চবি ছাত্রীকে নিপীড়ন: গ্রেফতার ৪ জনের দাবি তারা ছাত্রলীগ করেন

জাতীয় শিক্ষা

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ক্যাম্পাসে ছাত্রী নিপীড়নের ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। গ্রেফতারদের মধ্যে ঘটনার ‘হোতা’ হিসেবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মোহাম্মদ আজিম রয়েছেন। গ্রেফতার চারজনই নিজেদের ছাত্রলীগের কর্মী বলে দাবি করেছেন। তবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল বলেছেন, এই অপকর্মের দায় সংগঠন নেবে না।

তবে এ ঘটনায় রুবেলকে ‘শৃঙ্খলা পরিপন্থী’ কাজ করায় শোকজ করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

শুক্রবার রাতে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে চার অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়। র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, গ্রেফতারদের মধ্যে দুজন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েরই ছাত্র। তবে অভিভাবকের চাকরি সূত্রে তারা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় থাকেন। অন্য দুজন হাটহাজারী কলেজের ছাত্র।

পরে তাদের নাম প্রকাশ করে র্যাব। গ্রেফতাররা হলেন – চবির ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মোহাম্মদ আজিমকে (২৩), চবির নৃবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র নুরুল আবছার বাবু (২২), হাটহাজারী কলেজের সমাজ বিজ্ঞানের প্রথম বর্ষের ছাত্র নূর হোসেন শাওন (২২) এবং হাটহাজারী কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মাসুদ রানা (২২)।

মোহাম্মদ আজিমের বাড়ি নোয়াখালীর হাতিয়ার চর ভারত সেনে। তার বাবার নাম আমির হোসেন। এখন হাটহাজারীর ফতেহপুরে থাকেন তারা। নুরুল আবছারের বাড়ি ফেনীর পরশুরামের বেড়াবাড়ির বাসিন্দা। তার বাবা বেলায়েত হোসেন। এখন থাকেন হাটহাজারীর ফতেহপুরে। ফতেহপুরের জাবেদ হোসেনের ছেলে শাওন। আর মাসুদ রানা (২২) ঝালকাঠির আশিয়ার গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে।

গ্রেফতাররা নিজেদের ছাত্রলীগের কর্মী দাবি করলেও সংগঠনে তাদের কোনো পদ-পদবি নেই বলে জানিয়েছেন র্যাব-৭ এর অধিনায়ক।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আজিম নিজেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতির অনুসারী ও অন্যরা অপর পক্ষের বলে দাবি করেছেন। যেহেতু তাদের কোনো পদ-পদবি নেই, তাদের তাদের আমরা কোনো দলের কর্মী বলতে পারি না।

আজিম তার অনুসারী কি না- প্রশ্নে চবি ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল শনিবার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আজিম আমার অনুসারী না। সে সিএফসি গ্রæপের অনুসারী। এক সময় সিএফসি গ্রæপে আমিও যুক্ত ছিলাম। বর্তমানে আমি চবি ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দিচ্ছি। কোনো গ্রæপের অপকর্মের দায় আমি নেব না। আজিম যদি অপরাধ করে তাহলে তার বিচার হবে। এক্ষেত্রে সংগঠন কারও দায় ভার নেবে না।’

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ট্রেনের বগিভিত্তিক দলের একটি ‘সিএফসি’, ছাত্রলীগের কমিটি না থাকার সময় থেকে এই সংগঠনের নেতারাই এই দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

এদিকে ঘটনার পর থেকে ফেসবুকে রুবেলের সঙ্গে আজিমের ছবি ঘুরপাক খাচ্ছে।

এ বিষয়ে রুবেলের জবাব, ছাত্রলীগের সভাপতি হওয়ার পর অনেকে আমার সঙ্গে ছবি ত্লুতে আসে, আমি না করতে পারি না। আমিই তো আজিমকে ধরিয়ে দিতে তথ্য দিয়ে র্যাবকে সহায়তা করেছি।

নিপীড়নের শিকার ছাত্রীকে প্রথমে অভিযোগ দিতে বাধা দিয়েছিলেন, এমন অভিযোগ অস্বীকার করেন রুবেল। বলেন, আমিই তো আজিমকে ধরিয়ে দিতে তথ্য দিয়ে র্যাবকে সহায়তা করেছি।

২০১৯ সালের ১৪ জুলাই রেজাউল হক রুবেলকে সভাপতি ও ইকবাল হোসেন টিপুকে সাধারণ সম্পাদক করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা হয়। এক বছরের জন্য গঠিত এই কমিটি তিন বছরেও পূর্ণাঙ্গ হয়নি। রুবেল চট্টগ্রামের স্থানীয় রাজনীতিতে প্রয়াত এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ধারার অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

প্রসঙ্গত, রোববার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের হতাশার মোড় থেকে হলে ফেরার পথে এক ছাত্রী ও তার বন্ধুকে আটকে বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকায় নিয়ে বিবস্ত্র করে যৌন নিপীড়ন করে পাঁচজন। ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টাও করা হয় বলে অভিযোগ।

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *