তাড়াহুড়ো’ করে ইসি আইন আরেকটি পাতানো নির্বাচনের ‘নীল নকশা’: বিএনপি

জাতীয় বিশেষ সংবাদ লীড

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: ইসি গঠনে আইন নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গোপনীয়তার সঙ্গে তাড়াহুড়ো করে নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়ন আরেকটি পাতানো নির্বাচনের নীল নকশা মাত্র। বিএনপি মনে করে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কোনো নির্বাচন কমিশনেই অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সফল হবে না। যদি না নির্বাচনকালীন সময়ে নিরপেক্ষ তত্ত¡াবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

মঙ্গলবার বিকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সোমবার অনুষ্ঠিত জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভার সিদ্ধান্ত জানাতে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

স্থায়ী কমিটির সভা নিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, সংসদে নির্বাচন কমিশন বিল ২০২২ উত্থাপন বিষয়ে আলোচনা হয়। বিএনপি মনে করে, যেহেতু এই সংসদ জনগণের ভোটে বৈধভাবে নির্বাচিত নয়, তাই এই সংসদের কোনো নৈতিক এখতিয়ার নেই কোনো আইন প্রণয়নের। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের একতরফা সাজানো ভোটারবিহীন ও মধ্যরাতের ভোট ডাকাতির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সে সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

তিনি বলেন, বর্তমান অবৈধ সরকারের পদত্যাগ করতে হবে। নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। সব রাজনৈতিক দলের মতামতের ভিত্তিতে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক গ্রহণযোগ্য নির্বাচন বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার একমাত্র পথ। এর কোনো বিকল্প নেই। এই লক্ষে সব রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ব্যক্তি ও জনগণের ঐক্য গড়ে তুলে দুর্বার গণআন্দোলনের মাধ্যমে এই পরিবর্তন আনতে হবে। সভায় বিএনপি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার জন্য সবার প্রতি আহŸান জানায়।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে ১২টি শীর্ষ মানবাধিকার সংগঠন জাতিসংঘ মিশনে র‌্যাবের প্রতি নিষেধাজ্ঞার দাবি জানিয়ে চিঠি দিয়েছে। সভা মনে করে আওয়ামী লীগ সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য হত্যা, খুন, গুম, বিচারবহির্ভুত হত্যাকাÐের জন্য র‌্যাবসহ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবহার করছে। বাংলাদেশকে ভয়াবহ ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। যার সুদূরপ্রসারী নেতিবাচক প্রভাব বাংলাদেশের নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা, অর্থনীতিতে পড়বে বলে সভা মনে করে। এই পরিস্থিতি সৃষ্টির সব দায়-দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে।

মির্জা ফখরুল জানান, সভায় করোনা পরিস্থিতি এবং টিকা প্রদানের বিষয়ে সঠিক চিত্র জনগণের সামনে প্রকাশ করার আহŸান জানানো হয়। সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে ছাত্রলীগ ও পুলিশের হামলার ঘটনার নিন্দা জানানো হয়। পরবর্তীতে ন্যায়সঙ্গত দাবিতে শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন ও সব প্রকার আন্দোলনের প্রতি নৈতিক সমর্থন জানানো হয়। অবিলম্বে ভিসিসহ দায়ী সব সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার অপসারণ এবং নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে ছাত্রলীগ ও পুলিশের দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানায় স্থায়ী কমিটি।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল সভায় আরও অংশ নেন- ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও সেলিমা রহমান।

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *