেলাপিদের ছাড় দেবার তোড়জোড় চলছে। অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, ঋণখেলাপিদের মাফ করা হবে, যদিও কোর্টের নির্দেশে তা বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। এসব কাদের জন্য, কারা এত খেলাপি, কেন সরকার তাদের প্রতি মোহ, কেন সুবিধা দিতে চায়- এটা জনগণ জানতে চায়। সরকার কার টাকা মাফ করবে, জনগণের টাকা এটা, খেলাপি ঋণ আদায়ের কোনো সদিচ্ছা দেখা যায় না। বিষয়টা পরিষ্কার হওয়া দরকার।

‘এক গোপালগঞ্জ জেলাতে ১০ জেলার পাঁচ গুণেরও বেশি উন্নয়ন বরাদ্দ দেয়া হয়, এ থেকে বোঝা যায় কতটা বৈষম্য চলছে।’

‘দেশে বেকারত্বের মূল কারণ বৈদেশিক বাণিজ্যে ঘাটতি’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিবারের মতো এবারও বাজেটে ঘাটতির পরিমাণ এক লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা। যা মেটাতে হবে বৈদেশিক ঋণ কিংবা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে। সে কারণে ব্যাংকের হাতে আর টাকা থাকবে না।

‘আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় আসা মানেই শেয়ারবাজারে ধস নেমে আসা। সম্প্রতি শেয়ারবাজারে ধস নামলেও এর কোনো প্রতিকার দেখা যায়নি। ‘কালো টাকা সাদা’ করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সরকার এদের সুযোগ করে দিচ্ছে অসৎভাবে আয় করার আর বিদেশে অর্থ পাচার করার। একই ভাবে চিনি, তেল, গুঁড়া দুধের ওপর শুল্কারোপ করে সাধারণ মানুষকে সমস্যায় ফেলা হচ্ছে।’

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *