‘টাকার মেশিন’ কলেজ অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান : অনুসন্ধানী প্রতিবেদন

রাজশাহী লীড

৯ বছরে বেতন তুলেছেন ৩৫ লাখ * সম্পদ কিনেছেন কয়েক কোটি টাকার * ইউএনওর তদন্তে জারিজুরি ফাঁস * শিক্ষক নিয়োগে লাগামহীন দুর্নীতি * ভুয়া বিল ভাউচারের ছড়াছড়ি

স্বদেশ বাণী ডেস্ক: মিজানুর রহমান। তিনি সদ্য সরকারি হওয়া পাবনার চাটমোহর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ। বর্তমানে সর্বসাকুল্যে বেতন ৫৬ হাজার ৬২৫ টাকা। এর মধ্যে প্রতি মাসে অবসর ও কল্যাণ ভাতা তহবিলে কাটা হয় ৫ হাজার ৫১২ টাকা। অর্থাৎ প্রতি মাসে তিনি বেতন উত্তোলন করেন ৫১ হাজার ১১৩ টাকা।

এই হিসেবে চাটমোহর কলেজে যোগ দেয়ার পর চলতি অক্টোবর পর্যন্ত তিনি বেতন পেয়েছেন সর্বমোট প্রায় ৩৪ লাখ টাকা। অথচ চাকরিকালীন ৯ বছরের ব্যবধানে তিনি শুধু চাটমোহর পৌর শহরেই জমিসহ একটি বাড়ি ও মূল্যবান দোকানের পজেশন কিনেছেন। যার দলিল মূল্যই প্রায় অর্ধকোটি টাকা। বাস্তবে দাম কোটি টাকার ওপরে। চাটমোহর পোস্ট অফিসে স্ত্রী-পিতা ও নিজের নামে সঞ্চয়পত্র কিনেছেন ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকার। সম্প্রতি সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর ৪০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র তুলে নিয়েছেন।

অধ্যক্ষ মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) জমা দেয়া একটি অভিযোগপত্রের সূত্র ধরে যুগান্তরের অনুসন্ধানে চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য বেরিয়ে আসে।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ২০১১ সালের ১৬ জুলাই মিজানুর রহমান চাটমোহর ডিগ্রি কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগ দেন। তখন তিনি বেতন পেতেন ২৫ হাজার টাকা। ২০১৫ সাল পর্যন্ত এই বেতনেই তিনি নিয়োজিত ছিলেন। ২০১১ সালের জুলাই থেকে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ৪১ মাসে তিনি ২৫ হাজার টাকা হিসাবে সর্বসাকুল্যে বেতন তোলেন ১০ লাখ ২৫ হাজার টাকা। ২০১৫ সালের পর সরকার বেতন স্কেল দ্বিগুণ করে দিলে এই অধ্যক্ষের বেতন হয় সব মিলিয়ে ৫৬ হাজার ৬২৫ টাকা। কিন্তু কর্তনের পর তিনি পেতেন ৫১ হাজার ১১৩ টাকা। এই হিসেবে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট ৪৫ মাসে মিজানুর রহমান ২৩ লাখ ৮৫ টাকা বেতন তোলেন। এই হচ্ছে তার ৩৪ লাখ টাকার হিসাব।

এই আয় দিয়ে নিজের সংসার ও বাড়ি ভাড়াসহ ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার খরচ করে কিভাবে চাটমোহর ও ঈশ্বরদীতে মূল্যবান সম্পদ কিনলেন জানতে চাইলে অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান শুক্রবার যুগান্তরকে বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কোনো কথা বলব না। বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন।’ এই বলেই তিনি মোবাইলের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। এরপর বারবার কল করা হলেও তিনি আর ফোন ধরেননি। তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী বিচারাধীন বিষয় খোঁজ নিতে গিয়ে জানা যায়, চাটমোহর ডিগ্রি কলেজের বেশ কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে তিনি উল্টো মামলা করেছেন।

মামলাটিকে হয়রানিমূলক বলে উল্লেখ করেছেন শিক্ষকরা। একজন শিক্ষক যুগান্তরকে বলেন, ‘উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরকার অসীম কুমার দুর্নীতি-অনিয়ম তুলে ধরে প্রতিবেদন দেয়ার পর তার কার্যকারিতা স্থগিত চেয়ে অধ্যক্ষ উচ্চ আদালতে আবেদন করেন। কিন্তু তাতে আদালত সায় দেননি। এরপর কৌশলে ইউএনওকে বিতর্কিত করতে আদালত অবমাননার অভিযোগও আনেন।’ তিনি বলেন, ‘অধ্যক্ষের সব চেষ্টাই হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি-অনিয়ম নিয়ে ইউএনও যে প্রতিবেদন দিয়েছেন তার কার্যকারিতা নস্যাৎ করা। কারণ প্রতিবেদনে অধ্যক্ষের সবকিছু প্রকাশ করে দেয়া হয়েছে।’

এদিকে তার স্ত্রী শাহীনুর আয়েশা সিদ্দিকা ২০১৭ সাল থেকে একই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রভাষক পদে যোগ দেন। ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ২৩ হাজার ৩৩০ টাকা স্কেলে বেতন শুরু হয় তার। অথচ তিনি ২০১৭ সালের ৭ আগস্ট চাটমোহরেই আড়াই শতক জমি কিনেন ৬ লাখ টাকায়। ৪৩৭৩নং দলিলটি শাহীনুর আয়েশার নিজের নামে। অন্য সব দলিলই মিজানুর রহমানের নিজ নামে। এর মধ্যে চাটমোহর পৌর সদরে ২০১৩ সালের ৭ আগস্ট অগ্রণী ব্যাংক সংলগ্ন খন্দকার মার্কেটে ৩০ লাখ টাকায় স্থাপনাসহ ২ শতক জমির ওপর দোকান ঘর নিজের নামে কিনে নেন মিজানুর রহমান। চাটমোহর সাবরেজিস্ট্রি অফিসের দলিল নং ৫৫৯৯।

এলাকা অনুযায়ী দলিল মূল্য কম হলেও বাস্তবে এই দোকানের দাম প্রায় ৬০ লাখ টাকা বলে জানিয়েছেন মার্কেটের একজন ব্যবসায়ী। তখন তিনি বেতন পেতেন ২৫ হাজার টাকা। এছাড়া এলাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ২০১৭ সালে ৪৭৪৫নং দলিলে সাড়ে ১৪ লাখ টাকায় ৯ শতক জমি কেনেন তিনি। বাস্তবে এই জমির দামও প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা। নিজের নামেই তিনি এই জমিটি রেজিস্ট্রি করে নেন। ২৫ ফেব্রুয়ারি একই এলাকায় ৩ লাখ ৬৭ হাজার টাকায় আরও ২ শতক জমি কেনেন ১২৩৭নং দলিলে। ঈশ্বরদীর মাজদিয়া এলাকায় আরও ৯ শতক জমি ১৮ লাখ টাকায় কেনার তথ্য জানা যায়। ঈশ্বরদীর কবি মকবুল হোসেন সড়কের স্কুলপাড়ায় পৈতৃক বাড়িতে চারতলার বিল্ডিংও করেছেন।

এদিকে চাটমোহর পোস্ট অফিস সূত্র জানায়, মিজানুর রহমানের পিতা মজিবর রহমানের নামে সংশ্লিষ্ট পোস্ট অফিসে ৪৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র, স্ত্রী শাহীনুর আয়েশা সিদ্দিকার নামে ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ও অধ্যক্ষের নিজের নামে ৬০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র আছে। এর মধ্যে গত দুই সপ্তাহ আগে মিজানুর রহমান নিজের নামে থাকা সঞ্চয়পত্রটি ভেঙে ৪০ লাখ টাকা তোলেন।

আর্থিক দুর্নীতি যেভাবে : শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার একটি তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া যায়। এতে দুই মাসেই ২ লাখ ৯১ হাজার ৭৯০ টাকা তছরুপের প্রমাণ মিলেছে। এর মধ্যে কলেজের বেতনভুক্ত কর্মচারীদের নামে ভুয়া বিল ভাউচার করে ২১ হাজার ৬শ’ টাকা উত্তোলন, প্রিন্টার ও কম্পিউটার থাকা সত্ত্বেও বিল-ভাউচার দেখিয়ে ১৫ হাজার ৬২৫ টাকা উত্তোলন, অনার্স কোর্সে ভর্তির পোস্টার ছাপানোর নামে ১২ হাজার টাকা আত্মসাৎ, ইনকোর্স পরীক্ষায় দায়িত্ব পালনের বিপরীতে শিক্ষকদের সম্মানী বাবদ ৬ হাজার ২শ’ টাকা, প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষার উত্তরপত্র ছাপাতে ১০ হাজার ৫শ’ টাকা, উপবৃত্তি বাছাইয়ের কাজে খাবারের জন্য ৫ হাজার টাকা, ফটোকপির নামে ৪ হাজার ৭২১ টাকা, বিভিন্ন ভাউচারে ১০ হাজার ৬শ’ টাকা, অকৃতকার্য পরীক্ষার্থীর পরীক্ষার নিয়ম না থাকলেও বিশেষ পরীক্ষার নামে পত্রপ্রতি ৫০ টাকা হারে ৩০ হাজার ৪৯০ টাকা, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা কেন্দ্র ফি বাবদ ১ লাখ ৩২ হাজার ১৫০ টাকা, শিক্ষার্থীদের প্রশংসাপত্র বাবদ ২শ’ টাকা এবং কলেজের পার্শ্ববর্তী ভবনের ভাড়া ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা হলেও কলেজের মার্কেটের দোকান ভাড়া দেয়া হয়েছে ১২শ’ টাকা করে। এই খাতে দুর্নীতির ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে।

এদিকে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে এইচএসসি পরীক্ষায় অতিরিক্ত ফি আদায়ের একটি অভিযোগ প্রমাণিত হয়। ২০১৭ সালের ১৬ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব নাছিমা খানম স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ তথ্য জানা যায়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও মাউশির মহাপরিচালককে ২০ কর্মদিবসের মধ্যে অধ্যক্ষ মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়ে মন্ত্রণালয়কে অবহিত করার কথা বলা হয়। অথচ দুই বছরেও তার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

কেঁচো খুঁড়তে সাপ : কলেজটির ৩২ জন শিক্ষক জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরই থলের বিড়াল বের হয়ে আসে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কলেজের একজন প্রভাষক বলেন, ‘কলেজটি সরকারি ঘোষণা হওয়ার পর রেজুলেশন সিটে ঘষামাজা করে অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান ২১ জন শিক্ষককে অবৈধভাবে অন্তর্ভুক্ত করেন। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার পর নির্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হলেও পদ সৃজনের প্রস্তাব ইউএনও’র কাছে না পাঠানোয় সন্দেহ হয়। এরপরই স্থানীয় প্রশাসনের শীর্ষ দুই কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দেয়া হয়।’ পদ সৃজনের প্রস্তাবে যৌথ স্বাক্ষরের ক্ষমতাবলে ইউএনও সরকার অসীম কুমার শিক্ষক-কর্মচারীদের নিয়োগ সংক্রান্ত নথিপত্র তলব করেন। এরপর অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান কয়েক দফায় ১৩৮টি ফাইল জমা দেন। কিন্তু অধ্যক্ষ তার নিজের ও উপাধ্যক্ষের নিয়োগ সংক্রান্ত নথি জমা না দিয়ে এড়িয়ে যান। তবে কলেজের গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন শিক্ষক গোপনে ওই দু’জনেরও নথির ফটোকপি ইউএনওকে সরবরাহ করেন। এভাবেই নথিপত্র যাচাই-বাছাই করার সময় অধ্যক্ষ ও তার স্ত্রীসহ ২১ জন শিক্ষকের নিয়োগ জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ে।

যত অনিয়ম : তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অধ্যক্ষ পদে ১২ বছরের অভিজ্ঞতা বাধ্যতামূলক। অথচ বিতর্কিত অধ্যক্ষ এই মিজানুর রহমানের কাগজে-কলমে অভিজ্ঞতা আছে ৯ বছর ৯ মাস। শুধু তাই নয়, তার স্ত্রী শাহীনুর আয়েশা সিদ্দিকা প্রভাষক পদে অবৈধভাবে নিয়োগ দেয়ার তথ্য পায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তদন্ত প্রতিবেদনে স্ত্রীর নিয়োগের বিষয়ে বলা হয়, ‘শাহীনুর আয়েশা সিদ্দিকাকে নিয়োগ সংক্রান্ত নথিপত্র উপস্থাপনে ব্যর্থ হয়েছেন অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান। আয়েশা সিদ্দিকার শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার মূল সনদপত্রটি এনটিআরসিএ’র কর্তৃক যাচাই করা প্রয়োজন।’

শুধু তার স্ত্রীই নয়, এভাবে আরও ১৩ জন শিক্ষককে জালিয়াতির মাধ্যমে বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এরা হলেন বাংলার প্রভাষক রাজেদা খাতুন, রসায়নের প্রভাষক মামুনুর রশীদ, উদ্ভিদবিজ্ঞানের প্রভাষক বিউটি সরকার, প্রাণিবিদ্যার প্রভাষক তানিয়া সুলতানা, সমাজবিজ্ঞানের প্রভাষক মরিয়ম বেগম, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রভাষক আতিকুর রহমান, দর্শনের প্রভাষক মাহফুজা খাতুন, সমাজকর্মের প্রভাষক মো. রেজাউল করিম, হিসাববিজ্ঞানের প্রভাষক রেজাউল করিম, রুবিনা আক্তার, ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক আরিফুল ইসলাম ও মিজানুর রহমান এবং মার্কেটিং বিভাগের প্রভাষক সুমন উদ্দিন। প্রতিবেদনের এক স্থানে ইউএনও বলেন, ‘এদের প্রত্যেকের নাম জালিয়াতি করে কার্যবিবরণীতে অন্তর্ভুক্ত করে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ২০১৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি বাংলা বিভাগের নিয়োগ নির্বাচনী বোর্ডের কার্যবিবরণী ও ফলাফল শিট টেম্পারিং করা পাওয়া যায়।’

তথ্যানুসন্ধানে দেখা যায়, শিক্ষক কর্মচারী সংক্রান্ত তথ্যশিটে বিউটি সরকার নামে একজনকে ২০১২ সালের ২ নভেম্বর তারিখে প্রভাষক পদে নিয়োগ দেয়া হয়। অথচ ২০১৮ সালের মে মাসের এমপিও শিটে বিউটি সরকারের প্রদর্শক পদে যার ইনডেক্স নং ৩০৭৫৭৭৫ ও প্রভাষক পদে ইনডেক্স নং ৩০৯৬৮৯৯ অনুকূলে একই ব্যক্তির বেতন উত্তোলনের প্রমাণ পাওয়া যায়। একই ব্যক্তি দুই পদে থেকে বেতন ভাতা নিয়েছেন।

চাটমোহর ডিগ্রি কলেজই শুধু নয়, পাবনার ফরিদপুর উপজেলাধীন ফরিদপুর টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইন্সটিটিউটের এমপিওভুক্ত শিক্ষক মো. শওকত আলী। ওই শিক্ষকের পরিচয়ে ভুয়া নিয়োগ দিয়ে অধ্যক্ষ নিজেই বেতনভাতা উত্তোলন করেন। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা যখন নথিপত্র পর্যালোচনা করছিলেন তখন নিজের অপরাধ আড়াল করতে শওকত আলীকে খাতাপত্রে পদত্যাগ করেছেন বলে নাটক সাজান। নথিপত্রে দেখা যায়, ওই পদত্যাগপত্রের স্বাক্ষর আর কলেজের শিক্ষক-কর্মচারী সংক্রান্ত তথ্য শিটের স্বাক্ষর ভিন্ন। এমনকি ২০১৮ সালের ১ আগস্ট অধ্যক্ষ নিজেই ওই পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে সেটি নথিভুক্ত করেন। তিনি ওই তারিখে চাটমোহর সরকারি কলেজের সিলও ব্যবহার করেন। অথচ প্রতিষ্ঠানটি সরকারিকরণ করা হয় ২০১৮ সালের ৮ আগস্ট।

সূত্র জানায়, অবৈধভাবে শওকতের নামে উত্তোলন করা বেতনভাতা ধামাচাপা দিতে এই অপকৌশলের আশ্রয় নেন বলে শিক্ষকরা জানান। অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিকে পারিবারিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেছেন। এখানে ১০ জনই তার নিকটাত্মীয়। স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে তাদের নিয়োগ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরকার অসীম কুমার তদন্ত প্রতিবেদনে কলেজের খাতাপত্রে ৪ জন প্রভাষককে শনাক্ত করেছেন যারা অন্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। সূত্র: যুগান্তর।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *