স্বদেশ বাণী ডেস্ক:রাজধানীর চকবাজারের দেবীদাসলেন এলাকায় বরিশাল হোটেলে অগ্নিকাণ্ডে নিহত হয়েছেন মো. শরীফ। আজ বাড়ি চলে যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু অগ্নিকাণ্ডে নিহত হয়ে বাড়ি যাচ্ছেন লাশ হয়ে। রাজধানীর চকবাজারের দেবীদাসলেন এলাকায় বরিশাল হোটেলে অগ্নিকাণ্ডে নিহত হয়েছেন মো. শরীফ। আজ বাড়ি চলে যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু অগ্নিকাণ্ডে নিহত হয়ে বাড়ি যাচ্ছেন লাশ হয়ে।
মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (মিটফোর্ড হাসপাতাল) মর্গের সামনে কাছে এমনটাই জানান শরীফের নানি সালমা বেগম।
সালমা বেগম বলেন, ‘আমার মেয়ের জামাইয়ের কিছুদিন আগে অপারেশন হয়েছে। সে অসুস্থ থাকায় আমি শরীফের নানাকে বললাম একটা কাজ দেওয়ার জন্য। তার নানার সঙ্গেই হোটেলে কাজ করতো। শরীফকে দিনে প্রথমে ১৬০ টাকা হাজিরা ধরা হয়। কাজ অনুযায়ী তার বেতন কম হওয়ায় শরীফ বলল বেতন বাড়াইয়া দিতে। পরে তাকে ২০০ টাকা হাজিরা ধরা হয়।’
শরীফ এরপরও সেখানে থাকতে চায়নি। হোটেলে গ্লাসে পানি দেওয়ার কাজ করতো সে। বলতো নানা আমার বুক ধরফর করে আমি কাজ করবো না আমারে বাড়ি পাঠিয়ে দাও। মহাজনের সঙ্গে কথা বলে তার নানাও বলছে যে তোর যেহেতু ভালো লাগে না তুই বাড়ি চলে যা কাল। আমি গতকাল তার নানাকে বললাম যে তাকে মহাজনের সঙ্গে কথা বলে টাকা দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য। কিন্তু কে জানে আল্লাহ যে ঘুম পাতায়া একবারে নিয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, তার নানা গতকাল সাভারে যাওয়ার জন্য রওয়ানা দেয়। তার আগে শরীফকে বলে সোমবার ডিউটি কর। সে রাতে ডিউটি করে পরদিন আর কাজে না গিয়ে ঘুমাতে যায়। তার নানা বেলা ১১টার দিকে শোনে হোটেলে আগুন লাগছে। এটা শুনে সে আর সাভারে যায়নি। আমাকে ফোন দেয়। বললো আগুন লাগছে শরীফকে পাইতেছি না। এই কথা শুনে আমরাও ফোনে না পেয়ে ঢাকায় চলে আসি। এসে তাকে আমরা পাইলাম না।
সালমা বেগম বলেন, এক মাস আগে শরীফের বাবার মেরুদণ্ডের অপারেশন হয়েছে। মানুষের কাছে ধারদেনা করে তার বাবার অপারেশন করা হয়েছিল। পরিবারের একমাত্র সম্বল ছিল নাতিটা। একটা মাত্র ছেলে ছিল আমার মেয়ের। এখন চলার মতো আর কিছু নেই।
তিনি বলেন, সরকারের কাছে একটাই আবেদন তাদের পরিবারটা যেন একটু দেখে। লাশ বাড়িতে নিয়ে যাবে সে পয়সাও তাদের কাছে নেই। এই ছেলেটাই তাদের ভরসা ছিল। সরকার যেন তার মা-বাবার জন্য একটা কিছু করে।
স্ব.বা/রু