বাঘায় পাখি থাকবে নিরাপদে, বাগান ইজারার বরাদ্দ চেয়ে প্রতিবেদন

রাজশাহী লীড

বাঘা প্রতিনিধি: রাজশাহীর বাঘায় পাখি সুরক্ষায় বাগান ইজারা নিতে বছরে ৩ লাখ ১৩ হাজার টাকা বরাদ্দ চেয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে। উপজেলার খর্দ্দোবাউসা গ্রামের আম বাগানের পাখি সুরক্ষায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কৃষি মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ চেয়ে এই প্রতিবেদন পাঠানো হয়।

এই টাকা ইজারা নেওয়া আম বাগান মালিককে দেওয়া হবে। ফলে কেউ আর বাসা ভেঙ্গে পাখি তাড়াতে পারবে না।

সোমবার কথা হলে উপজেলা কৃষি অফিসার শফিউল্লাহ সুলতান জানান, বাগান মালিকের পক্ষ থেকে ওই গ্রামের আমবাগানে বাসা বেঁধে আশ্রয় নেয়া পাখির বাসা ভেঙ্গে দেওয়ার সিদ্ধান্তে গনমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর সরকারিভাবে পাখি সুরক্ষায় সিদ্ধান্ত নিয়ে বরাদ্দ চেয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।

কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান বলেন, ৩৮টি আম গাছে পাখি বাসা বেঁধেছে। আমের সম্ভাব্য দাম ও পরিচর্যার ব্যয় নিরূপণ করা হয়েছে। হিসাব অনুযায়ী, প্রতি বছর ৩ লাখ ১৩ হাজার টাকা ক্ষতি হতে পারে। সেই অনুযায়ী জেলা প্রশাসক ঢাকায় কৃষি মন্ত্রনালয়ে প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন। এ টাকা বরাদ্দ এলে বাগান বালিক ও ইজারাদারদের দেয়া হবে।

জানা গেছে, গত চার বছর ধরে আম বাগানে বাসা বেঁধে ছিল শামুকখোল পাখি। শীত মৌসুমে এই বাগানে এসে বাচ্চা ফোটায়ে চলে যায়। বর্ষায় মৌসুমে এসে বাসা বানিয়ে বাচ্চা ফোটায়। যত দিন ইচ্ছা পাখি এ বাসায় থাকবে। সরকার প্রতি বছর এই ব্যয় বহন করবে। শুরুতে বাচ্চা উড়তে শিখলে আবার তারা বাচ্চা নিয়ে চলে যায়। কয়েক হাজার শামুকখোল পাখির সহাবস্থান ছিল সেখানকার আমবাগানেই।

কিন্তু হঠাৎ করেই তাদের বাসা ভেঙ্গে দেওয়ায় ফলে হুমকির মুখে পড়ে প্রায় কয়েক হাজার পাখি। আম ব্যবসায়ী আতাউর রহমান বাগান পরিচর্যা করতে গিয়ে কয়েকটি আমগাছের বাসা ভেঙ্গে দেন। এতে আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে পাখিরা। তবে পাখিপ্রেমী রফিকুল ইসলামসহ স্থানীয়দের বাঁধার মুখে পড়েন ওই আম ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, পাখিরা বাসা না ছাড়লে তাদের বাসা থেকে নামিয়ে দেওয়া হবে। এমনকি তাদের বাসা ভেঙেও দেওয়া হবে।

এ খবর জানার পর পাখির পাশে দাড়ায় র‌্যাব। র‌্যাবের মহাপরিচালকের নির্দেশে গত ৩০ নভেম্বর রাজশাহী র‌্যাব-৫ এর এ্যডিশনাল ডিআইজি (সিও) মাহফুজুর রহমান ঘটনাস্থলে গিয়ে বলেন, পাখির বাসাগুলো কখনোই ভেঙে দেওয়া যাবে না। পাখী সংরক্ষনের দায়িত্ব নিবে র‌্যাব।

এ দিকে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী প্রজ্ঞা পারমিতা রায় এর প্রয়োজনীয় নির্দেশনার আরজির প্রেক্ষিতে আমবাগানে থাকা পাখির বাসাগুলো ভাঙা যাবে না বলেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ওই এলাকা কেন অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট।

কেন ওই এলাকাকে পাখির অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হবে না,জানতে চেয়ে, ক্ষতির সম্ভাব্য পরিমাণ নিরূপণ করে ৪০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়। সেই মতে বরাদ্দ চেয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।

স্ব.বা/শা

Spread the love

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *