স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীর বাঘা উপজেলার খোর্দ্দ বাউসা গ্রামের আমবাগানটিতে বাসা বানানো পাখিদের পাশে দাঁড়িয়েছে র্যাব। আমবাগানের পাখিদের সব দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণাও দিয়েছে র্যাব।
এ বিষয়ে আজ বুধবার জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় ‘পাখিদের উচ্ছেদে ১৫ দিন সময় বাগানমালিকের’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এ ছাড়া গত মঙ্গলবার রাতে সেই পত্রিকার অনলাইনে ‘পাখিদের বাসা ছাড়তে সময় দেওয়া হলো ১৫ দিন’ শীর্ষক আরেকটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনগুলো দেখে র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ র্যাব-৫–এর অধিনায়ক মাহফুজুর রহমানকে পাখিদের দায়িত্ব নেওয়ার নির্দেশ দেন।
র্যাব মহাপরিচালকের নির্দেশের পর গতকাল বুধবার সকালে মাহফুজুর রহমান ওই আমবাগানে পাখিদের বাসা দেখতে যান। সেখানে গিয়ে তিনি ঘোষণা দেন, কোনো পাখির বাসা ভাঙা যাবে না। এ জন্য আমের যা ক্ষতি হবে, র্যাব সেটির ক্ষতিপূরণ দেবে। আমগাছের কোনো ক্ষতি হলে কৃষি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে সে ব্যাপারেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ সময় তিনি এলাকার মানুষকে ডেকে পরিবেশ রক্ষায় পাখির ভূমিকা এবং পাখির ক্ষতি করলে আইনগতভাবে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়, সে ব্যাপারে সচেতন করেন। বাগানের পাশে বন অধিদপ্তরের বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের পক্ষ থেকে সচেতনতামূলক একটি সাইনবোর্ডও লাগানো হয়েছে।
সাইনবোর্ডে লেখা আছে, ‘আইন অনুযায়ী যেকোনো বন্য প্রাণী আটক, হত্যা, শিকার, পরিবহন ও ক্রয়-বিক্রয় দণ্ডনীয় অপরাধ, যার সর্বোচ্চ সাজা ১২ বছরের কারাদণ্ড এবং ১৫ লাখ টাকা জরিমানা।’
র্যাব-৫–এর অধিনায়ক মাহফুজুর রহমান এ সময় আমবাগানের মালিকদের ডেকে কত টাকায় বাগান ইজারা নিয়েছেন এবং কত দিন বাকি আছে, সে বিষয়ে জানতে চান। এ সময় তিনি বলেন, ইজারার যত দিন বাকি আছে, তত দিনের মূল্য র্যাব পরিশোধ করবে। পরে তিনি বাঘা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলামকে বাগানে ডেকে পাখির বাসার ওপর নজর রাখার দায়িত্ব দেন।
এদিকে আজ হাইকোর্ট আদেশ দিয়েছেন, আমবাগানটির পাখির বাসা ভাঙা যাবে না। একই সঙ্গে ওই এলাকা কেন অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
উল্লেখ্য, রাজশাহীর বাঘা উপজেলার খোর্দ্দ বাউসা গ্রামের ২৫টি আমগাছে শামুকখোল পাখিরা বাসা বেঁধেছে। চার বছর ধরে পাখিগুলো এই বাগানে এসে বাচ্চা ফোটায়। বর্ষার শেষের দিকে বাচ্চা ফুটিয়ে শীতের শুরুতে তারা আবার চলে যায়। প্রতিটি বাসাতেই এখন পাখির ছানা আছে।
ছানাগুলো এখনো উড়তে শেখেনি। কিন্তু আমবাগানের পরিচর্যার জন্য বাগানমালিক পাখির বাসাগুলো ভেঙে দিতে চান। পরে পাখিপ্রেমীদের প্রতিরোধের মুখে গত মঙ্গলবার তিনি ১৫ দিন সময় দেন। এ সময়ের মধ্যে কোনো ব্যবস্থা না হলে বাসাগুলো ভেঙে দেওয়ার ঘোষণাও দেন তিনি। সূত্র: প্রথম আলো।
স্ব.বা/শা