গুলিতে চারজন নিহত, ম্যাজিস্ট্রেটসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা খারিজ

জাতীয় বিশেষ সংবাদ রাজশাহী লীড

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: বগুড়ার গাবতলীর বালিয়াদীঘি ইউনিয়নের কালাইহাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে বিজিবি সদস্যদের নির্বিচার গুলিতে চার গ্রামবাসী নিহত হওয়ার ঘটনায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ আটজনের বিরুদ্ধে মামলা খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। কালাইহাটা গ্রামে নিহত আলমগীর হোসেনের আত্মীয় আশাদুল সাকিদার বুধবার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আসমা মাহমুদের আদালতে এ মামলা করেছিলেন।

বৃহস্পতিবার আশাদুল সাকিদার জানান, তারা উচ্চ আদালতে যাবেন।

বিবাদীরা হলেন- গত ৫ জানুয়ারি গাবতলীর বালিয়াদীঘি ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসিফ আহমেদ, কালাইহাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাকির হোসেন, বিজিবির হাবিলদার শহিদুল ইসলাম, নায়েক ইসমাইল হোসেন, ল্যান্স নায়েক বুলবুল হোসেন, মো. মনিরুজ্জামান, নির্বাচনে পরাজিত বিএনপির স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী (ঘোড়া মার্কা) মাহবুবুর রহমান, তার সহযোগী এনামুল হক প্রমুখ।

মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে- গাবতলীর বালিয়াদীঘি ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কালাইহাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে গুলিতে মেম্বর প্রার্থীর এজেন্ট কুলসুম আকতার, কৃষক আবদুর রশিদ, রিকশাচালক আলমগীর হোসেন এবং শাক বিক্রেতা খোরশেদ আকন্দ মারা যান। এছাড়া ছহির উদ্দিন, আবদুল্লাহ, মেহেদী হাসান ও রেজাউল আহত হন।

শুনানি শেষে আদালতের বিচারক আসমা মাহমুদ মামলাটি খারিজ করে দেন। মামলার বাদী নিহত রিকশা চালক আলমগীর হোসেনের চাচাতো ভাই আশাদুল সাকিদার জানান, তিনি উচ্চ আদালতে মামলা করবেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, কালাইহাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দিনভর সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ শেষে ভোট গণনা করতে অস্বীকৃতি জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসিফ আহমেদ। শত শত গ্রামবাসী ব্যালট বাক্স উপজেলা সদরে নিতে বাধা দিলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নারী-পুরুষদের নির্বিচারে লাঠিপেটা করেন। এ সময় গ্রামবাসীরা ক্ষিপ্ত হয়ে কেন্দ্রে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করেন। প্রশাসনের কয়েকটি গাড়িও ভাংচুর করা হয়। তখন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে বিজিবি সদস্যরা নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করেন। এতে চারজন নিহত হন।

প্রশাসন থেকে হতাহতের বিষয়ে তথ্য না দেওয়ায় গভীর রাতে গণমাধ্যম কর্মী ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন বাড়ি বাড়ি গিয়ে গুলিতে নিহত চারজনের লাশের সন্ধান পান। পরে পুলিশ লাশগুলো উদ্ধার করে বগুড়া শজিমেক হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। এলাকার মুক্তিযোদ্ধাসহ সর্বস্তরের গ্রামবাসী এ হামলার জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আসিফ আহমেদকে দায়ী করে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার একাধিক কর্মকর্তা এ ঘটনার জন্য ম্যাজিস্ট্রেটকে দায়ী করেন। অনেকে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পরিবর্তন ও পুলিশি তদন্ত রিপোর্ট ম্যাজিস্ট্রেটের পক্ষে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন।

এদিকে ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার জাকির হোসেন গাবতলী থানায় অজ্ঞাত ৩০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

বৃহস্পতিবার বিকালে গাবতলী থানার ওসি জিয়া লতিফুল ইসলাম জানান, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। কাউকে হয়রানি বা গ্রেফতার করা হয়নি।

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *