বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে মেধাবীদের সংবর্ধনা ও পুরস্কার বিতরণে রাসিক মেয়র লিটন

রাজশাহী লীড

স্টাফ রিপোর্টার: বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০১৮ সালের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী, জেএসসি, এসএসসি ও ২০১৯ সালের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ৯২১জন মেধাবীকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে। আজ বুধবার সংবর্ধনা প্রদান ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে কৃতি শিক্ষার্থীদের গলায় মেডেল পরিয়ে দেন রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন।

অনুষ্ঠানে মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, একটা জাতির অর্ধেক মানুষ নারীকে ঘরে বসে রাখলে সেই জাতির উন্নতি হবে না। নারীরা শালীনভাবে সব জায়গায় যেতে পারবে, কোন ধর্মেই নিষেধ নেই যে নারীরা ঘরেই বাইরে যেতে পারবে না। তারপরও ধর্মের নামে নারীদের ঘরের মধ্যে রাখা হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিগত ১১ বছর ধরে নারীরা অনেক এগিয়েছে। সর্বক্ষেত্রে তাদের এখন বিচরণ। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনেও বাংলাদেশের নারীরা কাজ করছে। নারীরা জেলা প্রশাসক হচ্ছে, এসপি হচ্ছে, ইউএনও হচ্ছে, বিমান চালক হচ্ছে, সর্বক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ দেখা যাচ্ছে।

মেয়র আরো বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এখন অনেক বেশি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতার কারণেই এটি সম্ভব হয়েছে। আর একটানা দশ বছর যদি এমন ধারাবাহিক উন্নয়ন হয়, তবে বিশ্বের অন্যতম ধনী দেশে পরিণত হবে বাংলাদেশ।

শিক্ষার্থীদের বই পড়ায় মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মেয়র লিটন বলেন, বেশি বেশি বই পড়তে হবে। বই পড়ে যা পাওয়া যাবে, ফেসবুকে তা পাওয়া যাবে না। ফেসবুকের খারাপ ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে।

অনুষ্ঠানে স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ১০ তলা একটি ভবন ও আলাদা ক্যাম্পাস তৈরির ব্যাপারে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার আশ্বস দেন মেয়র।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে বিশ^ সাহিত্য কেন্দ্র বগুড়ার সভাপতি শ্যামল ভট্টাচার্য্য বলেন, শিক্ষার্থীদের প্রচুর বই পড়তে হবে। বই মনকে আলোকিত করে। ‘সবকটা জানালা খুলে দাও না’ গানের মতো বইয়ের জন্য মনের জানালাকে খুলে রাখতে হবে। মনকে বড় করতে হবে। আমাদের বড় করে ভাবতে হবে। ছোট করে ভাবার এখন সময় নাই।

সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনানের প্রসিকিউটর ব্যরিস্টার ড. তুরিন আফরোজ বলেন, আমরা প্রায়ই শুনি ভাই, দেশ এগিয়ে গেছে, এখন কেন আপনারা পুরনো দিনের কথা বলেন। এসব বলে কী হবে। আসলে ইতিহাসের শেকড়ের উপর দাঁড়িয়েই তো আমাদের অবস্থান। অতীতের ইতিহাসকে যদি আমরা ধারণ করতে না পারি তাহলে আমরা ভবিষ্যৎকে গড়বো কীভাবে। আমাদের জাতীয় চার নেতাকে যেভাবে কারাগারে হত্যা করা হয়েছে, এই হত্যার যদি আমরা বিচার না করি, তাহলে আমরা নিজেদের কীভাবে নেতা বানাবো। আজকে আমাদের সেই কাজগুলো করতে হবে।

তিনি আরো বলেন, আমি শিক্ষার্থী বন্ধুদের আহ্বান জানাচ্ছি, যেখানে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে কথা বলা হবে, সেখানে সোচ্চার ভুমিকা রাখবে। মনে সব সময় রাখতে হবে, জয় বাংলা স্লোগান। আমাদের দীর্ঘদিন বোঝানো হয়েছে, জয় বাংলা রাজনৈতিক স্লোগান। জয় বাংলা কোন রাজনৈতিক স্লোগান নয়, জয় বাংলা আমাদের রনাঙ্গনের স্লোগান। স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তির বিরুদ্ধে আমাদের জয় বাংলা স্লোগানে মুখর থাকতে হবে। নারী বলে আমরা পিছিয়ে থাকবো না। সংবিধানে আমাদের সমান অধিকার দেওয়া হয়েছে।

বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহযোগিতায় বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র বগুড়া আয়োজিত অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বগুড়া জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মজিবর রহমান মজনু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক টি জামান নিকেতা, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল, বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের উপদেষ্টা মুক্তিযোদ্ধা আরশাদ সায়ীদ, বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক রাবেয়া খাতুন, বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র বগুড়ার সমন্বয়কারী এটিএম রাশেদুল ইসলাম প্রমুখ।

অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধান অতিথি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনসহ অন্যান্য অতিথিদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান শিক্ষার্থীরা। অনুষ্ঠানের শেষে মেয়র খায়রুজ্জামান লিটনকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *