রাবিতে মোবাইল ছিনতাইকালে বহিরাগত এক যুবককে আটক করে পুলিশে সোপর্দ

রাজশাহী লীড শিক্ষা

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীর মোবাইল ছিনতাই চেষ্টাকালে বহিরাগত এক যুবককে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। গতকাল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুন্নুজান হলের সামনে এঘটনা ঘটে।

তবে নিজেকে ছাত্রলীগ কর্মী পরিচয় দিয়ে ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত নয় বলে দাবি যুবকের। এ সময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তার বাইকেটি কেড়ে নিতে চান বলেও পাল্টা অভিযোগ করেছেন তিনি।

বহিরাগত যুবক নগরীর মেহেরচণ্ডী পূর্বপাড়া এলাকার রহিজ উদ্দীনের ছেলে ফয়সাল উদ্দীন রাহাত। তিনি নিজেকে বঙ্গবন্ধু ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী ও ২৬ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগ কর্মী দাবি করেন। তবে ২৬ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগ বলছে, ফয়সাল ছাত্রলীগের কেউ নয়।

মারধরের পর গুরুতর আহত অবস্থায় ও্ই যুবককে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়, পরে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এদিকে, ছিনতাইয়ের শিকার মার্কেটিং বিভাগের রুবেল কাজী বলেন, ‘আমি তৃতীয় বিজ্ঞান ও রবীন্দ্র ভবনের মাঝের রাস্তায় মোবাইলে চ্যাট করতে করতে টুকিটাকি চত্ত্বরের দিকে যাচ্ছিলাম। এমন সময় মোটরসাইকেলে আসা দুই যুবকের মধ্যে পেছনে থাকা একজন আমার হাত থেকে মোবাইল থাবা দিয়ে কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। তারা ছিনতাই চেষ্টায় ব্যর্থ হলেও আমার হাত থেকে মোবাইল পড়ে যায়।

এসময় তারা মোটরসাইকেল নিয়ে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে দিয়ে প্যারিস রোডের দিকে চলে যায়। আমি তাদের ধরার জন্য মুন্নুজান হলের দিকে যায়। এবং তাৎক্ষণিক বিষয়টি আমার বন্ধু ফেরদৌসকে জানাই। ফেরদৌস ছিনতাইকারীদের ধরে ফেলে। ফেরদৌসের সঙ্গে ওই ছিনতাইকারীর বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে ছিনতাইকারী ফেরদৌসকে পাশে রাখা বাঁশ দিয়ে মারতে চায়। পরে ফেরদৌসের সহযোগীরা ওই বাঁশ দিয়েই ছিনতাইকারীকে মারধর করে।’

তিনি আরো বলেন, ‘মোটরসাইকেল চালক মোটরসাইকেল রেখে পালিয়ে যায়। মোটরসাইকেলটি এখন টুকিটাকি চত্বরে রাখা হয়েছে। মোটরসাইকেলের চাবি রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু ভাইয়ের কাছে রাখা হয়েছে।’

ছিনতাইয়ের শিকার রুবেল কাজীর বন্ধু ফেরদৌস মো. শ্রাবণ বলেন, ‘ঘটনাটি জানার পর আমরা চারদিক ছড়িয়ে পড়ি। যেহেতু তার মোটরসাইকেলটি উচ্চ শব্দ সম্পন্ন ছিলো তাই আমাদের সেটাকে শনাক্তকরণে সুবিধা হয়েছে। পরে আমরা সেখানে গিয়ে তাকে আটক করি। এসময় সে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করে এবং মারতে আসে। পরে ঘটনাস্থলে সে মারধরের শিকার হয়।’

তবে ছিনতাইয়ের কথা অস্বীকার করে মারধরের শিকার ফয়সাল উদ্দীন রাহাত বলেন, ‘এখানে আমার এক বন্ধুর সাথে দেখা করতে এসেছিলাম। আমি মোটরসাইকেলে বসে অপেক্ষা করছিলাম। হঠাৎ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এসে আমার মোটরসাইকেলের চাবি খুলে নেয়। চাবি খুলে নেয়ার কারণ জানতে চাইলে ‘ছিনতাইকারীর সাথে কিসের কথা’ এই কথা বলে তারা আমাকে মারধর করতে শুরু করে। আমাকে কোন কথা বলার চান্স না দিয়ে আমাকে সবাই মিলে বাঁশ দিয়ে বেধরক মারধর শুরু করে। আমি কোনভাবেই ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত নই।’’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, ছিনতাইয়ের চেষ্টাকালে এক বহিরাগতকে ধরা হয়েছে এমন তথ্যে মতিহার থানা পুলিশ খবর দিই। পরে পুলিশ এসে তাকে নিয়ে যায়।

বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে উপস্থিত মতিহার থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মমতাজ উদ্দিন বলেন, আহত যুবকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার মাথা দিয়ে রক্ত পড়ছে। তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *