১/১১-এর মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তির সুযোগ নেই: প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: দেশে ওয়ান ইলেভেনের মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তির সম্ভবনাকে নাকচ করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার আগে থেকেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। যাতে এ ধরনের ঘটনা পুনরায় না ঘটতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা বলাই যায় (স্পষ্টত) যে, ওয়ান ইলেভেন পুনরায় ঘটবে না। যদি কোনো অনিয়ম থেকে থাকে, আমি ব্যবস্থা নেব। আমরা ব্যবস্থা নেব এবং সে যেই হোক না কেন, এমনকি তারা আমার দলের হলেও। যদি আমি দুর্নীতিবাজদের শাস্তি দিতে চাই। আমার ঘর থেকেই তা আগে শুরু করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার বিকেলে জাতিসংঘের ৭৪তম অধিবেশনে যোগদান উপলক্ষে নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন। জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিানিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন স্বাগত বক্তৃতা করেন এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, প্রকল্প প্রস্তুতি থেকে শুরু করে প্রকল্পের কাজ পাওয়ার জন্য অর্থ বিতরণের সুযোগ নিয়ে কিছু লোক বিপুল সম্পদের মালিক বনে যাচ্ছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই অর্থ চটের বস্তাতেও লুকিয়ে রাখা হচ্ছে এবং ওয়ান ইলেভেনের পট পরিবর্তনের পর আমরা এটা দেখেছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘হঠাৎ করে যে সম্পদ আসে তা দেখানো কিছু মানুষের স্বভাব। আমাদের সমাজের এই অংশটিকে আঘাত করতে হবে।’

জনগণের জন্যই তার রাজনীতি এবং জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েই ক্ষমতায় এসেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি সব সময় জনগণের মঙ্গলের কথাই চিন্তা করি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার কারণে আমার দল এবং সমাজের ওপর ক্ষতিকারক কোনো প্রভাব পড়ছে কিনা সে বিষয়েও আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। আমাকে সেটা মোকাবিলাও করতে হবে। যে কারণে আমি এই অভিযান চালাচ্ছি (দুর্নীতি বিরোধী)।’

কিছু লোক এই অভিযান পরিচালনায় তার ওপর অখুশি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কিন্তু, আমি এটার পরোয়া করি না কেননা আমার ক্ষমতা এবং সম্পদের প্রতি কোন মোহ নেই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান চলছে এবং চলবে।’ যদিও এজন্য কোনো বিশেষ কমিটি গঠনের প্রয়োজন নেই বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ‘দুর্নীতির কোনো তথ্য পেলেই আমরা এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমরা জাতীয় নিরাপত্তা সেল গঠন করেছি। তাদের সময় মতো নির্দেশনা প্রদান করছি। এই অভিযান চলতে থাকবে এই নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি চান যে, দেশের প্রত্যেক মানুষের উন্নত ও সুন্দর জীবনযাপন করবে। এই সুযোগে কিছুসংখ্যক মানুষ সমাজকে বিষাক্ত করবে, এটা আমার কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। এ কারণে আমি এই নির্দেশ দিয়েছি।

তিনি বলেন, দেশে খেলাধুলার উন্নয়নে ক্রীড়াসামগ্রীর আমদানি খুবই ভালো। কিন্তু এটা অকল্পনীয় যে, ক্রীড়াসামগ্রী আমদানির নামে জুয়ার জিনিসপত্র আনা হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, দেশে যেকোনো ধরনের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টির তৎপরতা প্রতিরোধে সন্ত্রাসী ও জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়েছে।

তিনি বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে এবং আমরা এই অভিযানে প্রায় সফলতার দ্বারপ্রান্তে। এখন আমরা দুর্নীতিবিরোধী অভিযান শুরু করেছি।

তিনি বলেন, সরকার দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং এ লক্ষ্যে বহু প্রকল্প তৈরি ও এসব প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দকৃত অর্থ যথাযথভাবে ব্যয় হবে এবং এসব কাজও সম্পন্ন হবে নির্বিঘ্নে।

এতে কোনো অনিয়ম হলে দেশের উন্নয়ন ব্যাহত হবে। এর ফলে আমরা যেভাবে দেশের উন্নয়নের চিন্তা করছি, তা সম্পন্ন হবে না। তথ্যসূত্র: বাসস।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *