করোনাকালে বাল্যবিবাহ বেড়েছে ৫০ শতাংশ

জাতীয় লীড

স্বদেশবাণী ডেস্ক:  করোনাকালে দেশে বাল্যবিবাহ বেড়েছে ৫০ শতাংশ। ১৩ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে বিয়ে হচ্ছে প্রায় ৪৮ শতাংশ মেয়ের। ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের’ জরিপে উঠে এসেছে এসব তথ্য। এ জন্য স্কুল বন্ধ থাকা, আয় কমে যাওয়া ও নিরাপত্তাহীনতাকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। কোভিড পরিস্থিতিতে বাল্যবিবাহ ঠেকাতে নীতি নির্ধারকদের সুস্পষ্ট ও সমন্বিত পরিকল্পনা নেয়ার তাগিদ বিশেষজ্ঞদের।

করোনাকালের বাংলাদেশ; সংক্রমণ আর মৃত্যুর থাবায় জনজীবনে এসেছে বড় পরিবর্তন। প্রভাব পড়েছে অর্থনীতিতেও। আয় কমে যাওয়াকে হাতিয়ার হিসেবে নিয়ে অনেক অভিভাবক কন্যা সন্তানের তাড়াতাড়ি বিয়ে দিচ্ছেন।

ইউনিসেফ, ইউএনএফপি ও প্ল্যান বাংলাদেশের সহায়তায় ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’ ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ২১টি জেলার ৮৪ উপজেলায় জরিপ চালায় বাল্যবিবাহ নিয়ে। সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ২১ জেলায় ১৩ হাজার ৮৮৬টি বাল্যবিবাহের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বরগুনায় ১ হাজার ৫১২, কুড়িগ্রামে ১ হাজার ২৭২ ও নীলফামারীতে ১ হাজার ২২২টি বাল্যবিবাহ হয়েছে।

১৬ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে ৫০.৬ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয়েছে, ১৩ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে ৪৭.৭ শতাংশ এবং ১.৭ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয়েছে ১০ থেকে ১২ বছর বয়সে।

মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের প্রোগ্রাম কো অর্ডিনেটর অর্পিতা দাস বলেন, স্কুল বন্ধ, বাড়িতে বসে আছে এসব কারণ। এছাড়া ব্যবসায় লোকসান হয়েছে, চাকরি হারিয়েছে- সবগুলো মিলিয়েই বাল্যবিয়ের হার বেড়েছে। প্রায় ৫ হাজার ৯৮ জনের বাল্যবিয়ে হয়েছে কিছু দিন আগে।

করোনায় দীর্ঘসময় স্কুল বন্ধ থাকা ও আয় কমে যাওয়াকে বাল্যবিবাহ বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, করোনার আগে বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে যে রকম প্রশাসনিক এবং সামাজিক উদ্যোগ ছিল, সে উদ্যোগে নিশ্চিয়ই কিছুটা ভাটা পড়েছে। মেয়েরা ঘরে আছে, স্কুলে যেতে পারছে না। বেশির ভাগ পরিবারে তাদের কর্মসংস্থান হারিয়েছে, তারা অসম্ভব দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করছে।

নীতি নির্ধারণী পর্যায় থেকে জরুরি পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে বাল্যবিবাহ নিয়ে সংকট আরও ঘণীভূত হবে বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

মালেকা বানু আরও বলেন, বাংলাদেশ নানাভাবে সামনের দিকে অগ্রসর হবে। সেখানে নারীর ক্ষমতায়ন, নারীর উন্নয়নে বাংলাদেশ অনেক অনেক দিক থেকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। সেই জায়গা থেকে আমাদের পেছনের দিকে চলে যাওয়ার আশঙ্কা বিরাজ করছে।

বাল্যবিবাহ রোধে সচেতনতার পাশাপাশি জরুরি দৃষ্টিভঙ্গি বদলানো।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *