দ্রুত ক্ষমতা হস্তান্তর না করলে সরকারের পরিণতি ভয়াবহ হবে: মির্জা ফখরুল

জাতীয়

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: দ্রুত নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না করলে সরকারের পরিণতি ভয়াবহ হবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, আমরা শেখ হাসিনার (প্রধানমন্ত্রী) কানে যে কথা পৌঁছিয়ে দিতে চাই যে, আপনার অবৈধ সরকারের দিন শেষ, পদত্যাগ করুন। দ্রæত নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। অন্যথায় পালাবারও পথ খুঁজে পাবেন না। সব স্বৈরাচারী, ফ্যাসিবাদীর যে পরিণতি হয়েছে আপনাদেরও সেই একই পরিণতি হবে।

শনিবার বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে স্বাধীনতার র‌্যালি পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত র‌্যালিটি নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ট্রাকের ওপর অস্থায়ী মঞ্চ করে এই সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়।

জিয়াউর রহমানসহ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, সারাদেশের মানুষ ৫০ বছর পরে এই আক্ষেপ করছে যে, একটা স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনলাম কী পেয়েছি আমরা? আজকে কথা বলার স্বাধীনতা নেই, নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করবার স্বাধীনতা নেই। মানুষের গণতান্ত্রিক কোনো অধিকার নেই। অর্থনীতি ধবংসের পথে চলে গেছে, চাল-ডাল-তেল-লবন সব কিছুর দাম এমনভাবে বেড়ে গেছে যে, সাধারণ মানুষ তা কিনতে পারে না। জ্বালানি তেলের দাম হু হু করে বাড়ছে। আবার নাকি গ্যাসের দাম নতুন করে বাড়াবে!

দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক রাখা হয়েছে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে রুখে দাঁড়াতে হবে। গণতন্ত্র ফিরে পেতে হলে, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হলে, আমাদের নেতা তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনতে হলে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সমস্ত জাতি ও রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করে এই ভয়াবহ দানবীয় যে সরকারকে পরাজিত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠান করতে হবে।

২৫ মিনিট সমাবেশের পর র‌্যালি শুরু হয়। দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে শুরু হয়ে বিজয় নগর ও তোপখানা রোড হয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয় র্যালিটি।

এর আগে বিকাল পৌনে চারটার দিকে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাধীনতা র‌্যালির উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

র‌্যালিকে কেন্দ্র করে দুপুর ১২টা থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড থেকে নেতা-কর্মীরা খÐ-খÐ মিছিল নিয়ে নয়াপল্টনে জড়ো হন। তাদের হাতে ছিল জাতীয় পতাকার পাশাপাশি জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড। ঢোলসহ বিভিন্ন রকমের বাদ্যযন্ত্র, পুরনো ঢাকার ঘোড়া-গাড়ি, মুক্তিযুদ্ধের সময়ে মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বে নানা দৃশ্য প্রদর্শন, লাল- সবুজ-হলুদ ক্যাপ পরে নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।

স্বাধীনতার র‌্যালি দেখতে ফুটপাতের দুই পাশে মানুষজনও ছিলো ব্যাপক। করতালি দিয়ে র্যালিকে শুভেচ্ছা জানাতে দেখা যায় তাদের।

র‌্যালি শুরুর দুই ঘন্টা আগে থেকেই ফকিরেরপুল থেকে কাকরাইলের নাইটেঙ্গল রেঁস্তোরা মোড় পর্যন্ত তিল পরিমাণ ঠাঁই ছিল না। হাজার হাজার নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে র্যালি জনসমাবেশে রুপ নেয়। র্যালির অগ্রভাগ যখন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে তখন শেষভাগ কাকরাইলের নাইটেঙ্গল মোড় অতিক্রম করেছিল।

বিএনপির র‌্যালি উপলক্ষে দুপুর ১টা থেকে নয়াপল্টনের সড়কে যান চালাচল বন্ধ করে দেয় পুলিশ। এজন্য মতিঝিল, কাকরাইল, শাহজাহানপুর, শান্তিনগরসহ বিভিন্ন সড়কে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ও এর আশপাশ এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

র‌্যালিতে পায়ে হেঁটে অংশ নেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, কেন্দ্রীয় নেতা আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, এজেডএম জাহিদ হোসেন, ব্যারিষ্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, শ্যামা ওবায়েদ, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কামরুজ্জামান রতন, নাজিম উদ্দিন আলম, মীর সরফত আলী সপু, এবিএম মোশাররফ হোসেন, আমিরুল ইসলাম খান আলীম, শামীমুর রহমান শামীম, সেলিমুজ্জামান সেলিম, আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, রাজিব আহসান, আকরামুল হাসান,ঢাকা মহানগর উত্তরের আমিনুল হক, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সাদেক আহমেদ খান, সাইফুল আলম নিরব, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, মোস্তাফিজুর রহমান, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, আফরোজা আব্বাস, সুলতানা আহমেদ, হেলেন জেরিন খান, হাসান জাফির তুহিন, শহিদুল ইসলাম বাবুল, আবুল কালাম আজাদ, রফিকুল ইসলাম মাহতাব,শাহ নেসারুল হক, নজরুল ইসলাম তালুকদার, ফজলুর রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল প্রমূখ নেতারা।

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *