স্বদেশ বাণী ডেস্ক: কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গুণবতী বাজারের ব্যবসায়ী মীর হোসেন সওদাগর (৬৮) ও সুধীর বাবু (৭০)। দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব তাদের। মঙ্গলবার রাতে বার্ধক্যজনিত রোগে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান মীর হোসেন।
বুধবার সকালে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। অবাক করা ব্যাপার হলো, শেষ যাত্রায়ও ধর্ম আটকাতে পারেনি মীর হোসেন ও সুধীর বাবুর বন্ধুত্বের বন্ধন। বন্ধুর চিরবিদায় বেলায়ও সঙ্গ দিয়েছেন বাল্যবন্ধু সুধীর।
বুধবার সকালে জানাজা চলাকালীন সুধীর বাবু পেছনে গাছের গুঁড়িতে বসে কাঁদতে থাকেন বন্ধুর জন্য। জানাজায় অংশগ্রহণ করতে না পারলেও বন্ধুর প্রতি এমন অকৃত্রিম ভালোবাসা সবার হৃদয়কে স্পর্শ করে।
মুহূর্তের মধ্যে বন্ধু মীরের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শনের এ ছবি ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে। এ ঘটনায় সারা দেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
সত্যিকারের বন্ধুত্বের বন্ধন কতটা শক্তিশালী হতে পারে তা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে কুমিল্লা ও দেশজুড়ে।
ছবিটি পোস্ট করে একজন ফেসবুকে লিখেছেন- আজ সেই বন্ধুর মৃত্যুর পর সুধীর বাবু জানাজার পেছনে উপস্থিত হয়ে চোখের জল ঝরাচ্ছেন। সত্যিকারের বন্ধুত্ব আসলেই এমন হয়। যে বন্ধুত্ব জাত দেখে না, ধর্ম দেখে না, ধনী-গরিবের ভেদাভেদ চিনে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গুণবতী বাজারের ব্যবসায়ী মীর হোসেন সওদাগর ও সুধীর বাবু ছেলেবেলার বন্ধু। মীর হোসেন সওদাগর গুণবতী বাজারে বেশ কয়েক বছর মুদি দোকানের ব্যবসা করতেন। সুধীর বাবুও ব্যবসা করতেন গুণবতী বাজারে। সেই কারণে তারা থাকতেন একে অপরের কাছাকাছি।
গুণবতী বাজারের ব্যবসায়ী আবদুল আজিজ ও রিপন মিয়া জানান, মীর হোসেন সওদাগর মুদি ব্যবসা করতেন। বুধবার সকালে গুণবতী গ্রামে তার বাড়ির কাছেই জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। তিনি ওই ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সভাপতি ছিলেন। মীর হোসেন খুব ভালো মানুষ হওয়ায় তাকে শ্রদ্ধা করতেন এলাকার মানুষ। তার চার ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। সুধীর বাবু তার ছেলেবেলার বন্ধু। তাইতো শেষ বিদায়েও সঙ্গ দেন বন্ধু।