রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

রাজশাহী

স্টাফ রিপোর্টার: বর্ণাঢ্য র‌্যালিসহ নানা আয়োজনের মধ্যে দিয়ে উদ্‌যাপিত হয়েছে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার নগরীর ভেড়িপাড়া মোড়ে বর্ণাঢ্য র‌্যালির আয়োজন করা হয়। র‌্যালিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ইন্সপেক্টর জেনারেল চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।

র‌্যালিটি ভেড়িপাড়া মোড় থেকে শুরু হয়ে পুলিশ লাইনসে গিয়ে শেষ হয়। র‌্যালীর পূর্বে প্রধান অতিথি বেলুন ফেস্টুন ও কবুতর অবমুক্ত করে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। এসময় সাথে ছিলেন আরএমপির পুলিশ কমিশনার আনিসুর রহমান।

পরে রাজশাহী জেলা পুলিশ লাইন্স ড্রিলশেডে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এসময় প্রধান অতিথি আরএমপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেট কাটেন এবং প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে প্রকাশিত স্বরণিকা ‘নবচেতনায় আরএমপি’-এর মোড়ক উম্মোচন করেন।

এরপর আরএমপির উদ্যোগে তৈরিকৃত বিজ্ঞ আদালতে সাক্ষী হাজির ব্যবস্থাপনা ও পুলিশ ভেরিফিকেশন সফটওয়ার-এর উদ্বোধন করেন। উদ্বোধন শেষে আরএমপির ৩০ বছরের ইতিহাস ও সাফল্য নিয়ে একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আরএমপির পুলিশ কমিশনার আনিসুর রহমান। এসময় পুলিশ কমিশনার প্রধান অতিথিসহ আমন্ত্রিত অন্যান্য অতিথিদের সম্মাননা স্মারক প্রদান করেন।

আলোচনা সভার ইন্সপেক্টর জেনারেল চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পথে আমরা বাংলাদেশ পুলিশকে ‘স্মার্ট পুলিশ’-এ পরিণত করার লক্ষ্যে নিয়েছি বহুমুখী পরিকল্পনায় বাংলাদেশ পুলিশের জনবল ও সক্ষমতা যেমন বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে, তেমনি উন্নততর প্রযুক্তি ও সর্বোত্তম প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

রাজশাহীস্থ পুলিশ ইউনিটগুলোর ভূয়সী প্রশংসা করে ইন্সপেক্টর জেনারেল বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে রাজশাহীস্থ পুলিশের রয়েছে অসামান্য অবদান এবং বর্তমানেও তারা নিজেদের জীবন বাজি রেখে পুলিশি দায়িত্ব পালন করে চলেছে। ঠিক একইভাবে সেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিটি সদস্য আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে যাবে।

আইজিপি আরও বলেন, এক সময় বাংলাদেশে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের ভয়াবহ প্রকোপ ছিল। বাংলাদেশ পুলিশ তা কঠোর হস্তে প্রতিহত করেছে।

পুলিশ কমিশনার আনিসুর রহমান বলেন, সাইবার অপরাধ সনাক্তকরণে আরএমপিতে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে সাইবার ক্রাইম ইউনিট ও ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব এবং মহানগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নগরীর সর্বত্র সিসিটিভি স্থাপন করা হয়েছে, যা অপারেশন কন্ট্রোল অ্যান্ড মনিটরিং সেন্টারের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। তা ছাড়া হ্যালো আরএমপি অ্যাপস-এর মাধ্যমে মহানগরবাসী তাদের অভিযোগ যেনো পুলিশ কমিশনারের নিকট জানাতে পারেন, সে-ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। যে-কোনো ক্রাইসিস মোকাবিলায় সিআরটি টিম ও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট দেখিয়েছে ঈর্ষণীয় সাফল্য।

তিনি বলেন, মাদক নির্মুলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত শূন্যসহিষ্ণুতার নীতির বাস্তবায়নে আরএমপি নিয়মিত ও বিশেষ অভিযান অব্যাহত রেখেছে। মাদক উদ্ধারসহ যে কোনো অপরাধ সনাক্তকরণে আরএমপির রয়েছে দৃশ্যমান সাফল্য। অপরাধ প্রতিরোধে গত ৫ বছরের ছিনতাইকারী, চোর, ডাকাত ও কিশোর গ্যাংয়ের তালিকা প্রস্তুত করে তাদের নিবিড়ভাবে নজরদারি করা হচ্ছে। পাশাপাশি কমিউনিটি পুলিশিং ও বিট পুলিশিং-এর মাধ্যমে মাদক ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন উদ্যোগ। মাদক ও সন্ত্রাসবাদের বিষয়ে জনগণ ও শিক্ষার্থীদের সচেতন করতে বিভিন্ন রকমের জনসচেতনতামূলক সভা-সমাবেশ করছে আরএমপি। বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত ও জামিনে থাকা জঙ্গিদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে আমরা আরএমপি’র বিভিন্ন থানায় হাজিরার ব্যবস্থা করেছি, যা সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি সারদার প্রিন্সিপ্যাল মীর রেজাউল আলম, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার , সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. আব্দুল খালেক, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআেইজি আব্দুল বাতেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল প্রমূখ।

স্ব.বা/বা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *