সারাদেশে কঠোরভাবেই লকডাউন চলছে

জাতীয় লীড

স্বদেশবাণী ডেস্ক: করোনাভাইরাসের উচ্চ সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার ঘোষিত সপ্তাহব্যাপী কঠোর লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে আজ। বিধি-নিষেধ বাস্তবায়নে আজ ভোর থেকেই রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে ব্যাপক তৎপর রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। জেলাসমূহের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে যানবাহনে তল্লাশি ও পথচারীদের বাইরে বের হওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করছে পুলিশ। অহেতুক ঘোরাঘুরির কারণে কোথাও-কোথাও জরিমানা করা হচ্ছে।

দেশের বিভিন্ন জেলা সংবাদদাতারা জানান-
ময়মনসিংহ : 
সকাল থেকেই নগরীতে দু’একটি অটোরিকশা ছাড়া তেমন কোন যান চলাচল চোখে পড়েনি। নগরীর বিভিন্ন মোড়ে-মোড়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য ছাড়াও পুলিশ, আনসার এবং আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের টহল রয়েছে। বিশেষ কারণ ছাড়া সাধারণ মানুষ বের হলে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দিচ্ছে এবং কারণ দর্শাতে না পারলে জরিমানা করে বাসায় পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে।

নারায়ণগঞ্জ : 
জেলায় সকাল থেকে সব ধরনের যান্ত্রিক যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। কিছু পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ডভ্যান চললেও তাদেরও বিভিন্ন মোড়ে-মোড়ে ম্যাজিস্ট্রেট এর কাছে জবাবদিহি করতে হয়েছে। সকাল ৮টায় চাষাড়া মোড়ে এম্বুলেন্সও চেক করে ছাড়তে দেখা যায়। বেশ কয়েকটি বাসকে এ মোড়ে নামিয়ে বাস ঘুরিয়ে চলে যেতে বাধ্য করে জেলা প্রশাসকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। জরুরি পরিষেবা ছাড়া আর কোনো গাড়ি চলতে দেওয়া হচ্ছে না। জরুরি পরিষেবার অযুহাতে অন্য কেউ যাতে না বের হতে পারে সেটিও লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।

লক্ষ্মীপুর : 
যানজটের শহর লক্ষ্মীপুর এখন জনশুন্য হয়ে অনেকটাই ফাঁকা রয়েছে। জরুরী পরিষেবায় নিয়োজিত কিছু যানবাহন ও দোকান ছাড়া সরকারি-বেসরকারি অফিস আদালত, বিপনী বিতান, গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। সকাল থেকে লকডাউন কার্যকর করতে মাঠে কাজ করছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। জেলার গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে পুলিশি তৎপরতা দেখা গেছে। স্থানীয়দের জরুরী প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হতে নিষেধ করা হচ্ছে। নির্দেশনা অমান্য করলে পুলিশি জেরার মুখে পড়তে হচ্ছে অনেককে।

রাঙ্গামাটি : 
সকাল ৬টা থেকে সকল দোকানপাট ও শপিং মল বন্ধ রয়েছে। তবে মুদিদোকান, কাঁচা বাজারসহ ওষুধের দোকান খোলা রয়েছে। রিকশা বিহীন এই শহরে অটোরিকশা বন্ধ থাকায় কার্যত সরকারের বিধি নিষেধ সফল ভাবে পালিত হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের সাথে সেনাবাহিনী-বিজিবি-পুলিশ-র‌্যাব ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা লকডাউন পালন নিশ্চিত করতে সহযোগিতা করছে।

কুমিল্লা (দক্ষিণ) : 
জেলায় স্বাস্থ্য বিধি নিশ্চিতে জেলা প্রশাসনের ৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে সকাল ৯ থেকে কাজ করছেন। নগরীর বিভিন্ন পয়েন্ট একযোগে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। এ সময় বিনা কারণে সড়কে ঘোরাফেরার কারণে কয়েক জন যুবককে আটক করা হয়েছে।

নড়াইল : 
জেলায় সকাল থেকে বাস, ইজিবাইক, ভ্যানসহ যানবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে তবে নিত্য প্রয়োজনীয় এবং মাছসহ কাচা বাজার খোলা রয়েছে। শহরের গুরুত্ব পূর্ণস্থানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে, পাশাপাশি তল্লাশিও চালানো হচ্ছে। পুলিশ টহলের পাশাপাশি শহরে সোনাবাহিনীর সদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে।

নওগাঁ : 
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ব্যাপকতা রোধে দেশব্যাপী সর্বাত্মক লকডাউনের দ্বিতীয় দিন সকাল ৬টা থেকে নওগাঁয় সর্বাত্মক লকডাউন পালিত হচ্ছে। শহরসহ গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন হাট বাজার দু’একটি ওষুধের দোকান ছাড়া সকল প্রকার দোকান পাট বন্ধ রয়েছে। বাস, ট্রাক, পিক-আপ, রিকশা ভ্যান, বেবীট্যাক্সী, টমটম, সিএনজিসহ সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড় সমূহে পুলিশ এবং জেলা প্রশাসনের কঠোর সতর্ক নজরদারি লক্ষ্য করা গেছে।

বান্দরবান : 
পার্বত্য এ জেলায়ও পালিত হচ্ছে লকডাউন। সকাল থেকে পণ্যবাহী যান ও রিকশা  ছাড়া সকল ধরনের যানবাহন বন্ধ আছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকান পাট ছাড়া বন্ধ আছে শপিংমল।  বান্দরবানের সড়কগুলোতে টহল দিচ্ছে সেনবাহিনী ও পুলিশ। এছাড়াও অলিতে গলিতে অভিযান পরিচালনা করছে ভ্রাম্যমাণ আদালতের টিম।

ভোলা : 
জেলায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করার দায়ে বেশ কয়েকজনকে গতকাল জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী মেজিস্ট্রেটরা অভিযানে নেতৃত্ব দেন। মানুষকে ঘরে থাকার জন্য গত কয়েক দিন ধরেই তারা সচেতন করতে কাজ করে যাচ্ছেন। শহরের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের চেকপোষ্ট বসানো হয়েছে। অতিপ্রয়োজনীয় যানবাহন, রিক্সা ও পণ্যবাহী গাড়ি ছাড়া সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। একইসাথে বন্ধ রয়েছে দোকান পাট, মার্কেট ও বিপনিবিতান।

টাঙ্গাইল : 
জেলায় লকডাউন কঠোরভাবে বাস্তবায়নে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ও আনসারসহ সেনাবাহিনী মাঠে রয়েছে। মাস্ক পরিধানসহ সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হচ্ছে, জরুরি কাজ ছাড়া বের হওয়া যাচ্ছে না। লকডাউন সফল করতে সকল প্রকার ব্যবস্থা সেনাবাহিনী নিচ্ছে। এদিকে লকডাউন কার্যকর করতে সেনাবাহিনী, জেলা-উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগ যৌথভাবে কাজ করছে।

জয়পুরহাট  : 
করোনাভাইরাস সংক্রমণের উর্ধগতি ঠেকাতে সারাদেশের ন্যায় জয়পুরহাটেও সরকারের ঘোষিত কঠোর লকডাউন ও বিধিনিষেধ চলছে। লকডাউন পুরোপুরি ভাবে পালনের জন্য পুলিশের পাশাপাশি সেনা সদস্যরাও কাজ করছে।

দিনাজপুর : 
জেলা শহরে করোনা সংক্রামণ বৃদ্ধি পাওয়ায় শহরের সরকারি কলেজ মোড়, উপশহর, মুন্সিপাড়া, চাউলিয়াপট্টি শহীদ মিনার মোড়, চাউলিয়াপট্টি বেড়ীবাধ মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে যানবাহন ও পথচারীর চলাচল নিয়ন্ত্রণে রাস্তার উপর বাঁশ বেধে ব্যারিকেট দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *