কেশবপুর উপজেলাবাসীকে শারদীয় দুর্গোৎসবের শুভেচ্ছা জানালেন সাংবাদিক সাঈদ

জাতীয়

ডেক্স রিপোর্ট: যশোরের কেশবপুর উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি বিশিষ্ট সাংবাদিক এস আর সাঈদ শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে উপজেলার সকল হিন্দু সম্প্রদায়কে শুভেচ্ছা ও অভিন্দন জানিয়েছেন।

শুভেচ্ছা বার্তায় তিনি বলেন, শারদীয় দুর্গোৎসব শুধু বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য নয়; বরং জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে আমাদের জাতীয় ঐক্য চেতনায় এটি একটি মহামিলনোৎসব। আমি উপজেলা বাসীকে জানাই শারদীয় শুভেচ্ছা ও আন্তরিক অভিনন্দন।

বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এখানে আবহমানকাল থেকে একসঙ্গে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান এবং আদিবাসী ও উপজাতি সম্প্রদায়ের লোকেরা মিলেমিশে বসবাস করে আসছে। বিশ্বে এ এক অনন্য ইতিহাস। যে দেশে, যে ভূখণ্ডে একসঙ্গে নানা জাতি, নানা বর্ণের লোক এবং নানা ধর্ম-সংস্কৃতির লোকের বসবাস- সেটাই তাদের আসল পরিচয়। তাই তো প্রাচীনকাল থেকে আমরা পারস্পরিক সম্প্রীতির মেলবন্ধনে আবদ্ধ আছি।

শরতের এই সুন্দর প্রকৃতির সঙ্গে মিশে আছে বাংলার আবহমানকালের শারদীয় দুর্গোৎসব। এ উৎসব বাঙালি হিন্দুদের সর্ববৃহৎ ও সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্মীয় উৎসব। শাস্ত্র মতে, দেবী দুর্গার আগমনের মধ্য দিয়ে পৃথিবীর সব দুঃখ-বেদনা, জরা-জীর্ণতা, রোগ-ব্যাধি আর অন্যায়-অত্যাচার যেমন দূরীভূত হয়, তেমনি মানব জীবনে সুখ-শান্তি আর শুভ শক্তির উদ্ভাবন ঘটে।

আবহমানকাল থেকেই এ উপমহাদেশে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায় অত্যন্ত আনন্দঘন পরিবেশে এবং ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন করে আসছে। শরৎকালের দেবীর এ পূজাকে বলা হয় অকালবোধন।

পুরাকালে মহিষাসুরের অত্যাচারে স্বর্গ-মর্ত্যরে দেবতা ও মানুষরা দেবী চণ্ডীর আরাধনা করেছিলেন। মহিষাসুরের এ অত্যাচারে বিভিন্ন দেবতার পুঞ্জীভূত ক্ষোভ থেকে যেই ক্রোধের উৎপত্তি হয়, সেই ক্রোধের তেজ থেকে সৃষ্টি হয়েছিল দেবী দুর্গা। দেবী দুর্গা বিভিন্ন দেবতার অস্ত্র ও অলংকারে সজ্জিত হয়ে মহিষাসুরের সঙ্গে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। পরে মহিষাসুর তার নিজের ভুল বুঝতে পেরে মা দুর্গার কাছে ক্ষমা চেয়েছিলেন বিনম্রভাবে। দয়াময়ী মা দুর্গা মহিষাসুরকে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন অপার মমতায় এবং তাকে শ্রেষ্ঠ ভক্ত হিসেবে পদতলে স্থানও দিয়েছিলেন। এজন্যই দুর্গাপূজার সার্বজনীন আবেদন হল, অসুর শক্তির বিনাস আর শুভ শক্তির উদ্বোধন।

মানুষ যেন আজ অন্যায়, অবিচার, কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ ও হিংসা বিদ্বেষে জর্জরিত। এই অশুভ শক্তি ও অমানবিক আচার-আচরণকে দূরীভূত করে সত্য, সুন্দর ও ন্যায়ের পথে যেন জীবন-যাপন করতে পারে সেটাই এ দুর্গাপূজার মূল উদ্দেশ্য। এ ছাড়া দুর্গাপূজার আর একটি সার্বজনীন আবেদন রয়েছে, যেটির প্রয়োজন আমাদের জাতীয় জীবনে ও জাতীয় সংস্কৃতিতে। তাই মানুষে মানুষে সৌহার্দ্য, সৌভ্রাতৃত্ব, বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্যই আমরা দুর্গাপূজা থেকে এক অনন্য শিক্ষা পেয়ে থাকি। মানুষ মানুষের জন্য যত বেশি সম্প্রীতি ও মিলনের মেলবন্ধন তৈরি করবে, তত বেশি মানুষের মধ্যে সুসম্পর্কের নিবিড়তা গভীর হবে। জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে আমরা যেন একই মেলবন্ধনে আবদ্ধ হতে পারি, আমাদের শারদীয় দুর্গোৎসব আমাদের সে শিক্ষাই দিয়ে থাকে।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *