এবার গ্যাসের দাম ১১৬ ভাগ বাড়ানোর প্রস্তাব

জাতীয় বিশেষ সংবাদ লীড

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: প্রাকৃতিক গ্যাসের ভোক্তা পর্যায়ে দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের গণশুনানি শুরু হয়েছে। এবার বিতরণ কোম্পানিগুলো গ্যাসের দাম শিল্প কারখানায় ১১৭ ভাগ এবং বাসাবাড়িতে ১১৬ ভাগ বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে। সোমবার (২১ মার্চ) রাজধানীর নিউ ইস্কাটন রোডে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (বিয়াম) ফাউন্ডেশনের শহীদ এ কে এম শামসুল হক খান মেমোরিয়াল হলে চার দিনব্যাপী এই গণশুনানির আয়োজন করা হয়।

গণশুনানি গ্রহণ করছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। কমিশনের চেয়ারম্যান আব্দুল জলিলের নেতৃত্বে শুনানি গ্রহণে উপস্থিত আছেন সদস্য মকবুল ই ইলাহী চৌধুরী, বজলুর রহমান, মোহাম্মদ আবু ফারুক ও মো. কামরুজ্জামান।

চার দিনব্যাপী এই শুনানির আজ প্রথম দিন। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (পেট্রোবাংলা) তাদের প্রস্তাবনা উত্থাপন করে। পেট্রোবাংলার পক্ষ থেকে দাম বৃদ্ধির প্রস্তাবের যৌক্তিকতা তুলে ধরা হয়। এরপর কমিশন তাদের মূল্যায়ন রিপোর্ট পেশ করবে। কমিশনের মূল্যায়ন রিপোর্ট শেষে ইতোমধ্যে যারা নিবন্ধন করেছেন তারা আলোচনায় অংশ নেন। দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেড (জিটিসিএল) তাদের প্রস্তাবনা উত্থাপন করবে।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে প্রধানত দুটি উৎস থেকে। দেশীয় গ্যাস ফিল্ড থেকে উত্তোলন এবং বিদেশ থেকে আমদানি। এরমধ্যে বিদেশ থেকে আমদানি দুই ধরনের চুক্তির আওতায় করা হচ্ছে। জিটুজি ভিত্তিতে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তির আওতায় আর স্পট মার্কেট (দরপত্রের মাধ্যমে বর্তমান দর) থেকে। তবে দেশীয় উৎসের গ্যাসের দাম বাড়েনি, জিটুজি ভিত্তিতে আনা গ্যাসের দামও বাড়েনি। দাম বেড়েছে শুধু স্পর্ট মার্কেট থেকে আনা গ্যাসের। যার পরিমাণ সামান্যই।

ক্যাবের জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বলেন, স্পট মার্কেট থেকে আনা গ্যাসের দাম বেড়েছে ৫-৬ শতাংশ। এ জন্য সব গ্যাসের দাম ১১৭ শতাংশ বাড়াতে হয় এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়! তারা গোঁজামিল দিয়ে হিসাব দেখাচ্ছে, এসব হিসাব বাস্তবসম্মত নয়। প্রয়োজন হলে ওই পরিমাণ এলএনজি আমদানি না করার পক্ষে আমরা। তবুও দাম বাড়ানো উচিত হবে না।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুল জলিল তার স্বাগত বক্তব্যে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং বিশ্ব প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, দাম বৃদ্ধির কারণে মানুষের জীবন দুর্বিসহ হয়ে পড়েছে। বিতরণ কোম্পানিগুলো শিল্প কারখানায় ১১৭ ভাগ এবং বাসাবাড়িতে ১১৬ ভাগ গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করছে। তবে কমিশন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার ক্ষেত্রে চুলচেরা বিশ্লেষণ করবে। এবার মূল্য নির্ধারণে অবিবেচক হবে না কমিশন।

তিনি বলেন, প্রাকৃতিক গ্যাসের মূল্য নির্ধারণে গণশুনানি শুরু হয়েছে। আগামী চারদিন শুনানি চলবে। গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলো তাদের প্রস্তাবনা উত্থাপন করবে। আমরা শুনব। আমাদের বিচারক টিম থাকবে। চুলচেরা বিশ্লেষণের পরই আমরা সিদ্ধান্ত নেব। আমরা অমানবিক হব না।

গণশুনানিতে বিইআরসি, পেট্রোবাংলা ও জিটিসিএলের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং বিইআরসির আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত আছেন।

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *