ইউএনওর নির্দেশে ফিরিয়ে নেয়া হলো সংবর্ধনার ফুল

জাতীয়

স্বদেশবাণী ডেস্ক: কুড়িগ্রামের চিলমারীতে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠিত মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এক শহিদ মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর হাতে ফুল দিয়ে তা ইউএনওর নির্দেশে কেড়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

ফলে ওই শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী অপমানিত বোধ করে বিলম্ব না করেই অনুষ্ঠান স্থল ত্যাগ করেছেন। এ ঘটনাকে ঘিরে উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও সচেতন মহলের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে,বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত থানাহাট এ ইউ পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে কেন্দ্রীয়ভাবে অনুষ্ঠিত বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে উপজেলার সব বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের শুরুতে মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের ফুলেল শুভেচ্ছাপর্বে বজরা তবকপুর ফৈলামারী এলাকার শহিদ মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলীর স্ত্রী রেজিয়া বেওয়ার হাতেও ফুল দেয়া হয়।

ফুল দেওয়ার কিছুক্ষণ পরেই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুবুর রহমান উপস্থিত উপজেলা পরিষদ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আসমা বেগমকে ওই ফুলটি ফেরত নিতে বলেন। এ সময় বাধ্য হয়ে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ওই শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর হাত থেকে ফুলটি ফেরত নেন।

জনসম্মুখে ফুল ফেরত নেয়ার ঘটনায় শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী রেজিয়া বেওয়া অপমানিত বোধ করে মাঠেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এবং অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন। এ ঘটনাকে ঘিরে উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও সচেতন মহলের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার থানাহাট ইউনিয়নের কিসামত বানু এলাকার মৃত এনাত উল্লার ছেলে রহমত আলী মুক্তিযুদ্ধে গিয়ে শহিদ হন। দেশ স্বাধীনের পর একমাত্র সন্তান এরশাদুল আলমকে নিয়ে স্ত্রী রেজিয়া বেওয়া পিতার বাড়ি একই ইউনিয়নের বজরা তবকপুর ফৈলামারী এলাকায় চলে যান। পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুমোদিত বিভিন্ন তালিকায় রহমত আলীর নাম শহিদ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় শহিদ পরিবারটি নিয়মিত বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে মাসিক ৩০ হাজার করে ভাতাসহ সব সুযোগ সুবিধা ভোগ করে আসছে।

শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী রেজিয়া বেওয়া জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দাওয়াত পেয়ে তিনি অনুষ্ঠানে যান। অনুষ্ঠানের শুরুতেই ফুলেল শুভেচ্ছা পর্বে তাকেও ফুল দিয়ে ফুলটি কেড়ে নেয়া হয়।

শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধার ছেলে এরশাদুল আলম (৪৮) বলেন, সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আমার মাকে অপমানিত করায় আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

উপজেলা পরিষদ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আসমা বেগম এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে জানান, ওই নারীকে ফুলটি দেয়ার পর ইউএনও সাহেব তা ফেরত নেয়ার জন্য বার বার বলায় আমি বাধ্য হয়ে ফুলটি ফেরত নিয়েছি।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আব্দুর রহিম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ওই শহিদ মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর কাছ থেকে ফুলটি ফেরত নেয়া হয়েছে মূলত উপহারের সঙ্গে দেওয়ার জন্য।

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *