স্বদেশ বাণী ডেস্ক: চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ইছাখালি এলাকার মিনু দাশ, নুর উদ্দিন ও পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের জহির আহমদ বেঁচে থেকেও আজ মৃত! নির্বাচন কমিশনের সার্ভারে মৃতদের তালিকায় তাদের নাম।
অন্যদিকে চন্দ্রঘোনা-কদমতলী ইউনিয়নের কদমতলী গ্রামের তন্ময় দাশের ব্যক্তিগত তথ্যে মেডন্যাস (পাগল) লেখা হয়েছে।
একাধিকবার তারা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে যোগাযোগ করেও কোনো সুরাহা করতে পারেননি।
২০০৮ সালে জাতীয় পরিচয়পত্র পেয়েছিলেন মিনু দাশ, নুর উদ্দিন ও জহির আহমদ। পরবর্তী সময়ে ভোটার হালনাগাদে ভুলবশত মৃত ভোটারদের তালিকায় চলে আসে তাদের নাম। দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা নির্বাচন অফিসে ঘুরেও জীবিত প্রমাণ করতে পারেননি নিজেদের। বিভিন্ন নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত তারা।
জাতীয় পরিচয়পত্র প্রয়োজন হয় এমন অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ আটকে আছে তাদের। এমনকি এই একটি ভুলের কারণে এই তিনজন করোনাভাইরাসের টিকা পর্যন্ত নিতে পারছেন না।
মিনু দাশ আক্ষেপ করে বলেন, নির্বাচন কমিশনের সার্ভারে তার নাম মৃতদের তালিকায়। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করতে পারছেন না। করোনার টিকা নিতে পারছেন না। উপজেলা নির্বাচন অফিসে সংশোধনের জন্য আবেদন করেও এখনো সংশোধন করতে পারেননি তিনি।
নুর উদ্দিন বলেন, উপজেলা নির্বাচন অফিসে সংশোধনের জন্য দুইবার আবেদন করেও এখনো পর্যন্ত কোনো কাজ হয়নি। আমি সমাজের কাছে জীবিত থেকেও কাগজে-কলমে একজন মৃত মানুষ।
অন্যদিকে চন্দ্রঘোনা-কদমতলী ইউনিয়নের কদমতলী গ্রামের কলেজ তরুণ তন্ময় দাশ কয়েক মাস আগে জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য আবেদন করেন। প্রাথমিকভাবে নির্বাচন কমিশনের সার্ভারে তার ব্যক্তিগত তথ্য ও এনআইডি নম্বর দেয়া হয়। তিনি করোনার টিকা নিবন্ধনের জন্য সুরক্ষা অ্যাপে আবেদন করতে গেলে ব্যক্তিগত তথ্যের স্ট্যাটাসে তাকে মেডন্যাস (উন্মাদ) লেখা হয়।
তন্ময় দাশের বাবা তপন দাশ অভিযোগ করে বলেন, তার ছেলে সুস্থ সবল। লেখাপড়াও ভালো তার কোনো মানসিক সমস্যা নেই। নির্বাচন অফিসের ভুলের কারণে এটি হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
উপজেলা নির্বাচন অফিসের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর নুর মোহাম্মদ বলেন, তন্ময় দাশের বিষয়টি বেখেয়ালে হয়েছে। সংশোধনের সুযোগ আছে।
এদিকে স্থানীয় ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, নির্বাচন অফিসের কর্মচারীরা জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য আবেদন ও সংশোধনসহ নানা কাজ টাকা ছাড়া করেন না। যারা টাকা দেন তাদের কাজ আগে করা করা হয়। অন্যদের ফাইলগুলো ফেলে রাখা হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন অফিসার বায়জিদ আলম বলেন, অফিসের কর্মচারীরা টাকা নেওয়ার বিষয়টি সঠিক নয়। সার্ভারে মৃত তালিকায় যাদের নাম রয়েছে সংশোধনের জন্য প্রক্রিয়া চলছে। তন্ময় দাশের ডাটা সংশোধনের জন্য সিভিল সার্জনের সনদ প্রয়োজন হবে।