শিক্ষার্থী এখন কাঁকড়া শিকারি, বিদ্যালয়ে ফেরানোই এখন চ্যালেঞ্জ

জাতীয়

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: করোনাকালে স্কুল বন্ধ থাকায় চরফ্যাশন উপজেলার বিছিন্ন দ্বীপগুলোর অনেক শিক্ষার্থী জড়িয়েছে কাঁকড়া শিকারের কাজে। এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর এসব শিক্ষার্থী আর স্কুলে যাচ্ছে না। গত কয়েক দিন ধরে স্কুল চললেও মিলছে না শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি।

পৌরসভাসহ উপজেলার ২১ ইউনিয়নে প্রাথমিক পযার্য়ে মোট শিক্ষার্থী রয়েছে ৬২ হাজার ৮০৬ জন। এসব শিক্ষার্থীর ৩০-৪০ শতাংশই বিছিন্ন দ্বীপচরগুলোর।

চরফ্যাশন উপজেলার বিছিন্ন দ্বীপ কুকরির বাবুগঞ্জ গ্রামের জেলে মোশাররফ গাজীর ছেলে আজিজুল ও তার ভাই। স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র তারা। করোনা সংকটে দুই ভাই পড়াশোনা বাদ দিয়ে উপার্জনে নামে। তারা এখন পুরোদমে কাঁকড়া শিকারি। সেই ভোরে বের হয়; ফিরতে বিকাল।

তাদের সপ্তাহে একদিনও ছুটি নেই কাজের। জীবিকার টানে বই ছেড়েছেন তারা।  অথচ বছরখানেক আগেও এই কিশোরের দল বইখাতা নিয়ে পড়তে যেত।

সকাল থেকে রাত অবধি খেটে পরিবারের আহার নিশ্চিত করার লক্ষ্য তাদের। তাই স্কুলে যাওয়া নিয়েও তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। পরিবারের আয়ের পথ না থাকায় তারা বাধ্য হয়েই কাঁকড়া শিকারের কাজে নেমেছেন তারা। মহামারি করোনার কারণে দীর্ঘ দেড় বছরের বেশি সময় বন্ধ থাকায় এমন অনেক শিক্ষার্থী হাল ধরেছে সংসারের।

কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় এখানে থাকলেও লেখাপড়ার মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। শিক্ষক সংকটসহ লেখাপড়ার সুষ্ঠু পরিবেশ নেই সেগুলোতে। এ ছাড়া সংসারের টানাটানির কারণে স্কুল পড়ুয়া কিশোরদের যুক্ত হতে হয় কাজে। তার ওপর এই করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থাকায় নিম্নবিত্ত পরিবারের অনেক শিক্ষার্থী পারিবারিক প্রয়োজনে নামে রোজগারের পথে।  কোমলমতি এসব শিশুকে বিদ্যালয়ে ফেরানোটাই এখন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁডিয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর ৭৮ থেকে ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী উপস্থিত হচ্ছে।

বাকিদের উপস্থিত না হওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, যেসব শিক্ষার্থীর শরীরের তাপমাত্রা বেশি তাদের স্কুলে আসতে নিষেধ করা হচ্ছে। এ ছাড়া অসুস্থতাসহ আত্মীয়দের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার কারণে অনেকেই আসছে না। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সবাই স্কুলমুখী হবে বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *