চাল ডাল তেলসহ দশ পণ্যের দাম বাড়তি

জাতীয় লীড

স্বদেশবাণী ডেস্ক: নতুন ধানের চাল বাজারে আসার পরও বাড়তি চালের বাজার। রাজধানীর খুচরা বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের চাল কেজিতে ২-৪ টাকা বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি সব ধরনের ডাল ও ভোজ্যতেলের দামও বেড়েছে। এছাড়া পেঁয়াজ, আদা-রসুন, জিরা, লবঙ্গ, এলাচ ও আলু বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে। এর ফলে গত সপ্তাহের তুলনায় বেশ কয়েকটি নিত্যপণ্য কিনতে বাড়তি টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে ভোক্তার। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে ও খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

এ দিন এসব পণ্যের দাম বাড়ার চিত্র সরকারি সংস্থ্যা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) দৈনিক বাজার মূল্য তালিকায়ও লক্ষ্য করা গেছে। টিসিবি বলছে- বৃহস্পতিবার রাজধানীর খুচরা বাজারগুলোতে এক সপ্তাহের ব্যবধানে মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণা জাতের চাল কেজিতে ২ দশমিক ২০ শতাংশ বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি আকারের চাল কেজিতে ৬ শতাংশ ও সরু চাল কেজিতে ৩ দশমিক ৪২ শতাংশ বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি ডাল সর্বোচ্চ ৭ দশমিক ১৪ শতাংশ বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি লিটার ভোজ্যতেল সাত দিনের ব্যবধানে সর্বোচ্চ ৪ দশমিক ১৭ শতাংশ বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। কেজিতে পেঁয়াজ ৮ দশমিক ৯৭ শতাংশ, আমদানি করা আদা ৪ দশমিক ৭৬, রসুন ১৪ দশমিক ২৯, জিরা ২ দশমিক ৭৮, লবঙ্গ ১২ দশমিক ৫০, এলাচ ১ দশমিক ৭২ ও আলু কেজিতে ১৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর বাজারে প্রতি কেজি মোটা চাল ৪৮-৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা ৭ দিন আগে ছিল ৪৭-৪৮ টাকা। মাঝারি আকারের চাল প্রতি কেজি সর্বোচ্চ ৫৬ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা গেল সপ্তাহে ৫২ টাকায় বিক্রি হয়। এছাড়া সরু চাল প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৬৪ টাকায়। যা ৭ দিন আগে বিক্রি হয়েছে ৬২ টাকা।

দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে রাজধানীর মালিবাগ কাঁচাবাজারের খালেক রাইস এজেন্সির মালিক ও খুচরা চাল বিক্রেতা দিদার হোসেন যুগান্তরকে বলেন, পাইকারি বাজারে সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। চালের ভরা মৌসুমেও এ দাম মিলাররাই বাড়িয়েছে। যার কারণে খুচরা বাজারে দাম বাড়তি।

কারওয়ান বাজারের পাইকারি চাল বিক্রেতা আল্লাহর দান রাইস এজেন্সির মালিক সিদ্দিকুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, মোকামে সব ধরনের চালের দাম মিলাররা বাড়িয়ে দিয়েছেন। যার কারণে বেশি দরে চাল আনতে হচ্ছে। বিক্রিও করতে হচ্ছে বেশি দামে। তবে চালের দাম কয়েক দিনের মধ্যে কমবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

রাজধানীর খুচরা বাজারে সব ধরনের ভোজ্যতলের দাম আরেক দফা বেড়েছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন বিক্রি হয়েছে ১২৬ টাকায়। যা সাত দিন আগেও ১২২ টাকায় বিক্রি হয়। বোতলজাত সয়াবিনের মধ্যে পাঁচ লিটারের সয়াবিন বিক্রি হয় ৬৮০ টাকা, যা ৭ দিন আগে ৬৭০ টাকায় বিক্রি হয়। এক লিটারের বোতলজাত সয়াবিন বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকা, যা ৭ দিন আগে ১৪৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এছাড়া প্রতি লিটার লুজ পাম অয়েল বিক্রি হয়েছে ১১৪ টাকা। যা ৭ দিন আগে বিক্রি হয়েছে ১১০ টাকা। পাম অয়েল সুপার প্রতি লিটার বিক্রি হয়েছে ১১৮ টাকা, যা ৭ দিন আগে ১১৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

খুচরা বাজারে প্রতি কেজি বড় দানার মসুরের ডাল ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। যা ৭ দিন আগে ৭৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মাঝারি আকারের মসুরের ডাল বিক্রি হয়েছে ৯৫ টাকা। যা গেল সপ্তাহে ছিল ৯০ টাকা। এছাড়া প্রতি কেজি আলু ২৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। যা সাত দিন আগে ২০ টাকা ছিল। প্রতি কেজি দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪৫ টাকা। যা ৭ দিন আগেও ৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি দেশি রসুন ২০ টাকা বেড়ে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমদানি করা আদা বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা। যা ৭ দিন আগে ১৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি জিরা ২০ টাকা বেড়ে ৩৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি লবঙ্গ ১০০ টাকা বেড়ে ১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি এলাচ বিক্রি হয়েছে ২৪০০ টাকা। যা ৭ দিন আগে ২৩০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

বাজারে পণ্য কিনতে এসে ভোক্তারা বলছেন, এমন কোনো পণ্য নেই যে দাম কমেছে, অথচ সব ধরনের পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে মানুষের আয় কমেছে। ফলে বাড়তি দরে পণ্য কিনতে গিয়ে নাভিশ্বাস উঠছে তাদের। ভোক্তারা বলছেন, বাজারে সব ধরনের পণ্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে, তবু কোনো কারণ ছাড়াই দাম বাড়ানো হচ্ছে। সরকারি নজরদারির অভাবে অসাধু ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে বলে মনে করেন তারা।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *